Skip to content

বাংলাদেশে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দুই সমাধিক্ষেত্র

১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত চলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বার্মায় নিহত সৈনিকদের দু’টি সমাধিক্ষেত্র রয়েছে বাংলাদেশের কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে। প্রতিবছর প্রয়াত বীরসেনাদের সম্মান জানাতে প্রচুর দর্শনার্থী যান যায়গা দুটিতে।

ময়নামতি ওয়ার সেমেট্রি
ময়নামতি ওয়ার সেমেট্রি তৈরি হয়েছে ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৪-এর মধ্যে। কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের কাছেই এর অবস্থান।

সমাধি সংখ্যা
ময়নামতি ওয়ার সেমেট্রিতে সমাধির সংখ্যা ছিল ৭৩৮টি। ১৯৬২ সালে এ সমাধিস্থল থেকে একজন সৈনিকের স্বজনরা তাঁর দেহাবশেষ যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যান৷ বর্তমানে তাই এখানে সমাধির সংখ্যা ৭৩৭৷ এর মধ্যে ৭২৩ জনের পরিচয় জানা গেছে৷ বাকি ১৪ জন পরিচয়হীন৷

নিহত যোদ্ধারা
পরিচয় পাওয়া ৭২৩ জন যোদ্ধার মধ্যে ছিলেন তিন জন নাবিক, ৫৬৭ জন সৈনিক এবং ১৬৬ জন বৈমানিক৷

কোন দেশের কতজন
ময়নামতি ওয়ার সেমেট্রিতে শায়িত যোদ্ধাদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ৩৫৭ জন, অবিভক্ত ভারতের ১৭৮ জন, পশ্চিম আফ্রিকার ৮৬ জন, পূর্ব আফ্রিকার ৫৬ জন, জাপানের ২৪ জন, ক্যানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার ১২ জন করে, নিউজিল্যান্ডের চারজন, রোডেশিয়ার তিনজন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, বার্মা, বেলজিয়াম ও পোল্যান্ডের একজন করে৷

সমাধি
ময়নামতি ওয়ার সেমেট্রির প্রথম ধাপে আছে ইউরোপিয়ান যোদ্ধাদের কবর, উপরের ধাপে আছে উপমহাদেশের যোদ্ধাদের কবর৷ সমাধিগুলো সারিবদ্ধভাবে সাজানো৷ ১৩টি ছাড়া প্রত্যেক সমাধিতে লেখা আছে নিহত সৈনিকের নাম, বয়স, পদবী, নিহত হবার তারিখ ও ঠিকানা৷

চট্টগ্রাম ওয়ার সেমেট্রি
চট্টগ্রাম শহরের দামপাড়া এলাকার বাদশা মিয়া চৌধুরী সড়কে অবস্থিত৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তি সময়ে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এই সমাধিসেৌধ প্রতিষ্ঠা করে৷

চট্টগ্রামে সমাধি সংখ্যা
চট্টগ্রাম ওয়ার সেমেট্রিতে মোট ৭৫৫টি সমাধি৷ এর মধ্যে ৭৫১টি যুদ্ধকালীন সমাধি, বাকি চারটি অন্য সময়ের৷

নিহত যোদ্ধারা
চট্টগ্রাম ওয়ার সেমেট্রিতে শায়িত যোদ্ধাদের মধ্যে ৫৪৩ জন সৈনিক, ১৯৪ জন বৈমানিক এবং বাকি ১৪ জন নাবিক৷

কখন যাবেন
ময়নামতি ও চট্টগ্রাম ওয়ার সেমেট্রি ঈদের দু’দিন ছাড়া বছরের প্রতিদিনই সকাল ৭টা থেকে বেলা ১২টা এবং দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকে৷ তবে রমজান মাসে খোলা থাকে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত৷ জায়গা দু’টিতে বিনা খরচে প্রবেশ করা যায়৷

কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন
কুমিল্লার ময়নামতি এবং চট্টগ্রামের সমাধিক্ষেত্র দু’টি কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত৷ এর দেখভালও করে কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন৷ এর প্রধান কার্যালয় লন্ডনে৷ কমনওয়েলথভুক্ত দেশসমূহের অনুদানে চলে এ সংস্থাটি৷

আরো সমাধিক্ষেত্র
কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন বাংলাদেশের দু’টি সমাধিক্ষেত্র ছাড়াও ভারতের ১০টি, মিয়ানমারের তিনটি, পাকিস্তানের দু’টি, থাইল্যান্ডের দু’টি, সিঙ্গাপুরের একটি, মালয়েশিয়ার একটি, এবং জাপানের একটি সমাধিক্ষেত্র রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে৷ সৌজন্যে: ডয়চে ভেলে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *