Skip to content

বাড়ির পাশে বংশী নদী

কবীর শাহরীয়ার
দুই ধারে সবুজের মাখামাখি। কোথাও কোথাও কাশবন, আকাশের মেঘ এসে যেন ভিড় করেছে ডাঙায়! মাঝে নদী। তার বুকে বাহারি ঢঙের ছোট ছোট নৌকার এলোমেলো ঘোরাফেরা। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে ঢাকার অদূরেই, সাভার ও ধামরাই উপজেলার মাঝামাঝি দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশী নদী ও তার দুই কূলে।

Bonshi Riverসেদিন ছিল শুক্রবার। দুপুরের পরই বন্ধু সাখাওয়াতের সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম। সাভার থানা রোডের মাথা থেকে রিকশায় সময় লাগল মাত্র ১০ মিনিট। নদীর পাড়ে যেতেই চোখে পড়ল সারি সারি অনেকগুলো ছোট নৌকা। নৌকাগুলো বেশ ছিমছাম ও পরিপাটি। সেখান থেকে ছোট্ট, সুন্দর একটি নৌকা ভাড়া করে ফেললাম আমরা। দরদাম হলো, দুই ঘণ্টার জন্য ২০০ টাকা। ঘুরতে ঘুরতেই একটা চমক। আবিষ্কার করলাম একটি দ্বীপ! চারপাশ বংশী নদী দিয়ে ঘেরা দ্বীপটির নাম হারাননগর গ্রাম। এককথায় সবুজ-সুন্দর!

.দ্বীপ অভিযান শেষে আবার নৌকায় ফিরে আসতে আসতে বিকেলের সূর্যটা লাল হতে শুরু করেছে। নদীর বুকে ততক্ষণে মানুষের উপস্থিতি বেড়ে গেছে। আর বেড়ে গেছে নদীর বুকে ছোট ছোট ঢেউ। ঢেউ তৈরি করছে পানকৌড়িরা, অবিরাম ডুব দিচ্ছে মাছের নেশায়। মাছরাঙাও পাল্লা দিয়ে ডাইভ দিচ্ছে ঝুপঝাপ শব্দে। সহজেই বোঝা যায় বংশী নদীতে মাছ নেহাত কম নেই। কিছুক্ষণ পর চাক্ষুষ প্রমাণও মিলল। একটি ছোট নৌকায় দুজন জেলে আমাদের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘মাছ লাগবে, মামা? নানা পদের মাছ আছে। এই মাত্র ধইরা আনছি। একদম তাজা!’

Bonshi River2আরও কিছুদূর এগোতেই হঠাৎ নদীর ওপারে চোখ পড়ল, বেশ একটা চমকই বলা চলে। আস্ত একটা দুর্গ যেন দাঁড়িয়ে আছে তীরে। দৈত্যের মাথার ওপর দুটি ড্রাগন আবার হাঁ মেলে আছে সদরে। আলো-আঁধারিতে না চমকে উপায় নেই! সামনে যেতেই চোখে পড়ল ইংরেজিতে লেখা নামফলক: ­­­­নীলা-বর্ষা রিভার কুইন পার্ক। নৌকায় করে বেড়ানোর পাশাপাশি বিনোদনের নানা আয়োজন খুলে বসেছে এই বিনোদনকেন্দ্র। কৃত্রিম পাহাড়ি গুহা, বিশালাকৃতির ডাইনোসরের ভাস্কর্য ও বিনোদন মঞ্চসহ একটি খুদে চিড়িয়াখানাও আছে সেখানে। পার্কের প্রবেশ ফি জনপ্রতি ২০ টাকা। দল বেঁধে যেতে চাইলে আগে থেকেই ভাড়া করতে হয়। পার্ক থেকে একটু পশ্চিমে হেঁটে গেলেই ফোর্ডনগর গ্রাম। গ্রামের নাম ফোর্ডনগর! মানতেই হবে, বড় অদ্ভুত নাম। নামটা ভিনদেশি হলেও গ্রামটির প্রকৃতি নিখাদ দেশি। যত দূর চোখ যায় শুধু ফুল আর ফুল। বাহারি জাতের ফুলের চাষ হয় সেখানে। বিভিন্ন রঙের ও চেহারার গ্ল্যাডিওলাস ফুলের খেতই বেশি চোখে পড়ল। চাইলে ফুলও কেনা যায় খেতগুলো থেকে।

যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সাভারের বাসে উঠতে হবে। সাভার থানা রোডের মাথা থেকে রিকশায় ১০ মিনিট গেলেই দেখা মিলবে বংশী নদী। নৌকায় ওঠার আগে অবশ্যই দরদাম করে নেবেন। সূত্র : প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *