বায়ু দূষণের কারণে শুধু হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসেরই ক্ষতি হচ্ছে না। সেই সঙ্গে দেহে বাসা বাঁধছে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগও। দূষিত বাতাসে থাকা নানা রকম ক্ষতিকর গ্যাস শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে হাড় এতটাই দুর্বল করে দিচ্ছে যে, আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে সময় নিচ্ছে না।
সম্প্রতি ভারতের অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস) হাসপাতালের একদল চিকিৎসকের পরীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
আর্থ্রাইটিস হল এক ধরনের অটো ইমিউন ডিজিজ, যাতে আক্রান্ত হলে হাড়ের জোড়াগুরোতে মারাত্মক যন্ত্রণা হওয়ার মতো লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায়, রোগীর পক্ষে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করাও সম্ভব হয়ে ওঠে না।
দূষিত বাতাসের মধ্যে থাকা বিষাক্ত উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়ার পাশাপাশি দেহের ভেতরে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটাতে শুরু করে যা ইমিউন সিস্টেম নিজের শরীরের বিরুদ্ধেই লড়াই ঘোষণা করে দেয়। ফলে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, টক্সিক উপাদানের কারণে হওয়া আর্থ্রাইটিস প্রকোপ কমাতে বেশ কিছু প্রকৃতিক উপাদান বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।
আর্থ্রাইটিসের প্রকোপ কমাতে সাধারণত যে প্রকৃতিক উপাদানগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলো হল:
১. অ্যাপেল সিডার ভিনিগার
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাসে পরিপূর্ণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি নিয়মিত এক গ্লাস পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেলে হাড়ের শক্তি বাড়ে।
২. আদা
৬ চামচ শুকনো আদার সঙ্গে ৩ চামচ গোলমরিচ মিশিয়ে, পানিতে গুলে নিয়মিত খেলে, আর্থ্রাইটিস মতো রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে । কারণ আদার মধ্যে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান শরীরের ভেতরে ইনফ্লেমেশন কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে জয়েন্টে প্রদাহ হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৩. হলুদ
এর কার্কিউমিন নামক বিশেষ এক ধরনের উপাদান আদার মতোই ইনফ্লেমেশন কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে যে কোনও ধরনের অটোইমিউন ডিজিজই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। এক্ষেত্রে প্রতিদিন রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস হলুদ মেশানো দুধ খেলে ভাল উপকার পাওয়া যায়।
৪. দারচিনি
প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে প্রকৃতিক উপাদানটি আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় দারুন কাজে আসে। তাই তো দূষিত বায়ুর হাত থেকে হাড় বাঁচাতে নিয়মিত সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম পানিতে পরিমাণ মতো দারচিনি পাউডার এবং মধু মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা।
৫. মাছ খেতে হবে
মাছে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. চেরি
এই ফলের মধ্যে প্রচুর মাত্রায় মজুত রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম। এই দুটি খনিজ উপাদান হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই শুধু আর্থ্রাইটিস নয়, যে কোনও ধরনের হাড়ের রোগ দূরে রাখতেই নিয়মিত কম করে ১০ টি চেরি খাওয়ার অভ্যাস করুন। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া