শান্ত শাহরিআর
রসনাপ্রিয়রা খাবারদাবারের খোঁজখবরে আপডেট থাকতে চান। কখন কোন রেস্টুরেন্টে নতুন কী কী খাবারের আবির্ভাব হল, কোন রেস্টুরেন্টে কোন দেশের খাবার পাওয়া যায় এসব তথ্য তাদের কাছে থাকে। ভোজনবিলাসী নন এমন ব্যক্তিরাও ভালো রেস্টুরেন্টে গেলে অভ্যাসের বাইরে গিয়ে খাওয়াদাওয়া করেন। ভালো রেস্টুরেন্টের পরিবেশ আর খাবার দুটোই ভালো থাকে। রেস্টুরেন্টের আকারও একটা বিষয়। আয়তন বড় হলে নিজের ভেতর একটা বিশালত্ত্ব অনুভব হয়। খাবারের সময়টা উপভোগ করা যায়। ভ্রমণপ্রিয় আর রসনাবিলাসীরা জেনে নিতে পারেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় দশটি রেস্টুরেন্টের নাম। এগুলো আয়তনে যেমন বড়, খাবারের বৈচিত্রেও তেমনি বিশ্বসেরা।
দামাসকাস গেট রেস্টুরেন্ট, সিরিয়া
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ রেস্টুরেন্টটি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত। আরবিতে এর নাম ‘বাওয়াবেট দিমাস্ক’। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেস্টুরেন্টের তালিকায় প্রথম স্থানে আছে প্রায় ছয় একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এ রেস্টুরেন্টটি। মোট আসন সংখ্যা ছয় হাজার চৌদ্দ। প্রায় সোয়া দুই লাখ বর্গফুট আয়তনের এ রেস্টুরেন্টের মালিক শেখ আল সাম্মান। কারখানা সাইজের বিশাল কিচেন আর পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকবল নিয়ে দামেস্ক গেট রেস্টুরেন্ট পৃথিবীতে এক নম্বর জায়গা ধরে রেখেছে।
রয়েল ড্রাগন রেস্টুরেন্ট, থাইল্যান্ড
বাওয়াবেট দিমাস্কের আগে রয়েল ড্রাগনই বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেস্টুরেন্ট ছিল। ১৯৯১ সালে তৈরি হওয়া এ রেস্টুরেন্টটি ১৯৯২ সালে গিনেস বুকে বিশ্বের এক নম্বর বৃহৎ রেস্টুরেন্ট হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিল। থাইল্যান্ডে অবস্থিত এ রেস্টুরেন্টটির আসন সংখ্যা পাঁচ হাজার। এর আয়তন ৮.৩৫ একর। রয়েল ড্রাগনের বিশাল কিচেন থেকে এক ঘণ্টায় তিন হাজার ডিশ তৈরি হয়। এশিয়া আর পশ্চিমা মিলিয়ে প্রায় এক হাজারের বেশি পদের খাবার পাওয়া যায় এখানে।
ওয়েস্ট লেক রেস্টুরেন্ট, চায়না
এ রেস্টুরেন্টটির যাত্রা শুরু ২০০৪ সালে। চাইনিজ রেস্টুরেন্টের দিক থেকে এটি বিশ্বে এক নম্বর। মোট আসন সংখ্যা পাঁচ হাজারের বেশি। এ রেস্টুরেন্টে রান্না করেন তিনশ’ শেফ আর পরিবেশন করেন এক হাজার ওয়েটার। মোট পাঁচটি কিচেন আছে এ রেস্টুরেন্টে। খাবারের পরিমাণও অবাক হওয়া মতো। প্রতি সপ্তাহে তিন টন মাছ, এক টন শূকরের মাংস, এক টন মরিচ আর ২০০ সাপ ব্যবহৃত হয় ওয়েস্ট লেক রেস্টুরেন্টে।
জেন্ডার’স, মিশিগান
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে অবস্থিত এ রেস্টুরেন্টটি ১৯২৮ সাল থেকে খাবার পরিবেশন করে আসছে। নয়টি ডাইনিং রুমে বিভক্ত এ রেস্টুরেন্টে মোট ৯০০ আসন আছে। মিশিগানের ফ্রাঙ্কেনমুথ এলাকায় এটির অবস্থান। ফ্রাঙ্কেনমুথ ১৮৫৬ সাল থেকেই একটি সুন্দর রিসোর্ট এলাকা। প্রতি বছর জেন্ডারস রেস্টুরেন্ট প্রায় এক মিলিয়নের বেশি ভোক্তাকে খাবার পরিবেশন করে থাকে।
কারমাইন’স, ওয়াশিংটন ডিসি
এটি মূলত নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক রেস্টুরেন্ট। ওয়াশিংটনে সম্প্রতি চালু হওয়া এর শাখাটির আয়তন প্রায় বিশ হাজার তিনশ’ বর্গফুট। মোট আসন সংখ্যা সাতশ’। কারমাইন’স ওয়াশিংটনের সবচেয়ে বড় রেস্টুরেন্ট।
কারমাইন’স, লাস ভেগাস
কারমাইন’স-এর লাস ভেগাস শাখাটি শহরের একমাত্র সবচেয়ে বড় রেস্টুরেন্ট যেখানে নাইট ক্লাব নেই। রেস্টুরেন্টটির আয়তন আটাশ হাজার বর্গফুট। মোট আসন সংখ্যা আটশ’। ইতালিয়ান স্টাইলের কারমাইন’স রেস্টুরেন্টটির এ শাখায় মোট ২২০ জন লোক কাজ করে।
লুন্ডি’স, নিউ ইয়র্ক
এ রেস্টুরেন্টের মালিক আরভিং লুন্ডি ১৯৭৭ সালে মারা যাবার পর রেস্টুরেন্টটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন এটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় রেস্টুরেন্ট ছিল। ২৪০০ থেকে ২৮০০ অতিথিকে একসঙ্গে খাবার পরিবেশন করা যেত। ২০০৭ সালে পুনরায় চালু হওয়া লুন্ডির বর্তমান আসন সংখ্যা নয়শ’।
দি ভার্সিটি ডাউনটাউন, জর্জিয়া
যুক্তরাষ্ট্র্রের আটলান্টায় অবস্থিত ভার্সিটি ডাউনটাউন বিশ্বের এক নম্বর ড্রাইভ-ইন রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টটির দুই একরের পার্কিংলটে ছয়শ’ গাড়ি রাখা যায়। ভেতরের আসন সংখ্যা আটশ’। এককভাবে কোকা কোলা পরিবেশনের দিক থেকে পৃথিবীতে এ রেস্টুরেন্টটির অবস্থান এক নম্বর।
ম্যাকডোনাল্ড’স, ইংল্যান্ড
২০১২ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হওয়া গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের জন্যে ম্যাকডোনাল্ড’স-এর এ শাখাটি বানানো হয়েছিল। মাত্র ছয় সপ্তাহ চালু ছিল এ রেস্টুরেন্টটি। একসঙ্গে দেড় হাজার অতিথি ডিনার করতে পারতেন। সারাদিনে প্রায় চৌদ্দ হাজার মানুষ খাওয়াদাওয়া করতেন এ রেস্টুরেন্টে।
কসমো, ইংল্যান্ড
ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় রেস্টুরেন্ট কসমো। ২০১০ সালে চালু হওয়া রেস্টুরেন্টটির ধারণ ক্ষমতা আটশ’। বাইশ হাজার বর্গফুটের এ রেস্টুরেন্টে মোট পঞ্চাশজন শেফ রান্না করেন। সূত্র : যুগান্তর