প্রদীপ সাহা
বৃষ্টির গন্ধ প্রকৃতির অন্যতম রহস্যের একটি। এবার বিজ্ঞানীরা বৃষ্টির এই গন্ধের উন্মোচনে মন দিয়েছেন। বৃষ্টির গন্ধের রহস্য জানতে বিজ্ঞানীরা উচ্চ ক্ষমতাসল্ফপন্ন ক্যামেরা নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। এক পশলা ঝড়োবৃষ্টির পর প্রকৃতি ঝকঝকে হয়ে ওঠে। বাতাসে পানির ক্ষুদ্র বাবল ভাসতে থাকে এবং পরিবেশে হালকা কুয়াশার মতো ভাব থাকে। আর এ অবস্থাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিজ্ঞানীরা। এর আগে এভাবে বৃষ্টির গন্ধের উৎস খুঁজতে গবেষণা করা হয়নি।
আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক উচ্চ ক্ষমতাসল্ফপন্ন ক্যামেরা নিয়ে বৃষ্টির গোটা বিষয়টা রেকর্ড করেন। পরে খুব ধীর গতিতে এটি পর্যবেক্ষণ করা হয়। দেখা যায়, বৃষ্টি ফোঁটাগুলো বাতাসে বা মাটিতে আঘাত পেয়ে ফেটে যায়। আর যখন এটি হয়, তখনই তারা ‘অ্যারোসল’ গ্যাস নির্গত করে। তরল বুদবুদের মাঝে থাকে অ্যারোসল গ্যাস। আর এই অ্যারোসলে থাকে সুগন্ধ, যাকে আমরা বৃষ্টির গন্ধ হিসেবে পাই। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, বৃষ্টির ফোঁটায় থাকা অ্যারোসলের সুগন্ধ তৈরি হয় উদ্ভিদের তৈলাক্ত উপাদান থেকে। বৃষ্টির ফোঁটা ফেটে যাওয়া মাত্রই এই সুগন্ধ আমাদের নাকে আসে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্থান এবং পরিবেশভেদে বৃষ্টির গন্ধ আরও ভালোমতো পাওয়া যেতে পারে। বৃষ্টির ফোঁটা মাটিতে, বালিতে, গাছে এবং আবর্জনায় পড়লে কি ঘটে, তাও পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। এভাবে প্রায় ২৮ ধরনের পৃষ্ঠতলে বৃষ্টি ফোঁটা পড়লে কেমন গন্ধ বেরোতে পারে, তা নিয়ে প্রায় ৬শ’টি পরীক্ষা করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রধান গবেষক ইয়ংসু জোং বলেন, যখন কাদামাটি বা বালুর ওপর হালকা এবং মাঝারি বৃষ্টিপাত ঘটে, তখন সবচেয়ে বেশি অ্যারোসল নির্গত হয়। এর আগে ১৯৬৪ সালে বৃষ্টি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান দুই গবেষক পরীক্ষা চালালেও তারা গন্ধ নির্গতের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেননি। জোং এবং তার আরেক সহকর্মী কুলেন আর বুয়ে জানান, এখন অ্যারোসল যে সুগন্ধ ছড়িয়ে দেয়, তার মলিকিউল কি বহন করছে তা জানা প্রয়োজন। সম্ভবত এতে ই. কোলির মতো জীবাণু থাকতে পারে। সূত্র : সমকাল