যাঁরা পহেলা ফাল্গুন কিংবা ভালোবাসা দিবসে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই মনে মনে এমন জায়গা খুঁজছেন, যেখানে উৎসবের আমেজ পাবেন ষোলো আনা, কিন্তু বাড়তি ভিড়-ভোগান্তি থাকবে না। তাঁদের জন্যই শহরের কিছু বেড়ানোর জায়গার খবর জানালেন তামান্না তাবাসসুম
মিরপুর ডিওএইচএস ও বেড়িবাঁধ
মিরপুর বেড়িবাঁধে গিয়ে আপনি পাবেন খানিকটা খোলা আকাশ দেখার অবকাশ। বাঁধের পাশে বসা অস্থায়ী সবজি আর তাজা মাছের বাজার মনে করিয়ে দেবে গল্পে পড়া গ্রামীণ বাজারের কথা। বেড়িবাঁধের অদূরেই আছে তামান্না পার্ক। শিশুদের নিয়ে ঘুরে আসার চমৎকার জায়গা, আছে খাবারের রেস্তোরাঁও। ডিওএইচএসের লেক ভিউ রেস্তোরাঁগুলো দিনের বেলা যেমনই লাগুক, সন্ধ্যার আলোতে অসম্ভব সুন্দর হয়ে ওঠে পরিবেশ। প্রিয়জন নিয়ে ঘুরে আসতেই পারেন সুনসান প্রকৃতি আর জলের কলকল শব্দ মাখা কোনো রেস্তোরাঁ থেকে।
খিলগাঁও তালতলা
খাবারপ্রেমীদের নতুন মিলনস্থল এখন তালতলার পল্লীমা রোড। শহরের সবচেয়ে ভালো রেস্তোরাঁগুলোও তাদের পসরা সাজিয়েছে এখানে। অনেক ক্যাফেতে লাইভ মিউজিকের ব্যবস্থাও আছে। চায়নিজ, ইতালিয়ান, মেক্সিকান, বাঙালি—সব ধরনের খাবারের রেস্টুরেন্ট আছে এখানে। খাবারের পাশাপাশি প্রতিটা রেস্তোরাঁর সাজসজ্জাও করবে মুগ্ধ। সন্ধ্যাটা উপভোগ করতে চাইলে প্রিয়জনকে নিয়ে যেতে পারেন রুফটপ রেস্টুরেন্টে। পল্লীমার সুপরিচিত রেস্টুরেন্টগুলো হচ্ছে—গ্রাইন্ড হাউস, টিউন অ্যান্ড বাইট, কমিক ক্যাফে, ডাউন টাউন, ক্যাফে এপেলিয়ানো, আলফেস্ত, পেটুক, কাবাবের হাড্ডি আর খিলগাঁয়ের বিখ্যাত আপনের কফি তো আছেই।
দিয়াবাড়ি, উত্তরা
প্রশস্ত রাস্তা, মুক্ত বাতাস আর মজাদার সামুদ্রিক খাবার, নাগরদোলা কিংবা সুদৃশ্য ব্রিজ—সব মিলিয়ে উত্তরার দিয়াবাড়ি এখন শহরের বুকে এক টুকরা বিশুদ্ধ বাতাসের কারখানা। পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে দল বেঁধে ঘুরে আসতে পারেন দিয়াবাড়ি থেকে। নৌকায় করে লেকের স্বচ্ছ পানিতে প্রিয়জনের অবয়ব দেখার অনুভূতি নিতে চাইলেও দিয়াবাড়ি আদর্শ জায়গা। ‘বাতাস চাচার থাবা’ রেস্তোরাঁর মজাদার খাবারের স্বাদ মুখে লেগে থাকবে অনেক দিন। প্রশস্ত রাস্তায় লং ড্রাইভ আর চারদিকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যান্ত্রিক ক্লান্তি দূর করার জন্য যথেষ্ট।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকৃতির শাসনে চলা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য মন কাড়বে যে কারো। আর শীতকাল মানেই এখানে অতিথি পাখির মেলা। অসংখ্য পুকুর, ঝিল আর সবুজের সমারোহ প্রজাপতি আকৃতির এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বানিয়েছে পাখি আর প্রজাপতির অভয়ারণ্য। সারা বছরই উৎসব লেগে থাকে এই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। তবে শীতের সময়টা রীতিমতো চাঁদের হাট বসে যায় এখানে। প্রকৃতির ছায়ার পাশাপাশি বটতলার খাবারের জন্যও প্রসিদ্ধ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। হরেক রকম ভর্তা আর দেশীয় মাছের সঙ্গে দুপুরের খাবার খেতে অনেকেই আসেন এখানটায়। বিশেষ দিনের স্মৃতিতে ঝকঝকে কিছু মুহূর্ত বন্দি করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও।
জিন্দা পার্ক, পূর্বাচল
গন্তব্য যদি হয় খানিকটা দূরে, আর হাতে যদি থাকে সারা দিনের সময়, তাহলে ঘুরে আসতে পারেন জিন্দা পার্ক। নানা ধরনের গাছপালা, পুকুর, বিরাট মাঠ, ট্রি হাউসসহ বিনোদনের সব রকম ব্যবস্থা আছে। ফ্যামিলি পিকনিকের জন্য জিন্দা পার্ক এখন বেশ পরিচিত জায়গা। কাঠের ব্রিজ পার হয়ে দিঘির মাঝামাঝি তৈরি করা বাঁশের টি রুমে বসে প্রিয়জনের সঙ্গে এক কাপ চা কিংবা জলে পা ডুবিয়ে বসে থাকার সময়গুলো দারুণ উপভোগ করবেন। জিন্দা পার্কে প্রবেশের জন্য টিকিট মূল্য ১০০ টাকা। সঙ্গে গাড়ি না থাকলেও সমস্যা নেই। বাড়ি ফেরার জন্য পার্কের সামনেই পাবেন গাড়ি, সিএনজি। আর হ্যাঁ, পিকনিক করতে চাইলে দু-তিন দিন আগেই যোগাযোগ করুন। পিকনিকের খাবারের ব্যবস্থা পার্ক কর্তৃপক্ষই করে। সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ