সব্যসাচী ঘোষ
পাহাড়ের কোলে থাকতেই হলে আবার হোটেল কেন? কালিম্পঙের পাহাড়ি গ্রাম চুইখিম হোম-স্টের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ১১টি বাড়ির মালিকরা হোম-স্টে ব্যবস্থা চালু করেছেন। তাতে সব মিলিয়ে একরাতে ৩০ জন পর্যটক থাকতে পারবেন। লাভা-লোলেগাঁও-এর নাম অনেকে শুনেছে। কিন্তু চুইখিম, সন্ন্যাসীদাঁড়া, বরবট, অ্যালবাং এখনও নতুন। অ্যালবাং পেরোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় লোলেগাঁওয়ে। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া বাগরাকোট বাজার থেকে ১৫ কিলোমিটার, ঝকঝকে পিচের রাস্তা পেরিয়ে দুই-পাহাড়ের গ্রাম চুইখিম। দুই পাহাড়েই গ্রামের বিস্তার।
কেন যাবেন? পাহাড় দেখতে। কোনও পাহাড়ে রোদ, কোনওটায় বৃষ্টি। মেঘেদের দেশে আলোছায়ার খেলা। নীচে ছবির মত পাহাড়ি গ্রামের ছোট্ট ছোট্ট ঘর। অনেক দূরে হাল্কা সুতোর মতো জাতীয় সড়ক আর রুপোলি সুতোর মত পাহাড়ি নদী। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গত তিন বছর ধরে চুইখিম গ্রামে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করছে। অধিকর্তা সঙ্ঘমিত্রা চন্দের কথায়, ‘‘ডুয়ার্স এবং পাহাড়ে পর্যটকেরা অনেক সময়েই অফবিট পর্যটনকেন্দ্রের খোঁজ করেন। চুইখিমে সেই সাধ পূরণ হবে।’’ পাহাড়ের খাদ, রংবাহারি স্যালভিয়া আর রডোডেনড্রনের বাগান, পাহাড়ি পাখি দেখে দিল খুশ হবেই।
গ্রামে হোম স্টে-র মালিক পবিত্রা খাওয়াস, দুর্গা গুরুঙ্গ, নরেশ গুরুঙ্গরা ঝুম চাষের বাইরে অন্য রোজগারের পথ পেয়ে খুশি। ‘‘পর্যটকেরা যে কালিম্পং, লাভা ছেড়ে আমাদের গ্রামে আসতে পারেন তা স্বপ্নেও ভাবতে পারতাম না,’ বললেন তাঁরা। মাত্র দু’ঘণ্টায় চুইখিম থেকে লোলেগাঁও যাওয়া যায় বলে পর্যটনের এক নতুন রুটও হয়ে উঠতে পারে এই চুইখিম। দ্রুত পাশের গ্রাম অ্যালবাংতেও হোম-স্টে ব্যবস্থা চালু করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
যাওয়ার কথা : শিলিগুড়ি থেকে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে সেবকের করোনেশন সেতু পেরিয়ে গেলেই বাগরাকোটের মিনা মোড়। সেখান থেকে বাঁ দিকে বেঁকে গেলেই বাগরাকোটের বাজারের চৌপথিতে পৌঁছে যাওয়া যায়। সেখান থেকে ডানদিকের পথ ধরে বাঁকে বাঁকে এগোলেই পাহাড়ি পাকদণ্ডি পৌঁছে দেয় পাহাড়ি স্নিদ্ধতার আশ্রয় চুইখিমে।
খাওয়ার কথা : স্থানীয় ডোল্লে খুরশিয়ানি লঙ্কার চাটনি আর পাহাড়ি গরুর খাঁটি দুধ থেকে তৈরি গাওয়া ঘি সহযোগে খাবার বাড়তি আকর্ষণ। মাত্র ৭৫০ টাকাতেই জনপ্রতি থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে চুইখিমে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা