Skip to content

বোয়িংয়ের নতুন চমক

আশিক হোসেন
দুই পাশে ছড়ানো ২৩৫ ফুট ডানার নতুন উড়োজাহাজ নিয়ে আসছে বোয়িং, যা হবে এ যাবতকালের দুই ইঞ্জিনের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী উড়ুক্কু যান।

Boing

দুই ইঞ্জিনের ৭৭৭-এক্স সিরিজের এই বিমান এভিয়েশন উৎসাহীদের চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা দেবে বলে আশা করছে বোয়িং।

নিপ্পন, ক্যাথি প্যাসিফিক, এমিরেটস, ইতিহাদ, লুফথানসা এবং কাতার এয়ারওয়েজের মতো শীর্ষ বিমান পরিবহহন সংস্থা এরই মধ্যে বোয়িংয়ের নতুন এই উড়োজাহাজ নিজেদের বহরে যুক্ত করতে ‘হুড়োহুড়ি’ শুরু করে দিয়েছে।

বোয়িংয়ের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, প্রাথমিকভাবে ৭৭৭-৯এক্স ও ৭৭৭-৮এক্স- এই দুটি মডেলে এ সিরিজের উড়োজাহাজ তৈরি করবে তারা।

২০১৩ সালের নভেম্বরে অগ্রিম অর্ডার নেওয়া শুরুর পর বোয়িং এ পর্যন্ত ৩২০টি উড়োজাহাজের অর্ডারও পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রেসিডেন্টে ও ৭৭৭-এক্স প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার বব ফিল্ডম্যান।

তাকে উদ্ধৃত করে সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্যিকভাবে বোয়িং এই বিমান নির্মাণের কাজ শুরু করবে ২০১৭ সাল থেকে।

৭৭৭-এক্স সিরিজের উড়োজাহাজগুলোতে থাকবে নতুন প্রযুক্তিতে তৈরি উচ্চগতির জিই৯এক্স এর টুইন জেট ইঞ্জিন। একবার তেল নিলে এ উড়োজাহাজ উড়িয়ে নেবে ১৪ হাজার থেকে ১৬ হাজার ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

অর্থাৎ, এ বিমানে চড়ে ঢাকা থেকে এক উড়ানেই পৌঁছানো যাবে আমেরিকা, যা এখন অন্য উড়োজাহাজে সম্ভব হয় না।

Boing2

এ ইঞ্জিন কেবল গতিতেই দ্রুত হবে না, খরচেও সাশ্রয়ী হবে বলে বব ফিল্ডম্যানের দাবি।

তিনি বলেন, “নতুন সিরিজের বিমানগুলো অন্য উড়োজাহাজের ‍তুলনায় ১২ শতাংশ কম তেলে চলবে। এতে বিমান পরিবহন কোম্পানিগুলোর খরচ ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।”

তবে ৭৭৭ এক্স সিরিজের আসল চমক- এর ডানা। দুই পাশে ৭১ দশমিক ৮ মিটার বা ২৩৫ ফুট ৫ ইঞ্চি দৈর্ঘের ডানা আকাশে উড়োজাহজের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখতে খুবই সহায়ক হবে বলে বোয়িংয়ের দাবি।

অবশ্য এত বড় ডানা নিয়ে বিশ্বের অধিকাংশ বিমানবন্দরেই এ উড়োজাহাজ নামতে পারবে না। এ সমস্যা কাটাতে বোয়িং ৭৭৭-এক্স সিরিজে যুক্ত করেছে ডানা ভাঁজ করার নতুন প্রযুক্তি।

বোয়িং বলছে, আকাশে বিশাল ডানা মেলে উড়ে বেড়ালেও, উঠা-নামার সময় এর পাখাজোড়া ভাঁজ হয়ে আসবে ৭ মিটার দৈর্ঘে। ফলে রানওয়েতে ট্যাক্সিইং করার সময় কোনো সমস্যা হবে না।

কেবল ডানা নয়, এ ‍উড়োজাহাজের কেবিনও হবে বিশাল। প্রচলিত যে কোনো উড়োজাহাজের চেয়ে ১৬ ইঞ্চি বেশি প্রশস্থ এসব কেবিনে ৪০০ থেকে ৪২৫ জন যাত্রী বহন করা যাবে। এই সংখ্যা এয়ারবাস এ৩৫০-১০০০ মডেলের বিমানের ধারণক্ষমতার চেয়েও ৩৪ জন বেশি।

Boing3

যাত্রীদের আয়েশের জন্য এর আসনগুলোও তৈরি হচ্ছে ১৮ ইঞ্চি প্রশস্থ করে। জানালা বড় হচ্ছে ১৫ শতাংশ; ফলে এক সারিতে বসা প্রত্যেক যাত্রীই বাইরের দৃশ্যে চোখ রাখতে পারবেন।

বোয়িং ৭৭৭-৯এক্স এর দাম ঠিক করা হয়েছে ৪০০ মিলিয়ন ডলার। আর ৭৭৭-৮এক্স এর দাম পড়বে ৩৭১ মিলিয়ন ডলার। বোয়িংয়ের এভারেট কারখানায় এসব উড়োজাহাজ তৈরি হবে।

বেড়েছে ব্যবসাও

চলতি বছরের শুরুতেই কেনার অর্ডার ও সরবরাহের দিক দিয়ে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এয়ারবাসের চেয়ে এগিয়ে গেছে বোয়িং।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে এয়ারবাস ১২১টি উড়োজাহাজের আদেশ যায়, যার বিপরীতে বোয়িং পায় ১১৬টি। কিন্তু বেশ কিছু ক্রয় আদেশ বাতিল হওয়ার পর এয়ারবাসের ক্ষেত্রে ক্রয় আদেশ ১০১টিতে নেমে আসে, আর বোয়িংয়ের হাতে থাকে ১১০টি আদেশ।

Boing4

বছরের শুরুতে এয়ারবাস ক্রেতাদের হাতে পৌঁছে দিয়েছে ১৩৪টি উড়োজাহাজ। অন্যদিকে বোয়িং ১৮৪টি উড়োজাহাজ সরবরাহ করেছে।

বোয়িংয়ের সর্বশেষ সংযোজন ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের চাহিদা বেড়ে যাওয়াতেই সার্বিকভাবে সরবরাহ বেড়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

বোয়িংয়ের তৈরি ৭৭৭ মডেলের উড়োজাহাজ বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে ‘আস্থার’ উড়োজাহাজ হিসেবে পরিচিত। এয়ারবাসের এ৩৮০ সিরিজ বাজারে আসার আগে বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী বিমান। সূত্র : বিডিনিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *