Skip to content

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত তিন নারী

UKযুক্তরাজ্যের ৫৬তম সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তিন বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত নারী রোশনারা আলী, বঙ্গবন্ধুর নাতনী ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক এবং রূপা হক। এদের মধ্যে রোশনারা আলী দ্বিতয়িবারের মত এমপি নির্বাচিত হলেন।

আর টিউলিপ ও রূপা এবারই প্রথমবারের মত বৃটিশ পার্লামেন্টে নিজেদের স্থান করে নিলেন।

এবারের নির্বাচনে যুক্তরাজ্যের প্রধান তিনটি দল থেকে মোট ১১ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী এমপি পদে লড়েছেন। তাঁদের মধ্যে লেবার দল থেকে সাতজন, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস দল থেকে তিনজন ও কনজারভেটিভ দল থেকে একজন মনোনয়ন পেয়েছেন। এই ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে বিশেষ করে রুশনারা, টিউলিপ ও রুপার দিকে ছিল সবার দৃষ্টি। লর্ড অ্যাশক্রফট পরিচালিত আসনভিত্তিক জরিপেও তাঁরা এগিয়ে ছিলেন।

রোশনারা আলী

পূর্ব লন্ডনের ‘বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো’ আসনে লেবার পার্টির প্রার্থী রুশনারা বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। ৩২ হাজার ৩৮৭ ভোট পেয়েছেন তিনি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী ম্যাথিও স্মিথ পেয়েছেন আট হাজার ৭০ ভোট। গ্রিন পার্টির অ্যালিস্টেয়ার পলসন চার হাজার ৯০৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।

গতবারের নির্বাচনে (২০১০ সাল) বাংলাদেশি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের একই আসনে লেবার পার্টির এমপি নির্বাচিত হন রুশনারা। তাঁর এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশিদের অভিষেক ঘটে। গতবার প্রায় ১২ হাজার ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন অক্সফোর্ড-পড়ুয়া উদীয়মান রাজনীতিক রুশনারা। এবার ২৪ হাজারের বেশি ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি।

রুশনারা সিলেটি কন্যা। জন্ম বিশ্বনাথে। ১৯৭৫ সালে জন্ম নেওয়া রুশনারা প্রথমবার যুক্তরাজ্যের এমপি নির্বাচিত হয়ে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও শিক্ষা-বিষয়ক ছায়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি পার্লামেন্টারি ট্রেজারি সিলেক্ট কমিটির সদস্য হিসেবে মেয়াদ পূর্ণ করেন।

টিউলিপ সিদ্দিক

প্রথমবারের মত পার্লামেন্টে জায়গা করে নিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর নাতনী টিউলিপ সিদ্দিকও। প্রতিদ্বন্দ্বীকে ১১ হাজার ৩৯ ভোটের ব্যাবধানে হারিয়েছেন তিনি। নির্বাচনে টিউলিপ ২৩ হাজার ৯৭৭ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী সায়মন মার্কাস পেয়েছেন ২২ হাজার ৮৩৯ ভোট। লিবারেল ডেমোক্র্যাটস পার্টির মাজিদ নাওয়াজ তিন হাজার ৩৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।

২৩ বছর ধরে লেবার পার্টির দখলে থাকা হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনটি ধরে রাখা টিউলিপের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ কনজারভেটিভ পার্টি এবার এই আসনটিকে ‘টার্গেট সিট’ বানিয়েছিল।

লন্ডনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ১০টি আসনের শীর্ষে ছিল হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন। এ কারণে আসনটির প্রতি গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টি ছিল ভিন্ন, সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জও ছিল অন্য রকম।

লন্ডনের মিচামে জন্ম নেওয়া টিউলিপ কিংস কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৫ বছর বয়স থেকে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্নে বসবাস করছেন তিনি। পড়েছেন এই এলাকার স্কুলে। ২০১০ সালে স্থানীয় ক্যামডেন কাউন্সিলে প্রথম বাঙালি নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি।

রূপা হক

২৭৪ ভোটের ব্যবধানে জয়ী ৪৩ বছর বয়সী রুপা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনের প্রতিনিধিত্ব করবেন। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থী রূপা পেয়েছেন ২২ হাজার ২ ভোট। আর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী এঞ্জি ব্রে পেয়েছেন ২১ হাজার ৭০১ ভোট।

এর মধ্য দিয়ে গতবার কনজারভেটিভ পার্টির কাছে হারানো ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনটি পুনরুদ্ধার করল লেবার পার্টি। আসনটি এবার লেবার পার্টির অন্যতম ‘টার্গেট সিট’ ছিল।

এবারের সাধারণ নির্বাচনে লন্ডনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ১০টি আসনের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রুপার আসনটি। এ কারণে এই আসনের প্রতি গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টি ছিল ভিন্ন, সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জও ছিল অন্য রকম।

ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটনে গতবার তিন হাজার ৭১৬ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী এঞ্জি ব্রে। কনজারভেটিভ পার্টির বাজেট কাটছাঁটের কারণে এই এলাকার চারটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র (জিপি সার্জারি) বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। জনগণের এই ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে আসনটি দখলে নেন লেবার পার্টির রুপা হক।

কিংস্টন ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক রুপা হক। ১৯৭২ সালে লন্ডনের ইলিংয়ে জন্ম নেওয়া রুপার আদি বাড়ি পাবনায়। সূত্র : প্রিয়.কম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *