Skip to content

ভোঁদর জেলে

নড়াইলের চিত্রা নদীর তীরে ভোগরা গ্রাম৷ সেখানে কয়েকটি বিশেষ জেলে পরিবারের বসবাস৷ যুগ যুগ ধরে তাঁরা ভোঁদর বা উদ্বিড়ালের সাহায্যে বিশেষ এক পদ্ধতিতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন৷

এশীয় উদ্বিড়াল ভোঁদর সমাচার

বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণীর মধ্যে ভোঁদর অন্যতম৷ কেতাবি নাম এশীয় উদ্বিড়াল বা ছোটনখী ভোঁদর৷ স্থানভেদে ছোট এ প্রাণীটি উদবিলাই, উদ, ধেরে, ধারিয়া ইত্যাদি নামেও পরিচিত৷ বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত৷বিড়ালের মতো দেখতে ছোট উভচর এ প্রাণী মাছ শিকারে পটু৷ মাছই এদের সবচেয়ে প্রিয় খাবার৷ পুকুর বা বিলে মাছ শিকার করে এরা৷

মাছ শিকারে খুবই দক্ষ হওয়ায় জেলেরা প্রাণীটি ধরে প্রশিক্ষণ দিয়ে রশি বেঁধে নামিয়ে দেয় খাল কিংবা জলাশয়ে৷ এরা মাছ তাড়িয়ে নির্দিষ্ট স্থানে পাতা জালে নিয়ে আসে৷ উদ্বিড়াল জালে মাছ তাড়ানোর সময় শিকার করে না বা কোনো মাছ খায়ও না৷ জাল তোলার পর সেখান থেকে তাদের যে ছোট মাছ খেতে দেয়া হয়, সেগুলোই কেবল খায় তারা৷

নড়াইল জেলার গোবরা ছাড়াও গোয়ালবাড়ি, রতডাঙ্গা ও পঙ্কবিলাসহ আরো কয়েকটি গ্রামে ভোঁদর জেলেরা বাস করছেন৷ ভোঁদর দিয়ে মাছ ধরার এ পেশা চলে আসছে বংশানুক্রমে৷ বলা হয়ে থাকে, উদ্বিড়াল দিয়ে মাছ ধরার এ পদ্ধতি ৩০০ বছরের পুরনো৷ ভোঁদর দিয়ে মাছ ধরার মৌসুম অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত৷ এ সময় খাল-বিলের পানি কমে যায় বলে মাছ পাওয়া যায় বেশি৷

ভোদর জেলেদের বেশিরভাগই মাছ ধরতে অতীতে শীত মৌসুমে সুন্দরবনে পাড়ি জমাতেন৷ তবে জলদস্যুদের ভয়ে এখন সুন্দরবন যেতে চান না তারা৷

বাংলাদেশের নদী জলাশয় থেকে দিনে দিনে মাছ কমে যাওয়ায় দুর্দিন চলছে ভোঁদর জেলেদের৷ তাই পেশা পরিবর্তন করে আন্য পেশায় ঝুঁকছেন জেলেরা৷

জেলেদের ভোঁদরের সংকটও আছে৷ জেলেদের প্রতিটি ভোঁদর সংগ্রহ করতে হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়৷

প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এ পেশায় জেলেদের কিটিয়ে রাখতে হলে তাদেরকে দিতে হবে সরকারি সহায়তা৷ সৌজন্যে : ডিডব্লিউ.কম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *