সাদিয়া ইসলাম
আটলান্টায় কিউবান দাঙ্গা : দুই জেলের কয়েদিরা একসঙ্গে পালায়
ব্যাপারটা খানিক অদ্ভুত শোনালেও সত্যি যে, ১৯৮৭ সালে দক্ষিণ আমেরিকার দুটো আলাদা জেলে একই সময় এবং একই সঙ্গে দাঙ্গা বাধে। মজার ব্যাপার হলো দাঙ্গার কারণটাও কিন্তু ছিল এক। ঘটনা ঘটে যখন তার কিছুদিন আগেই আমেরিকান সরকার একটা চুক্তিতে আসে যে তাদের ওয়াকডেল ও আটলান্টার জেলে থাকা কিউবার কয়েদিদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এ কিউবান মানুষেরা অনেকদিন ধরেই আমেরিকায় বিনা অনুমতিতে আর অবৈধভাবে বাস করে আসছিল। পরবর্তীতে তাদের জেলে পুরে দেওয়া হয়। এবং সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার। আর এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জেলের পুলিশেরা খুব একটা সতর্ক ছিল না। ফলাফল যা হয়েছিল সেটা আমেরিকার জন্য একটা ভয়ঙ্কর ব্যাপারই বটে। ঘোষণার পরপরই দুই জায়গার জেল থেকেই কয়েদিরা পালাতে চেষ্টা করে এবং সবশেষে সোজা একটা উপায় অবলম্বন করে তারা সরকারকে নিজেদের কথা শোনানোর। আর সেটা হলো জিম্মি রাখা। ওয়াকডেল জেলের কয়েদিরা ২৯ জন এবং আটলান্টা জেলের কয়েদিরা ৭৫ জন মানুষকে জিম্মি রেখে নিজেদের অধিকারের কথা সরকারকে শুনতে বাধ্য করে। আর এতসব ঝামেলার মধ্যে তাদের গুলিতে মারা যায় একজন প্রহরী। দুটো জেলেই মোট এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলে এ অবস্থা। বন্দীদের দাবি ছিল কিউবায় না ফিরিয়ে দেয়া।
একটা সময় সরকার তাদের কথা মানতে বাধ্য হয় এবং এই নিশ্চয়তা দেয় যে, সবার কথা এক এক করে শোনা হবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। প্রথমে ওয়াকডেল এবং পরবর্তীতে আটলান্টার কয়েদিরাও সরকারের এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। পরের কয়েক বছরে ১ হাজার জন কিউবার নাগরিক ছাড়া বাকিদের আমেরিকায় অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়।
আলকাট্রাজের দাঙ্গা : পরিকল্পনা ছিল নৌকায় সমুদ্র পাড়ি
সান ফ্রান্সিসকোর উপসাগরের মাঝখানে অবস্থিত আলকাট্রাজ দ্বীপের জেলখানাটিকে সবসময় সুরক্ষিত বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। কেউ কখনো ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি যে এরকম একটা জায়গা থেকে কোনো ধরনের দাঙ্গা বা হামলা হতে পারে। তাও আবার জেলখানার আসামিদের দ্বারা। এখানকার কয়েদিদের কোনো রকমের ঝামেলা না করার সবচেয়ে বড় কারণ ছিল পালাতে না পারার ব্যবস্থা। তবে এতসব কারণের পরেও ১৯৪৬ সালের ২ মে ঘটনাটা ঘটেই যায়। সেদিন আর সবগুলো দিনের মতো সি ব্লকে আর্দালি হিসেবে নিজের কাজ করে যাচ্ছিল বার্নার্ড কয়। হঠাৎ করেই সেখানকার এক প্রহরীর বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে তাকে আক্রমণ করে বসে সে। এরপর একে একে আরও অনেকগুলো জেলের তালা খুলে সঙ্গী করে নেয় জোসেফ ডাচ ক্রেটজার, মার্ভিন হাবার্ড, ক্লারেন্স কারনেস, স্যাম শোকলে ও মিরান বাডি থম্পসনের নামের কয়েকজনকে। তাদের পরিকল্পনাটা ছিল বেশ সাদাসিধে আর সহজ। প্রহরীকে বন্দুকের সামনে রেখে একটা নৌকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া। তবে এই অনেক বেশি সহজ পরিকল্পনাতেও পানি পড়ে গেল যখন জেলখানা থেকে বাইরে যাওয়ার চাবিটা ঠিক করে তালাতে ঢোকানোর আগেই আটকে গেল তাড়াহুড়ায়। এর ভেতরেই কিছু একটা হচ্ছে আন্দাজ করতে পেরে জেলের অন্য প্রহরীরা ঘিরে ফেলল সবাইকে। মুক্ত হতে না পেরে শেষমেশ বন্দুকের সামনে থাকা প্রহরীকেই গুলি করে মেরে ফেলার চিন্তা করল কয়েদিরা। এতে করে কারও নামেই দোষ পড়বে না। তবে একটা নয়, পরপর দুটো মানুষ খুন করে ফেলল তারা। এরপর টানা ২ দিন গোলাগুলি শেষে কয়, ক্রেটজার ও হাবার্ড মারা গেলেও বেঁচে যায় কার্নেস, থম্পসন ও শোকলে। পরবর্তীতে কার্নেসের যাবজ্জীবন হয়ে যায় আর ফাঁসি হয় বাকিদের।
কারানডিরু কারাগার : সহস্র কয়েদি বাধিয়ে ফেলে ভয়ঙ্কর দাঙ্গা
১৯৯২ সালের কথা সেটা। ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় জেলখানা কারানডিরু আরও একটা কারণে পরিচিত ছিল। আর সেটা হলো এর অতিরিক্ত বাসিন্দা। জায়গা মোট ৩,৫০০ জনের জন্য হলেও সেখানে মোট কয়েদি ছিল ৭,৩০০। ফলে যে কোনো সময় যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটার জন্য একদম তৈরিই ছিল মানসিকভাবে সবাই। আর খুব বেশি অপেক্ষাও করতে হয়নি সেজন্য। অক্টোবরের এক সুন্দর বিকালে হঠাৎ করেই এক জেলের ভেতরকার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মাদক চোরাচালান দলের ভিতরে লেগে গেল তুমুল ঝামেলা। প্রথমটায় খুব একটা আমলে নেয়নি পুলিশ। তবে তিন ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও যখন ঘটনার কোনো সমাপ্তি দেখা গেল না, বরং একটু একটু করে সীমা ছাড়িয়ে যেতে লাগল সেটা- এগিয়ে গেল পুলিশ। শুরু হলো ৩০০ জন পুলিশের অবিরাম গোলাগুলি। টানা গোলাবর্ষণে মারা গেল ১১১ জন কয়েদি। শুধু তাই নয় আহত হলো আরও ৩৫ জন। পুলিশের ভিতরে কেউ মারা না গেলেও আহত হলো ২২ জন। আর এই কারও না মারা যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হলো কথা। অনেকের কথায় পরে জানা যায় যে, পুলিশ নির্বিচারে গুলি করেছিল সেদিন। এমন অনেকেই মারা পড়েছিল গুলিতে যাদের কোনো রকম আক্রমণের মনোভাব ছিল না। চাক্ষুষ সাক্ষীদের মতে অনেকে সেসময় লুকিয়ে ছিল কিংবা আত্দসমর্পণ করেছিল। কিন্তু তবুও পুলিশ তাদের গুলি করে মেরে ফেলে। ব্যাপারটি একসময় এতটাই জোরালো হয়ে ওঠে যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগেও অভিযুক্ত করা হয় কারানডিরু দাঙ্গার সঙ্গে যুক্ত পুলিশদের। কর্নেল উবিরতন গুয়মারাইসকে অতিরিক্ত শক্তি মোতায়েনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে তাকে ও আরও অনেক পুলিশকে খুনের দায়ে জেলের সাজা দেওয়া হয়। অনেককে ৬২৪ বছর পর্যন্ত জেলের শাস্তি দেওয়া হয়।
আফগানিস্তানের কোয়ালা-ই-জাঙ্গি : এক সপ্তাহ চলেছিল গোলাগুলি
২০০১ সালের নভেম্বরের কথা সেটা। তখনো ১১ সেপ্টেম্বরের কথা মন থেকে সতেজতা হারায়নি মানুষের। ঠিক এমন একটি সময়েই আফগানিস্তানে উত্তরের মৈত্রীপক্ষ তালেবান ও আল-কায়েদার মোট ১ হাজার জন মানুষকে আটক করে এবং কোয়ালা-ই-জাঙ্গিতে কয়েদ করে। সবটাই ঠিক ছিল তাদের। কেবল ভুল রয়ে গিয়েছিল একটি জায়গায়। আর সেটা হলো এতগুলো মানুষকে বন্দী করার পরেও তাদের মাথায় একবারের জন্যও আসেনি যে এদের তল্লাশি করা দরকার। ফলে সেটাই হয়েছিল যেটা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। পকেটে করে নিয়ে আসা লুকানো গ্রেনেডের আঘাতে মারা যেতে হয় অনেককে তখন ওই জেলখানায়। তবে ঘটনা এতটুকুতেই শেষ হয়নি। ব্যাপার আরও ভিন্ন মোড় নেয় যখন এ ঘটনার তদন্ত করতে সিআইএ’র দুজন আমেরিকান অফিসার ২৫ নভেম্বর আফগানিস্তানে আসে। গার্ডের কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে জনি মাইকেল স্প্যান নামের একজনকে মেরে ফেলে এক কয়েদি। এরপর আরও কয়েদিদের সঙ্গে মিলে দাঙ্গা বাধিয়ে দেয় সে সেখানে। পরবর্তীতে পুরো ব্যাপারটা সামাল দিতে আমেরিকা ও ব্রিটেন এগিয়ে আসে। সাহায্য করে উত্তরের মৈত্রীদের। টানা এক সপ্তাহ গোলাগুলি চলতে তাকে। অনেক কয়েদি মারা যায়। তবে শেষ অব্দি আর সবাইকে আয়ত্তে আনা গেলেও ১০০ জন কয়েদি মাটির নিচে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখানেই তারা পরবর্তী চার দিন অবস্থান করে ও প্রতিরোধ চালিয়ে যায়। প্রথমে বেরিয়ে আসতে বললেও না শোনায় তেল ঢালা হয় নিচে আর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় আগুন। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় বরফ শীতল পানি দিয়ে ভরে দিতে শুরু করে সৈন্যরা নিচের ঘরটি। এবার বেরিয়ে আসে তখন পর্যন্ত বেঁচে থাকা কয়েদিরা। তবে এত ঝামেলার শেষে আটককৃত ১ হাজার জন কয়েদির ভিতরে জীবিতাবস্থায় পাওয়া যায় মাত্র ৮৬ জনকে।
মন্টানা কারাগার : হঠাৎ গ্যাসোলিন বোমায় লণ্ডভণ্ড
এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে বেশ দাপটের সঙ্গেই এগিয়ে চলছিল মন্টানা জেলখানা। ভালোই নাম কুড়িয়েছিল অল্প কয়দিনেই। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হতে তাকে ১৯৫০ সাল থেকে। তবে তখনো কিছুটা বাকি ছিল এর গৌরের। যেটার পুরোটাই ধ্বংস হয়ে যায় ১৯৫৯ সালের এপ্রিল মাসের শান্ত এক বিকালে। জেরি মাইলস ও তার প্রেমিকা লি স্মার্ট দুজন মিলে পরিকল্পনা করে সেদিন এবং নিজেদের সঙ্গী হিসেবে যুক্ত করে জেলের গ্যারেজে কাজ করা জর্জ অ্যাল্টনকে। জর্জের খুব ভালোরকম সুবিধা ছিল গ্যাসোলিন পাওয়ার ক্ষেত্রে। তার কাজটাই ছিল ওরকম। আর তাই পরিকল্পনার প্রধান একটা জায়গাজুড়েই ছিল গ্যাসোলিনের ভূমিকা। এ তিন কয়েদি মিলে প্রথমেই নিজেদের পরিকল্পনামাফিক আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় এক প্রহরীকে। তারপর বাকিদের জ্বালানোর ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে নেয়। মুক্ত করে বাকি সব কয়েদিকে। এরপর তারা সোজা রওনা হয় ডেপুটি ওয়ার্ডের টেড রোথের অফিসে। সেখানে লি গুলি করে মারে টেডকে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখে ওয়ার্ডেন ফ্লয়েড পাওয়েল গভর্নরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, গভর্নর যোগাযোগ করেন মন্টানা ন্যাশনাল গার্ডের সঙ্গে। ৩৬ ঘণ্টা অস্ত্র প্রহরা চলে। আর এ সময়টাতে মাইলস মাইকের মাধ্যমে সবাইকে জানান যে, ঠিক কী কারণে এ দাঙ্গা করেছেন তারা। তারা এর কারণ হিসেবে জেলখানার সমস্যা আর অসুবিধাগুলোর কথা তুলে ধরেন। এর ভেতরেই মাইলস আর লির পরিকল্পনা অনুযায়ী বাকি কয়েদিরা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে চলেছিল জেল থেকে পালানোর। তবে তাদের পুরো পরিকল্পনাই ভেস্তে যায় যখন সকাল হতেই ১৮ এপ্রিল অসংখ্য সৈন্য জেলখানায় ঢুকে পড়ে। বেশিরভাগ কয়েদিই আত্দসমর্পণ করে।
লুকাসভিলা ওহিয়ো : দাঙ্গায় অংশ নেয় কয়েদিদের তিন দল
১৯৯৩ সালে লুকাসভিলার ওহিয়ো জেলখানায় ঘটে এ আন্দোলনের ঘটনাটি। ঘটে যাওয়া এ দাঙ্গায় অংশ নেয় জেলের এক নয়, দুই নয়, তিন- তিনটি বড় দল। দ্য আর্য ব্রাদারহুড, দ্য ব্ল্যাক গ্যাংস্টার ডিসিপেলস ও আরেকটি দল হাত মেলায় একসঙ্গে। এবং খুব সঙ্গত কারণেই এমনটা হবে বলে আশা করেনি এর আগে সেখানকার কেউই। সেবার ওহিয়ো স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সবাইকে ক্ষয়রোগের জন্য টিকা দেওয়ার কথা বলা হয়। আর এ ব্যাপারেই ক্ষেপে ওঠে একটি দল। কিন্তু যখন তাদের কথা শোনার কোনো নিশানা দেখা না যায় তারা হাত মেলায় অন্য দুটি দলের সঙ্গে। কোনো রকম দ্বিধা ছাড়াই। নিজেদের ব্যক্তিগত বিশ্বাস পাশে রেখে এগিয়ে যায় এ তিনটি দল। আক্রমণ করে এপ্রিলের ১১ তারিখ, বড়দিনে।
এল ব্লককে কব্জা করে নিয়ে প্রহরীদের জিম্মি রাখে তারা। ১১ দিন এভাবেই চলে। একটা সময় পানি আর বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দেওয়া হলে কয়েদিরা জবাব হিসেবে মেরে ফেলে রবার্ট ভ্যালানডিংহাম নামের এক প্রহরীকে। মূলত তখন এ বিদ্রোহ আর সামান্য কোনো টিকাকেন্দ্রিক ছিল না। এর চাইতে মুক্ত হতেই যেন অনেক বেশি করে চাইছিল কয়েদিরা। পরবর্তীতে ২১ এপ্রিল কয়েদিরা আত্মসমর্পণ করতে সম্মত হয়। তারা একটি চুক্তিতে আসে। তবে যার দ্বারা এ চুক্তির যোগাযোগ পরিচালিত হয়েছিল সেই ডেভিড সোমারকে মেরে ফেলে কয়েদিরা সমর্পণের আগেই। পরে অনেকবার নিজেদের কথামতো সরকারকে চালানোর চেষ্টা করলেও দাঙ্গার সময় খুন করার অভিযোগে পাঁচ কয়েদিকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
স্ট্রেঞ্জওয়েস জেলদাঙ্গা : কারাগারের একাংশ দখলে নেয় বিদ্রোহীরা
অনেক আগে থেকেই এ জেলের কয়েদিরা বেশ অসন্তুষ্ট ছিল জেলের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে। তাদের কোনো ধরনের ব্যাপারেই জেলের কোনো মাথাব্যথা নেই বলে একটা সময় ধারণা হয় কয়েদিদের। ১৯৯০ সালে ১,৬৪৭ জন মানুষ সেখানে থাকলেও কোনো ধরনের ভালো ব্যবস্থা ছিল না সেখানে। ছিল প্রচণ্ড রকমের নৃশংসতা। এছাড়াও ব্যাপারটা আরও অনেকদূর এগিয়ে যায় রবিবার গির্জার ব্যবস্থা নিয়ে। সব মিলিয়ে ১ এপ্রিল পরিস্থিতি গরম হয়ে ওঠে অস্বাভাবিকরকম। হঠাৎ করেই একটি মাইক নিয়ে কয়েদি পল টেইলর চেঁচিয়ে ওঠে, চল জেলকে দখল করি! যেই কথা সেই কাজ। সব কয়েদি একসঙ্গে প্রহরীদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে। জেলের পুরোটা দখল করে নেয়। প্রহরীদের জিম্মিও করে। তবে সেটা পরদিন সকালেই থিতিয়ে যায়। বেশিরভাগ কয়েদিই আত্মসমর্পণ করে। তবে জেলের একটা অংশ তখনো ছিল কয়েদিদের দখলে। তাদের হাতেও ছিল অনেক প্রহরী। মোট ২০০ জন ছাড়া ছিল তখনো। এ কয়েদিরা ছাদে উঠে মাইকের সাহায্যে পুরো দেশকে নিজেদের কষ্টের কথা, অবহেলার কথা জানাতে শুরু করে মিডিয়াকে। তাদের দেখাদেখি ব্রিটেনের আরও অনেক স্থানে শুরু হয় এরকম আরও আন্দোলন। যদিও টানা ২৫ দিন ব্যাপারটা চলতে থাকে, এ কয়দিনেই নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে অনেক কথা হয় কর্তৃপক্ষ আর কয়েদিদের। অবশেষে, ২৫ এপ্রিলে এসে পল টেইলরসহ আর মাত্র পাঁচজন কয়েদিই অবশিষ্ট ছিল। পরে তারাও আত্মসমর্পণ করে ফেলে। লম্বা এ দাঙ্গায় নিহত হয় এক কয়েদি ও এক প্রহরী। আহত হয় ১৯৪ জন। তবে এত ঝামেলা করে একটা জিনিস ঠিকই করতে পেরেছিল কয়েদিরা। আর তাহলো নিজেদের অবস্থার উন্নতি। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন