Skip to content

মন কাড়ে মধুপুর গড়ের শালবন

Shalbon4

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
বাংলাদেশে ভ্রমণের অনেক স্থান থাকলেও টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর গড়ের শালবন একটি ঐতিহাসিক স্থান। বিশেষ করে মে মাসে শালের জীর্ণ পাতা ঝরে নতুন পাতায় সুশোভিত হয়। চারিদিকে শুধু সবুজের সমারোহ ও বনের অভ্যন্তরে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন প্রজাতির চারা ও লতা-গুল্ম মন ভরিয়ে দেয়। তখন বনের মধ্যে এখানে-সেখানে থাকে বেগুনি রঙের জারুল গাছের মনকাড়া ফুলের বাহার। তবে জুন মাস এলেই সে দৃশ্যপট পাল্টে শালবনটি ঘন জঙ্গলে রূপ নেয়।

যা যা দেখবেন
মধুপুর জাতীয় উদ্যানের প্রধান গেট থেকে দোখলা রেস্ট হাউজ পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। সড়কপথে জঙ্গলের ভিতরে প্রবেশের প্রধান বাহন গাড়ি। আশেপাশে বনের অন্যান্য স্থানে ঘুরলে আরো খানিকটা পথ পাড়ি দিতে হয়। আশেপাশের এলাকাগুলো আদিবাসী গ্রাম। টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে ময়মনসিংহ যাবার পথে রসুলপুর মাজার নামক স্থানে গিয়ে বামপাশে মধুপুর জাতীয় উদ্যানের প্রধান ফটক। ফটকের পাশেই মধুপুর জাতীয় উদ্যান রেঞ্জ অফিস ও সহকারী বন সংরক্ষকের অফিস অবস্থিত। সেখানে গাড়ি থামিয়ে গেটে অনুমতি নিয়ে বনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে হয়। তাছাড়া আরও একটু সামনে ২৫ মাইল নামক স্থানে গিয়ে ডানদিকে প্রায় ৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দোখলা রেঞ্জ অফিস এবং দোখলা রেস্ট হাউজের অবস্থান। সেখানেও অনুমতি নিয়ে বনের অভ্যন্তরে ঢুকতে হয়। জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ময়মনসিংহ বন বিভাগের রসুলপুর রেঞ্জ কার্যালয় অবস্থিত। এর পাশেই আছে জলই রেস্ট হাউজ ও মহুয়া কটেজ। মধুপুর বনের অভ্যন্তরের দৃশ্য অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। সবুজ অরণ্যের প্রাকৃতিক দৃশ্য ও পরিবেশ নৈসর্গিক। ইট বিছানো রাস্তায় চলতে চলতে দুধারের সবুজ বন-বনানীর দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।

Shalbon3

গাছ ও প্রাণির সান্নিধ্যে
মধুপুর জাতীয় উদ্যানের আয়তন ২০,৮৪০ একর। প্রধান ফটক দিয়ে বনের মধ্যে ঢুকলে চোখে পড়ে শুধু শালবন আর সবুজের সমারোহ। বনের অভ্যন্তরে আছে নানান জাতের, নানা বাহারের গাছ-গাছড়া। যেমন- শাল, বহেড়া, আমলকি, হলুদ, আমড়া, জিগা, ভাদি, অশ্বথ, বট, সর্পগন্ধা, শতমূলী, জয়না, বিধা, আজুকি/হারগাজা, বেহুলা ইত্যাদি। আছে বিভিন্ন প্রজাতির পাহাড়ি আলু ও শটি। আছে নাম না জানা বিচিত্র ধরনের লতা-গুল্ম। দর্শনীয় প্রাণির মধ্যে আছে অসংখ্য বানর ও হনুমান। আছে নানান জাতের পাখ-পাখালি, হরিণ, বনবিড়াল, বনমোরগ, বাঘডাসা ইত্যাদি। বনের ঠিক মাঝখানে আছে একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র। লহরিয়া বিট অফিস সংলগ্ন এই কেন্দ্রে দেখতে পাওয়া যায় চোখ জুড়ানো চিত্রা হরিণের বিচরণ। সেখানেও হনুমানের সমারোহ সকলকে মুগ্ধ করবে। পাশেই সুউচ্চ টাওয়ারে উঠলে মধুপুর পার্কের অভ্যন্তরে সবুজ গাছপালা দেখে কিছুক্ষণের জন্য হলেও মুগ্ধ হতে হয়।

Shalbon2

রেস্ট হাউজ
দোখলা নামক স্থানে আছে দোখলা রেস্ট হাউজ, চুনিয়া কটেজ, বকুল কটেজ, দুটি পিকনিক স্পট, জুই ও চামেলী বাগান। আছে একটি ইয়ুথ হোস্টেল ও একটি সুউচ্চ টাওয়ার, খেলার মাঠ, পানীয় জল, টয়লেট, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এর পাশেই আছে একটি ছোট্ট বাজার। মধুপুর বনাঞ্চলের অরনখোলা মৌজার বনভূমিতে অবস্থিত বন বিশ্রামাগারটিই দোখলা রেস্ট হাউজ। টাঙ্গাইল জেলা সদর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রসুলপুর নামক স্থান থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এর অবস্থান।

যাতায়াত ব্যবস্থা
মধুপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে ও সড়কপথে যেকোনো যানবাহনে যাতায়াত করা যায়। এতে যাতায়াত খরচ হবে ২০, ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়। সৌজন্যে : জাগোনিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *