Skip to content

মরুভূমিতে বাতাস থেকেই পানি উৎপাদন!

মরুভূমির রুক্ষ পরিবেশে পানির অভাব বড় সমস্যা। এক ডাচ শিল্পী ও উদ্ভাবক অভিনব উপায়ে বাতাস থেকেই পানি সৃষ্টি করতে চান। তাঁর পরীক্ষামূলক প্রকল্প মালির মরুভূমিতে সফলভাবে কাজে লাগানো হয়েছে।

মালির মরুভূমিতে সূর্যের গনগনে উত্তাপের মাঝে পাঁচদিন ধরে নতুন এক উদ্ভাবনের ফল যাচাই করা হচ্ছে। দেখতে সাধারণ মনে হলেও দু’টি বাক্স আসলে এক শিল্পীর সৃষ্টি। নেদারল্যান্ডসের সেনাবাহিনী মালিতে তাদের শান্তি মিশনে এই আইডিয়া কাজে লাগাতে চায়। এখনো বড়ো আকারে তার প্রয়োগ সম্ভব না হলেও এর মাধ্যমে একদিন মরুভূমিতে পানি আনার সম্ভাবনা রয়েছে।

সাহারা মরুভূমির মাঝে গাও অঞ্চলের জন্য এমন সম্ভাবনা সামরিক কমান্ডারের মনে ধরেছে। ডাচ সেনা ইউনিটের প্রধান জেনারেল টম মিডেনডর্প বলেন, ‘‘এমন প্রকল্প জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে সাহায্য করতে পারে। পানির অভাবের মধ্যে আমরা স্থানীয় মানুষের জন্য বোঝা হতে চাই না, বরং তাদের আরও সাহায্য করতে চাই, এই এলাকায় সংকটের অন্যতম কারণের সমাধান করতে চাই। পানির জন্য তাদের সংঘর্ষে যেতে না হলে তো সমস্যার একটা অংশের সমাধান হয়ে যাবে।’’

গড়ে তোলার কাজ সহজ হলেও সমস্যা কম ছিল না। চারিদিকে বালু, উচ্চ তাপমাত্রা – যা এমনকি সোলার প্যানেলের জন্যও অত্যন্ত বেশি। যন্ত্র শীতল রাখার তরল পদার্থ নিয়েও সমস্যা রয়েছে। এই উদ্ভাবনের মূলে রয়েছে সোলার সেল ও সাধারণ কিছু বাক্স। বাক্সের গায়ে ধাতুর তৈরি হিটিং ব্যবস্থা লাগানো আছে। বাতাসের তাপমাত্রা বেশি হওয়া সত্ত্বেও তার উপর শীতল পানির বিন্দু তৈরি হয়।

সবকিছু ঠিকমতো চললে সৌরশক্তি চালিত একটা ছোট পাম্প ভিতরেই তরল পদার্থকে শীতল রাখে। তখন বাতাসে আর্দ্রতা বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ে৷ ২৪ ঘণ্টায় ৮ লিটার পরিষ্কার পানি পাওয়া যাবে।

শিল্পী ও উদ্ভাবক হিসেবে আপ ফ্যারহেখেন বলেন, ‘‘অর্থ বা ব্যয় নিয়ে কথা হচ্ছে না। আমি বলতে পারি, যে আমরা নিজেরাই প্রকল্পের জন্য অর্থ দিচ্ছি। তাই সস্তার ও নির্ভরযোগ্য সরঞ্জাম ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছি।’’

উদ্ভাবক একটি ছোট সংস্করণও তৈরি করেছেন, যা দিয়ে দিনে এক গ্লাস পানি সংগ্রহ করা যায়। তিনি গোটা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উদ্দেশ্যে এই প্রকল্পে অংশ নেবার ডাক দিচ্ছেন, যাতে আরও উন্নত সরঞ্জাম তৈরি করা যায়। দ্য হেগ ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল জাস্টিস-এর ড. পাট্রিক হুন্টইয়েন্স বলেন, ‘‘আরও পানি উৎপাদন করতে এই ইউনিটকে আরও নিখুঁত করে তুলতে হবে, কারণ দু’টিই আসলে প্রোটোটাইপ। কৃষিক্ষেত্রে ড্রিপ সেচের জন্যও এই সমাধানসূত্র বড় অবদান রাখতে পারে।’’

এই উদ্ভাবন এখনো বড় আকারে প্রয়োগ করার সময় আসেনি। কিন্তু মরুভূমিতে এই আইডিয়া কাজে লাগিয়ে হাতেনাতে মৌলিক ফল পাওয়া গেছে। সৌজন্যে: ডয়চে ভেলে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *