Skip to content

মহাকবি মধুসূদনের সাগরদাঁড়ি

Michal-Modhusudhan2

সাইফুল ইসলাম সজল
বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকাব্যটি লিখেছিলেন তিনি। প্রথম পত্রকাব্য ‘বীরাঙ্গনা’ এবং সনেটও প্রথম তাঁরই লেখা। বাংলায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবক্তাও তিনি। এই ভাষাতে তিনিই প্রথম চালু করেছিলেন প্রবহমান প্রথম পয়ার ছন্দ। এ রকম বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

এই মহাপ্রতিভা যেখানে জন্মেছিলেন, বেড়ে উঠেছিলেন, সে স্থানটি ঘুরে দেখার বাসনা অনেকের মনেই রয়েছে। তবে সাগরদাঁড়ি নামে ছবির মতো গ্রামটিতে কীভাবে যাবেন, তা জানা না থাকায় অনেকেই সেখানে যাওয়া হয়ে ওঠে না। তাদের জন্য বলছি, আগামী শীতে মহাকবির জন্মভিটা ঘুরে আসুন। কারণ, মহাকবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সেখানে সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিনই লাখো মানুষের সমাগম ঘটছে।

প্রতিবছর ওই সময়ে যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে মধুকবির জন্মভিটায় আয়োজন করা হয় জমজমাট গ্রামীণ মেলার। মধুমেলা নামের এই আয়োজন চলে সপ্তাহজুড়ে। সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জেলা প্রশাসন এই মেলার আয়োজন করে। ঐতিহ্যবাহী দত্তবাড়ির বিশাল আঙিনাজুড়ে গ্রামীণ হাজারো পণ্যের সমাহার তো থাকেই, সেই সাথে থাকে যাত্রা, সার্কাস, পুতুলনাচ, ভ্যারাইটি শো, নাগরদোলাসহ নানা আয়োজন। আর মেলা চলাকালীন প্রতিদিনই মেলা প্রাঙ্গণে কবির জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান তো থাকেই।

সাধারণত কবির জন্মদিন থেকেই মেলা শুরু হয়ে থাকলেও এবার তিনদিন আগেই অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি মেলা শুরু হয়েছে। মেলা চলাকালীন যদি আপনি সাগরদাঁড়িতে যান, তাহলে এসব আয়োজন উপভোগ করতে পারবেন বাড়তি পাওনা হিসেবে। আর মহাকবির জন্মভিটা ও তাঁর স্বজনদের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র তো দেখবেনই। পল্লী কবি জসিমউদ্দীন, শামসুর রাহমান, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অনেক কবি-সাহিত্যিক এসেছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই মেলায়। মেলা চলাকালে ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকেও আসেন অনেক কবিভক্ত।

Michal-Modhusudhan

ঢাকা থেকে আপনি যশোর পৌঁছাতে পারেন তিনভাবে। সকাল-বিকেল বেসরকারি বিমান চলাচল করে। যে কোনো একটিতে চেপে বসলে ৪০ মিনিটেই আপনি পৌঁছে যাবেন যশোর। যেতে পারেন সড়ক পরিবহনে। সারা দিন-রাতই আপনি ঢাকা-যশোর, ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-বেনাপোল, ঢাকা-সাতক্ষীরা রুটের গাড়ি পাবেন। সময় লাগবে পাঁচ ঘণ্টার মতো। আপনার হাতে যদি যথেষ্ট সময় থাকে এবং ট্রেন জার্নি যদি পছন্দ করেন, তাহলে যেতে পারেন ট্রেনেও।

রাতযাপনের জন্য যশোরে বেশকিছু ভালো মানের হোটেল রয়েছে। দেখেশুনে সেগুলোর একটিতে উঠে পড়তে পারেন। ফ্রেশ হয়ে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ুন সাগরদাঁড়ির উদ্দেশে। যশোর শহর থেকে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে কেশবপুর উপজেলা সদরে। দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। বাস টার্মিনাল থেকে বাসে করে যেতে পারবেন। কেশবপুর থেকে সাগরদাঁড়ি যাওয়ার জন্য আপনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল পাবেন।

পাবেন স্থানীয় কায়দায় তৈরি যন্ত্রযানও। তবে যদি কয়েকজন একসঙ্গে থাকেন, তাহলে যশোর শহর থেকেই ভাড়া করে নিতে পারবেন প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রো। এতে ফেরার বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন। ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে একটু রাত হলেও চিন্তা থাকবে না। সৌজন্যে : এনটিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *