সুদীপ্ত সাইদ খান
ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন হাজার বছর আগের শহর থেকে। বাংলার ঐতিহাসিক রাজধানী মহাস্থান গড় থেকে ঘুরে আসতে পারেন আপনি। বগুড়া শহর থেকে মাত্র ১৩ কি.মি. দূরে অবস্থিত এই মহাস্থান গড়। প্রাচীণ এই পর্যটন কেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষণ হাজার বছর আগের নানা নির্দশন। এসেবের পাশাপশি রয়েছে শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র:) এর মাজার শরীফ। মহাস্থান বাস স্ট্যান্ড থেকে কিছুটা পশ্চিমে এই মাজারটি অবস্থিত। কথিত আছে হযরত মীর বোরহান নামক একজন মুসলমান এখানে বাস করতেন। পুত্র মানত করে গরু কোরবানী দেয়ার অপরাধে রাজা পরশুরাম তার বলির আদেশ দেন এবং তাকে সাহায্য করতেই মাছের পিঠে আরোহন করে এই ওলির আগমন ঘটে।
গড়ের পশ্চিম পাশেই রয়েছে ঐতিহাসিক কালীদহ সাগর এবং পদ্মাদেবীর বাসভবন। এসব দেখে আপনি যেতে পারনে শীলাদেবীর ঘাটে। শীলাদেবী ছিলেন পরশুরামের বোন। এই ঘাটের পশ্চিম পাশেই রয়েছে জিউৎকুন্ড নামে একটি বড় কুপ। কথিত আছে এই কুপের পানি পান করে পরশুরামের আহত সৈন্যরা সুস্থ হয়ে যেত।
এসব অলৌকিক আর পৌরাণিক নিদর্শন দেখেতে দেখতেই আপনি হাজির হয়ে যেতে পারেন মহাস্থান গড়ের মিউজিয়ামে। মহাস্থান গড় খননের ফলে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন যুগের বিভিন্ন দ্রব্যাদিসহ অনেক দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে যা গড়ের উত্তরে অবস্থিত জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
আর হ্যা, নানী, দাদী অথবা মা-বাবার কাছে শোনা বেহুলার বাসর ঘরটাও যদি দেখে যেতে পারেন তাহলে কেমন হয়? তার জন্য মহাস্থান বাসস্ট্যান্ড থেকে আপনাকে আরও ২ কি. মি.দক্ষিণ পশ্চিমে দৌঁড়াতে হবে। এখানে একটি বৌদ্ধ স্তম্ভ রয়েছে যা সম্রাট অশোক নির্মাণ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। স্তম্ভের উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। স্তম্ভের পূর্বার্ধে রয়েছে ২৪ কোন বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃশ একটি গোসল খানা ।এটি বেহুলার বাসর ঘর নামেই পরিচিত।
এছাড়া মহাস্থান জাদুঘরের সামনে অবস্থিত গোবিন্দ ভিটাও দেখে নিতে পারেন আপনি।
ঢাকা থেকে বাসে করে খুব সহজেই চলে যেতে পারবেন বগুড়া শহরে। এখানে বেশকিছু হোটেল ও মোটেলে অবস্থান করে দেখে নিতে পারবেন পুরো শহরটি। বগুড়া শহর থেকে সকাল সকাল রওনা দিতে হবে মহাস্থান গড়ের দিকে। ঘন্টা দেড়েকের মধ্যেই আপনি পৌঁছে যাবেন মহাস্থান গড়ে। সূত্র : প্রিয়