Skip to content

মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মজার কিছু অজানা তথ্য

বিশ্বজুড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার শেষ নেই। তাদের নিয়ে আগ্রহেরও যেন অন্ত নেই। কিন্তু যুগে যুগে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা বহু ঘটনা-দুর্ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। তাদের অনেক তথ্য এখনও অনেকেরই অজানা। চলুন মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সম্পর্কে মজার কিছু অজানা তথ্য জেনে আসা যাক। লিখেছেন- দেবব্রত ভৌমিক

US President

টিপট গম্বুজ

মার্কিন প্রেসিডেন্টদের কেলেঙ্কারির মধ্যে শীর্ষে ছিল টিপট গম্বুজ শীর্ষক স্ক্যান্ডালটি। এটি ছিল ওয়ারেন জে হার্ডিঞ্জ প্রশাসনের একটি বড় ধরনের দুর্নীতির ঘটনা। ১৯২১ সালে হার্ডিঞ্জ নৌ-তেল সংরক্ষিত এলাকার নিয়ন্ত্রণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করেন। হার্ডিঞ্জের এ সিদ্ধান্তের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি আলবার্ট বি ফলস তার নতুন ক্ষমতাকে ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ব্যয় করেন। তিনি ম্যামথ তেল কোম্পানিকে টিপট গম্বুজটির দায়িত্ব হস্তান্তর করেন বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে। এ ঘটনা খুব বেশি দিন চাপা থাকেনি। ১৯২৪ সালেই এ ঘটনা দুনিয়ার কাছে ফাঁস হয়ে যায়।

ইরান-কন্ট্রা

১৯৮৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ইরানের কাছে কিছু অস্ত্র বিক্রি করে এবং তা থেকে প্রাপ্ত অর্থ নিকারাগুয়ার তত্কালীন সরকার বিরোধী কন্ট্রা বিদ্রোহীদের কাছে পাচার করে। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ভর্তি প্রথম বিমানটি ১৯৮৭ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ইসরাইলের মাধ্যমে ইরানে পৌঁছনো হয়। এ কেলেঙ্কারির কারণে কিছু উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তা প্রশাসন থেকে বিদায় নেন। তত্কালীন প্রেসিডেন্ট রিগ্যান সিনেটর জন টাওয়ার কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিশনের প্রদত্ত রিপোর্টে বলা হয়, পদচ্যুত জাতীয় নিরাপত্তা সহকারি অলিভার নর্থ সব তত্পরতার নায়ক ছিলেন। অবশ্য পরবর্তী সময়ে প্রেসিডেন্ট রিগ্যান স্বীকার করেন, ইরানে মার্কিন জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে তিনি গোপনে এ চুক্তি অনুমোদন করেছিলেন। এটি যে ভুল ছিল তা তিনি নিজেই পরবর্তী সময়ে স্বীকার করে নেন।

হুইস্কি রিং

১৮তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউলিসিস এস গ্রান্টের সময়কে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্নীতি পরায়ণ বলে মনে করা হয়। তার শাসনামলে মার্কিন ইতিহাসের দুটি বড় ধরনের কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে দ্বিতীয়টি ছিল হুইস্কি রিং স্ক্যান্ডাল। হুইস্কি ডিস্ট্রিলারের মধ্যে কর ফাঁকি ও ঘুষ গ্রহণের এ কলঙ্কের ফলে প্রেসিডেন্টের যুদ্ধ বিষয়ক সেক্রেটারি উইলিয়াম পদত্যাগে বাধ্য হন। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেও ইমপিচমেন্টের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এসব কিছু প্রমাণের আগেই তিনি পদত্যাগ করেন।

জন এফ কেনেডি

মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুজব ছড়িয়েছে সম্ভবত জন এফ কেনেডির সময়। তার সময়ে ট্যাবলয়েড পত্রিকার গুজবগুলো সম্পর্কে কম বেশি সবারই জানা আছে। তাকে সব সময়ই নারী ঘেঁষা পুরুষ বলে মানা হতো। ১৯৫৩ সালে

জ্যাকুলিনকে বিয়ে করার আগ পর্যন্ত কেনেডির গার্লফ্রেন্ডের কোনো লাগাম ছিল না। অবশ্য বিয়ের পরও অন্য নারীর প্রতি কেনেডির দৃষ্টির কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি মহিলাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাইতেন এবং তাদের হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণও জানাতেন। তবে তার সময়ে কোনো কেলেঙ্কারির ঘটনা ওইভাবে প্রকাশ না পেলেও তার এই ছোক ছোক স্বভাবের কথা অল্প সময়ের মধ্যেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং সমালোচনার জন্ম দেয়।

ওয়াটারগেট

যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টির সদর দপ্তর ওয়াশিংটনের ওয়াটারগেট নামক স্থানে। ১৯৭২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ওই সদর দপ্তরেই ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারণা, পরিকল্পনা এবং অন্যান্য আলাপ-আলোচনা করা হতো। তত্কালীন ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ছিলেন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। আর ডেমোক্রেটিকদের সব নির্বাচনী পরিকল্পনা নিক্সন ও তার সহযোগিরা আড়ি পেতে শোনা এবং টেপ করে নেওয়ার যে নোংরা পদ্ধতি অবলম্বন করে তা পরবর্তী সময়ে ফাঁস হয়ে যায়। এতে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ শুরু হয়। সবাই এমন কীর্তির জন্য প্রেসিডেন্ট নিক্সনের তীব্র সমালোচনা করেন। এর ফলে ১৯৭৪ সালের ৯ আগস্ট নিক্সন প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ভিয়েতনাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রচেষ্টা এবং রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নসহ অনেক সাফল্যজনক কাজ থাকলেও এই ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি নিক্সনের রাজনৈতিক জীবনের এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে রয়ে যায়।

মনিকাগেট

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও আলোচিত নারী কেলেঙ্কারির ঘটনাটি ঘটে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সময়। উইলিয়াম জেফারসন ক্লিনটন ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪২তম প্রেসিডেন্ট। তিনি বর্তমান ওবামা প্রশাসনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের স্বামী। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯৯৮ সালে মনিকা লিউনস্কির সঙ্গে যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে দারুণ বিপাকে পড়েছিলেন। ১৯৯৫ সালে মনিকা লিউনস্কির বয়স যখন ২২ বছর তখন ক্লিনটনের সঙ্গে তার সম্পর্ক তৈরি হয়। তাদের প্রেম বিশ্বব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি করে। প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে হোয়াইট হাউসের কর্মচারী মনিকা লিউনস্কির রসালো প্রেমকাহিনি জনসমক্ষে প্রকাশিত হওয়ার পর সবাই নড়েচড়ে বসেন। কারণ ওটাই ছিল ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টের এ রকম নারী কেলেঙ্কারির প্রথম ঘটনা। হিলারি ক্লিনটন পুরো ঘটনায় স্বামীর পাশে থেকে স্বামীর মনোবল জোগান। আর পুরো ঘটনাটি মার্কিন ইতিহাসে মনিকাগেট কেলেঙ্কারি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সূত্র : ইত্তেফাক

All-Tour-2-(14.09.15)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *