Skip to content

মালয়েশিয়া পুলিশ

রফিকুল ইসলাম সাগর
ল্যাপটপ হাতে নিয়ে প্রতিদিনের মতো একদিন রাত প্রায় ১১টায় রেস্টুরেন্টে যাওয়ার জন্য বের হই। রেস্টুরেন্টের কাছে যাওয়ার পর সব কিছু কেমন জানি অস্বাভাবিক মনে হলো।

Policeলক্ষ্য করলাম, মানুষগুলোর দৃষ্টিমূল সড়কের দিকে। আমার কৌতূহল হলো, কী হয়েছে জানার। সড়কের প্রতিটি পয়েন্টে দেখলাম দুই-তিনটি করে পুলিশের গাড়ি।

গাড়ির ওপরে লাল-সাদা রঙের বাতি জ্বলনিভু করছে। সড়কের কিছু অংশ চার দিক হলুদ রঙের প্লাস্টিকের ফিতায় ঘেরা, যাতে কালো অরে লেখা POLICE LINE. এই ফিতার এ পাশে উৎসুক জনতা দাঁড়িয়ে আছে। সড়কের একটি স্থানে সাদা রঙের একটি গাড়ি পাশে চার-পাঁচটি পুলিশের গাড়ি ও অসংখ্য পুলিশ দেখা যাচ্ছিল।

জানলাম, সাদা গাড়িটির ভেতরে থাকা দু’জন যাত্রী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। সন্দেহজনকভাবে পুলিশ প্রথমে গাড়িটিতে তল্লাশি চালায়। গাড়িতে পাওয়া যায় একটি অবৈধ পিস্তল।

অবৈধ পিস্তল রাখার দায়ে পুলিশ দু’জন যাত্রীকে সাথে সাথে গুলি করে, এতে তারা নিহত হয়। মালয়েশিয়ার আইনে কারো কাছে অবৈধ পিস্তল পাওয়া গেলে পুলিশ স্পটে অবৈধ পিস্তল বহনকারীকে গুলি করে।

স্থানীয় কারো কারো দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনা সম্পর্কে আরো জেনেছিলাম, সেদিন অন্য একটি এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশ সাদা গাড়িটিকে থামতে সিগনাল দিয়েছিল গাড়ির চালক সিগনাল অমান্য করে গাড়ির গতি বাড়িয়ে পালিয়ে যায়। চেকপোস্টের পুলিশ গাড়ির পেছনে তাড়া করতে থাকে।

ওয়্যারলেস ফোনের মাধ্যমে কন্ট্রোল রুমেও জানিয়ে দেয়।

একপর্যায়ে আম্পাং এলাকায় পুলিশ চার দিক থেকে সাদা গাড়িটিকে ঘিরে ফেলে। গুলি করার পর পুলিশ সড়কের নির্দিষ্ট কিছু অংশ ফিতা বেঁধে সিল করে দেয় এবং তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্পটে আসার জন্য অপো করে।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে পরিদর্শন করে। গাড়ির ভেতরে থাকা লাশ, পিস্তলসহ যা কিছু যেভাবে ছিল সেভাবে পুলিশ ভিডিও ফুটেজ তৈরি করে। এ পুরো দৃশ্য দূর থেকে দেখছিলাম POLICE LINE লেখা ফিতার এ পাশে দাঁড়িয়ে। সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা সংবাদকর্মীরাও দাঁড়িয়ে ছিল সাধারণ জনগণের সাথে ফিতার এ পাশে।

তারা ছবি তুলছিল ও ভিডিওচিত্র ধারণ করছিল দূর থেকে যতটা সম্ভব। ফিতার ভেতরে পুলিশকর্মী ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। সব ফর্মালিটি শেষে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ নিয়ে যায়। পরে পুলিশ ফিতা খুলে ফেললে সড়কে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে সব কিছু স্বাভাবিক হয়।

আসামিকে তাড়া করে চার পাশ থেকে ঘিরে ফেলা, প্রাইভেট কার থেকে নেমে পিস্তল তাক করে পুলিশের দাঁড়িয়ে থাকা, ঘটনাস্থল থেকে সাধারণ জনগণকে সরিয়ে দিয়ে POLICE LINE লেখা ফিতা বেঁধে নিরাপদ দূরত্ব নির্ধারণ করা, হলিউডের সিনেমায় দেখা এসব দৃশ্যের মতোই মনে হচ্ছিল আমার কুয়ালালামপুর পুলিশের এ অপারেশন। পরদিন সকালে এ সংক্রান্ত সংবাদ স্থানীয় প্রতিটি সংবাদপত্রে প্রকাশ হয়। তবে কোথাও লাশের ছবি প্রকাশ হয়নি। কোনো কোনো পত্রিকা নিহতদের ফাইল ফটো প্রকাশ করেছিল। সূত্র : নয়া দিগন্ত

Malaysia-Thailand

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *