পাকিস্তান দলের কোচের চাকরিটাই বোধ হয় ক্রিকেট-বিশ্বে সবচেয়ে কঠিন। নিরাপত্তাশঙ্কা, অস্থিতিশীল ক্রিকেট প্রশাসন আর স্বাধীনচেতা সব ক্রিকেটার—অজস্র চ্যালেঞ্জ। সেই কঠিন দায়িত্ব নিয়েছেন মিকি আর্থার। খোদ পাকিস্তানের অনেকেই পাগল ভাবছে তাঁকে। কিন্তু আর্থার নিজে কী ভাবছেন? পাকনেশন ডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উত্তর দিয়েছেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ—
পাকিস্তানের কোচের দায়িত্ব নেওয়াতে অনেকেই পাগল ভাবছে আপনাকে। কেন আপনি এ দায়িত্ব নিতে আকৃষ্ট হলেন?
মিকি আর্থার: আমার জন্য যে চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে, সেটিই আসলে আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে। দায়িত্বটা খুব কঠিন এবং কঠিন কাজ করতেই ভালো লাগে আমার। চ্যালেঞ্জের দিক থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু হতে পারে না। আমার ধারণা, আমি ভালো কিছু করতে পারব।
আপনি প্রথম পছন্দ ছিলেন না, এটা আপনার জন্য বিব্রতকর নয়?
আর্থার: পাকিস্তান ক্রিকেটকে ঘিরে সব সময় এত গুঞ্জন থাকে, কেউ সঠিকভাবে কিছু বলতে পারে না। কিন্তু পিসিবি বলেছে, আমিই প্রথম ব্যক্তি, যাকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, আমি এটিকেই সত্য ধরে নিয়েছি।
খেলোয়াড়দের মধ্যে শৃঙ্খলা নিয়ে সমস্যা করেন যাঁরা, তাঁদের নিয়ে কিছু ভাবছেন?
আর্থার: আমি এমন পরিবেশ তৈরি করতে চাই, যেখানে খেলোয়াড়েরা ভালো করতে পারে। আর সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা সেখানেই বেশি, যেখানে শৃঙ্খলা আছে, যেখানে মূল্যবোধের মর্যাদা দেওয়া হয়। দলে এমন সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চাই, যেখানে সবাই ভালো করার সুযোগ পাবে, খেলাটা উপভোগ করবে। আমি সবাইকে সঠিক পথ দেখাতে চাই।
দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়াকে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা পাকিস্তানের ক্ষেত্রে কীভাবে কাজে লাগাবেন?
আর্থার: দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আমি সফল সাড়ে পাঁচ বছর কাটিয়েছি। অস্ট্রেলিয়ার হয়েও প্রথম বছরটি ভালো ছিল। দ্বিতীয় বছরে অনেক কিছুই আমার পক্ষে ছিল না, এসব কিছু থেকেই শিক্ষা নিয়েছি আমি। আমি কি ঠিক ওই কাজগুলো আবারও করব? আমি নিশ্চিত নই। কিছু অভিজ্ঞতা তো আছে, যা আপনাকে ভালো কোচ বানাবে, ঠিক যেমন খেলোয়াড়েরা আরও ভালো হয়। ওই ঘটনাগুলো আমাকে অভিজ্ঞ করেছে এবং আশা করি সেগুলো আমাকে আরও ভালো কোচ বানাবে।
আপনি বলেছেন পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ আমাকে মুগ্ধ করেছে। ঠিক কোন দিকটি আপনাকে মুগ্ধ করেছে?
আর্থার: বোলিং আক্রমণ ভালো করার জন্য যে গভীরতা দরকার, পেস ও স্পিন দুটিতেই তা আছে। পাকিস্তান অতীতে অসংখ্য পেসারের জন্ম দিয়েছে, এখনো তা করছে। তাদের বেশ ভালো কিছু স্পিনার আছে। এটি অবশ্যই বাড়তি সুবিধা যেকোনো দলের জন্য।
তিনজন অধিনায়কের সঙ্গে কাজ করতে হবে আপনাকে। এটি কি আপনার কাজ কঠিন করে দেবে?
আর্থার: সত্যিকার অর্থে কাজটি একটু কঠিন। আমরা সেটা ভেবে দেখব। আমি গিয়ে পরিস্থিতি দেখব, ইনজামাম-উল-হকের (প্রধান নির্বাচক) সঙ্গে আলোচনা করব। সামনে এগোনোর জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় সে কী ভাবছে, সেটি আলোচনা করব। আদর্শ হলো তিন সংস্করণে সর্বোচ্চ দুজন অধিনায়ক। যেটি ভালো হবে, সেটাই করব।
আপনার কী ধারণা, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শহীদ আফ্রিদির ভবিষ্যৎ কী?
আর্থার: পাকিস্তান ক্রিকেটে বহুদিন ধরে অবদান রাখছে শহীদ। এ রকম খেলোয়াড়কে আপনি ছুড়ে ফেলে দিতে পারেন না। যদি দেখি দলে তার অবদান রাখার সুযোগ আছে, তবে তাকে অবশ্যই ফিরিয়ে আনা হবে, তবে এটি আলোচনার সময় এখনো আসেনি। সূত্র: পাকপ্যাশন ডটনেট। সৌজন্যে: প্রথম আলো