বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের শস্যভাণ্ডার দিনাজপুরের মিনিকেট চাল নিয়ে একটি সংবাদ আমাদের জন্য ভয়ংকর দুঃসংবাদ নিয়ে এসেছে। সেখানে প্রক্রিয়াজাত করা মিনিকেট নামক একটি চালের ব্যবসা রমরমা।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই চাল খেলে ক্যান্সারসহ জটিল রোগ হতে পারে। ১৯৯৫ সালের দিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ভারতের কৃষকদের মাঝে সে দেশের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন জাতের চিকণ শতাব্দী ধান বীজ বিতরণ করে। মাঠ পর্যায়ে চাষের জন্য কৃষকদেরকে এ ধান বীজের সঙ্গে আরো কিছু কৃষি উপকরণসহ একটি মিনি প্যাকেট দেওয়া হয়, যে প্যাকেটটাকে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বলে ‘মিনি কিটস’। সেখান থেকেই সেই ধানের নাম হয়ে যায় ‘মিনিকেট’। আবার অনেকে বলেন, মিনি প্যাকেটে করে দেয়ায় ভারতীয় কৃষকদের কাছে এ ধান শেষ পর্যন্ত মিনিকিট বলে পরিচিতি লাভ করে।
এ চালের প্রক্রিয়াটা এরকম
অটোরাইস মিলে অতি বেগুনি রশ্মির ডিজিটাল সেন্সর প্ল্যান্টে যেকোন ধান থেকে প্রথমে কালো, ময়লা ও পাথর সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর মোটা ধান চলে যায় অটোমিলের বয়লার ইউনিটে। সেখানে পর্যায়ক্রমে ৫টি ধাপ পার হবার পর লাল কিংবা মোটা চাল সাদা রংয়ের আকার ধারণ করে। এরপর আসে পলিশিং মেশিনে। অতি সূক্ষ্ম এই মেশিনে মোটা চালের চারপাশ কেটে চালটিকে চিকণ করা হয়। এরপর সেটি আবারও পলিশ ও স্টিম দিয়ে চকচকে শক্ত আকার দেয়া হয়। শেষে সেটি হয়ে যায় সেই কথিত এবং আকর্ষণীয় ‘মিনিকেট চাল’। আর চকচকে করার জন্য দেয়া হয় বিভিন্ন কেমিক্যাল যা মানব দেহে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘মিনিকেট’ নামে ধানের কোন জাত নেই। বাংলাদেশ কিংবা ভারত-কোন দেশেই মিনিকেট নামে ধানের কোন জাতের অস্তিত্ব মিলেনি এখনও। মোটা চাল মেশিনে চিকণ করার কারণে চালের পুষ্টিগুণ কমে যায়।
মানবদেহে ক্যান্সারের ঝুঁকি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ‘মিনিকেট’ নামে বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত কোন জাতের ধান নেই। বিআর ২৮, কল্যাণী, স্বর্ণা, গুটিস্বর্ণা, লাল স্বর্ণা আইআর-৫০, জাম্বু ও কাজল লতা জাতের ধান ছেঁটে মিনিকেট বলে বস্তায় ভরে বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে এ চালের ব্যাপক চাহিদার জন্য এ ‘মিনিকেট’ নামে চালাচ্ছে এইসব চাল। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলের কেন উদ্যোগ না থাকায় সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য চরম ঝুঁকির মধ্যে আছে। সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে আমরা স্বাস্থ্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ সকল সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সূত্র: চ্যানেল আই