:: আফসানা সুমী ::
কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ বাংলাদেশের একটি সুদীর্ঘ সড়ক। আমাদের অপূর্ব সুন্দর কক্সবাজার বিচ ছুঁয়ে এই সড়ক চলে গেছে টেকনাফ পর্যন্ত। লং ড্রাইভে যাওয়ার জন্য যেমন উপযুক্ত এই সড়ক তেমনি সড়কের পাশের বিচে ক্যাম্পিং এ যাওয়াও কিন্তু নিরাপদ। খুব একটা পরিচিত নয় বলে এই বিচগুলো বেশ নিরিবিলি আর এখানকার মানুষেরা অনেক অতিথিপরায়ণ। কিন্তু এত দীর্ঘপথ আর এতগুলো বিচ কোথায় যে ক্যাম্পিং করা ঠিক হবে এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয় অনেক ভ্রমণদলকেই। এজন্য বেছে নিতে পারেন শামলাপুর বিচ।
শামলাপুর কক্সবাজার কলাতলী বিচ থেকে ৪৫/৪৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ব্যস্ত বিচ থেকে দূরে হওয়ায় নির্জনতার স্বাদ পাবেন পুরোটাই। আবার কাছেই লোকালয় থাকায় পাবেন কিছু সুবিধাও। আরও যে সুবিধাগুলো পাবেন তা হলো-
১। শামলাপুর বিচের কাছেই আছে বাজার। খাবার দূর থেকে বহন করে আনতে হবে না। হেঁটে অথবা গাড়িতে যেভাবেই আসুন না কেন এখান থেকে কেনাকাটা করে সব রান্না-বান্না করতে পারবেন।
২। ক্যাম্পিং এ নিজেরা রান্না করা অনেক মজার। তবে অনেক সময় সেটা একটা বাড়তি কাজ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে একটা জায়গায় যাওয়ার পর শরীর ভীষণ ক্লান্ত লাগে। তখন আর রান্না করতে ইচ্ছে করে না। শামলাপুর বিচের কাছেই আছে ছোট্ট একটি খাবার হোটেল। এখানে আগে থেকে বলে রাখলেই ওরা খাবার রান্না করে রাখবে। অর্থাৎ আপনার দল যদি সন্ধ্যায় পৌঁছে তখনি তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানিয়ে দিন রাতে কতজন খাবেন আর কি খাবেন। ব্যাস, বিচে বসেই রাতের খাবার খেতে পারবেন।
৩। হোটেল যেহেতু আছে তাই ওয়াশরুমের চিন্তাটা আর নেই। হোটেলে চাইলেই তারা চাবি দিয়ে যাবে।
৪। নলকূপ আছে। গোসল করতে পারবেন।
৫। যদি নামায পড়তে চান সেটিও পারবেন, কারণ খুব কাছাকাছি একটি মসজিদ আছে।
৬। নিরাপত্তাজণিত কোনো সমস্যা নেই। এলাকাবাসীরা খুবই আন্তরিক।
সবচেয়ে জরুরি দিকটি হলো, ক্যাম্পিং এ আমরা যাই-ই একান্ত নির্জন পরিবেশে কিছু সময় কাটাতে। এতসব সুবিধা কাছাকাছি থাকা স্বত্বেও শামলাপুর অনেক নিরিবিলি, অনেক সুন্দর। এখান থেকে মেরিন ড্রাইভ সড়ক উপভোগ করা যায় পরিপূর্ণরূপে। ইনানীর পর এদিকে লোক সমাগম কম বলে রাস্তাও থাকে নিরিবিলি। বিচ আর সড়ক উভয়ই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আর সুন্দর। তাই এখানে থাকার আনন্দটাও অন্য সব জায়গার তুলনায় বেশি।
কিভাবে যাবেন
কলাতলী মোড় থেকে জীপে যাওয়া যায় শামলাপুর বিচ। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। আপনি যদি সিএনজিতে যেতে চান সেক্ষেত্রে ভাড়া জনপ্রতি ১০০ টাকা। আর আপনি যদি ট্রেকিং করে যেতে চান সেক্ষেত্রে তো কোনো কথাই নেই। কোনো গাইড লাগবে না। পথ চিনিয়ে দিতে এলাকাবাসীই যথেষ্ট।
শামলাপুরের আরেকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো এটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বেশ দূরে। তাই রোহিঙ্গাদের উৎপাতের কোনো আশংকা নেই। এখানে ক্যাম্পিং করতে কোনো পূর্বানুমতির প্রয়োজন নেই। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশদের জানিয়ে যেতে পারেন। এতে যে কোনো সমস্যায় দ্রুত সহযোগিতা পাবেন।
বিদেশিদের জন্য জরুরি পরামর্শ
কক্সবাজার-সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে যাওয়ার সময় অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে রাখবেন। সৌজন্যে : প্রিয়.কম