ভূমধ্যসাগরে ছবির মতো ছোট্ট একটি দ্বীপ ইবিজা। অসাধারণ সৌন্দর্য আর মুখর নৈশজীবনের জন্য গোটা বিশ্বের পর্যটকদের কাছেই দারুণ আকর্ষণীয় এই দ্বীপটি। আসছে মৌসুমে মাঠে নামার আগে সব ক্লান্তি সাগরের নীল জলে ধুয়ে ফেলতে ইবিজাকেই বেছে নিয়েছেন লিওনেল মেসি। সঙ্গী আন্তোনেলা রোকুজ্জো এবং দুই ছেলে থিয়াগো ও মাতেওসহ কাছের মানুষদের নিয়ে মেতে উঠেছেন জলকেলিতে।
নীল সাগরের বুকে রাজহাঁসের মতোই ভাসছে মেসির ইয়ট। কখনো ছেলেদের সঙ্গে মেতে উঠছেন খেলায়, কখনো আন্তোনেলার সঙ্গে একান্ত সময় কাটাচ্ছেন তো কখনো জেট স্কিতে করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভূমধ্যসাগরের নীল জলে। ছুটির দিনগুলোতে এভাবেই স্নায়ুকে শীতল করছেন মেসি, ভুলে যেতে চাইছেন পেছনের দুঃসহ সব স্মৃতি। কর ফাঁকির মামলায় ২১ মাসের স্থগিত কারাদণ্ডাদেশ, কোপা আমেরিকার ফাইনালে টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করা এবং এর প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় দল থেকে অবসর; কিছুই যেন নেই ইবিজার মোহনীয় পরিবেশ। স্রেফ ছুটি, অখণ্ড অবসর।
মেসি যখন সুনীল সাগরের নীল জলে সমুদ্রবিলাসে ব্যস্ত, তখন আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাঁর ফেরা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই। বিভিন্ন গণমাধ্যমে মেসির কাছের সূত্রের বরাত দিয়ে তাঁর জাতীয় দলে ফেরার ইঙ্গিতের খবর প্রকাশ পেলেও স্পষ্ট কোনো ঘোষণা এখনো আসেনি।
আর্জেন্টিনাকে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ জেতানো কোচ লুই মেনোত্তি মনে করেন, অবসর ভেঙে ফিরে আসবেন এই ফুটবল জাদুকর, ‘মেসির যা বলার সে তো বলেই দিয়েছে। এরপর তো কোনো মত দেওয়া কঠিন। এমন একটা সময় আসে যখন জাতীয় দলে খেলার প্রেরণাটা নষ্ট হয়ে যায়, এটা হাজারো কারণে হতে পারে যা সব আমি বলতে পারব না। তার সঙ্গে কথা বলে বুঝতে হবে। আমার বিশ্বাস, তাকে একটা কঠিন সময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল। কোপা আমেরিকাও তারা জিততে পারেনি। তবে আমার বিশ্বাস, মেসি তার মত পাল্টাবে।’
মেনোত্তি মনে করেন, ব্যবসায়ীরা ফুটবল কর্মকর্তা বনে যাওয়াতেই ছন্দপতনটা হচ্ছে, ‘আমি যখন থেকে ফুটবল খেলি, তখন দেখেছি যারা ক্লাবকে ভালোবাসত ও সাহায্য করতে চাইত, তারাই প্রেসিডেন্ট হতো। এখন তো সবই ব্যবসার দুনিয়া। আমি কোনো তুলনায় যেতে চাইছি না, শুধু এটা বলতে চাই; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন আল কাপোনকে জেলে ভরল তার পরই সমস্যা শুরু হলো। মাফিয়া জগতে তার শূন্যস্থানে বসার জন্য সবাই চেষ্টা করছিল কিন্তু কেউই পারছিল না। আগে সব কিছুই ভালো ফলের মাধ্যমে স্বাভাবিক হয়েছে। ম্যারাডোনার মতো লোকের বেলাতেও তাই হয়েছে। এই সংকটের একমাত্র সমাধান হতে পারত কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়।’ কিন্তু চিলির কাছে হেরে তা না হওয়ায় সংকট যে আরো গুরুতর, মেনোত্তির কথায় তারই ইঙ্গিত। সূত্র: গোল ডটকম, সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ