Skip to content

যাই মধু আহরণে

ফরিদী নুমান
মৌমাছি, মৌমাছি
কোথা যাও নাচি নাচি
দাঁড়াও না একবার ভাই।
ওই ফুল ফোটে বনে
যাই মধু আহরণে
দাঁড়াবার সময় তো নাই।…

Sunderban

আমাদেরও দাঁড়াবার সময় ছিল না। ১ এপ্রিল সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনীর জঙ্গলে শুরু হবে মধু সংগ্রহ উৎসব। সুন্দরবনে গ্রীষ্মের শুরুতে গাছে গাছে ফুটতে শুরু করে হরেক রকম ফুল। খলিশা, সুন্দরী, বাইন, পশুর, গেওয়া, কেওড়া, হেতাল, কাঁকড়া, গর্জন, ধুন্দল আরো কত কী! ফুলের ম-ম গন্ধ বনের আকাশে-বাতাসে। মৌমাছিরা চাক বাঁধে গাছে গাছে। ফুল থেকে মধু নিয়ে জমায় এসব চাকে। আর প্রতিবছর পয়লা এপ্রিল থেকে শুরু হয় মৌয়ালদের মধু সংগ্রহ অভিযান। সুন্দরবন ভ্রমণের সঙ্গে মৌয়ালদের এ মধু সংগ্রহ করার কলাকৌশল দেখতেই আমাদের এবারের যাত্রা।

৩০ মার্চ ঢাকার কল্যাণপুর থেকে বিকালে রওনা হয়ে রাত ১১টায় আমরা পৌঁছে গেলাম খুলনার রূপসা ঘাটে। সেখানে জাহাজ ‘ভেলা’ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। কেবিন বরাদ্দের পর পরই জাহাজটি ছুটে চলল সুন্দরবনের পথে। রাতের রূপসাকে স্বপ্নপুরীর সঙ্গে তুলনা করলে কম হয়ে যাবে। আকাশে এক ফালি অপূর্ণ চাঁদ ঝুলছে, কদিন পরেই পূর্ণিমা। তাতে কী! সেই অপূর্ণ চাঁদের স্নিগ্ধ আলো রূপসা বন্দর আর তার আশপাশকে দুগ্ধস্নাত করে রেখেছে। জাহাজের ছাদে আমাদের অনির্ধারিত আড্ডায় কখন যে গভীর রাত গড়িয়ে গেছে টের পাইনি।

৩১ মার্চ সকালে যখন ঘুম ভাঙলো সূর্যমামা তখন গ্রামের দিগন্তরেখার একটু উপরে। আমাদের লঞ্চ নোঙর করা আছে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ লঞ্চঘাট বরাবর নদীর মাঝখানে। সকালের মিঠেরোদে কর্মজীবী মানুষরা যাচ্ছে কাজের খোঁজে। নদীতে নৌকায় জেলেরা আর ডাঙ্গায় কৃষক বা অন্যরা। নাশতাপর্ব শেষ হতে না হতেই আমাদের জাহাজের নোঙর তুলে দেয়া হলো।

Sunderban2

দুপুর থেকেই নদীতে ভাটার আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। পানি বেশি কমে যাওয়ায় ২টার দিকে জাহাজ আটকে গেল কলাগাছিয়ায়। জোয়ারের প্রতীক্ষা ছাড়া এখন উপায় নেই। নদীর পানি স্বচ্ছ টলটলে। আমরা নেমে পড়লাম। ভাটার কারণে এখানে সর্বোচ্চ বুক সমান পানি। পাড়ে হাঁটু সমান কাদা। আমরা জলকাদায় হুটোপুটি করলাম খানিকক্ষণ। আমাদের সঙ্গে ছিল ডেনমার্কের এক পরিবার, কাদার মধ্যে হল্লা করতে দেখে তারাও নেমে পড়ল। সুন্দরবনের প্রতিটি নদীই মানুষের জন্য বিপজ্জনক। কারণ প্রত্যেক নদীতেই কুমির আছে। কিন্তু সেদিকে কারো ভ্রুক্ষেপ ছিল না।

এরপর লাঞ্চপর্ব শেষ করে সাড়ে ৩টার দিকে ইঞ্জিন বোটে রওনা হলাম বুড়িগোয়ালিনী। প্রায় আধাঘণ্টা পর বনবিভাগের ঘাটে আমরা নামলাম। বুড়িগোয়ালিনী নদীর একপাশে লোকালয়ের শুরু। অপর পাশেই সুন্দরবন। পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী শ্যামনগর উপজেলার নীলডুমুর। ছোটখাটো গঞ্জের মতো পরিবেশ। বাজার হাট, পাকা সড়ক, বিদ্যুৎ প্রায় সবই আছে এখানে।

সুন্দরবনের নানা উৎসকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এ লোকালয়। এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকা এ বনকে ঘিরে। এরা সাহস আর সংগ্রামের এক একটি জীবন্ত প্রতীক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বনের বাঘ, সাপ কুমিরের সাথে লড়াই করে এরা টিকে আছে শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে। নীলডুমুরে বনজীবীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে মধু সংগ্রাহক বা মৌয়াল। যুগ যুগ ধরে মৌয়ালরা নিজস্ব পুরনো পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করেন। সুন্দরবনে প্রতিবছর পয়লা এপ্রিল থেকে শুরু হয় মৌয়ালদের মধু সংগ্রহ অভিযান। বন অফিস থেকে অনুমতি নিয়ে শত শত মৌয়াল জঙ্গলে ঢুকে পড়েন মধু সংগ্রহ করতে।

আমরা নীলডুমুরের এখানকার প্রবীণতম মৌয়াল ঢালী চাচার বাড়িতে গেলাম। ঢালী চাচার নেতৃত্বেই সকালে একদল মৌয়াল আমাদের সাথে যাবে মধু সংগ্রহে। ঢালী চাচার বাড়ি থেকে বের হয়ে এলাকার রাস্তা, বাড়ি-ঘর, বাঁধের ওপর দিয়ে ঘুরে ও এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে সন্ধ্যা পার করলাম। নদীতে জোয়ার আসায় সন্ধ্যায় আমাদের আটকে পড়া জাহাজকে নীলডুমুর ঘাটের কাছেই নোঙর করা হলো। সন্ধ্যার পর মশা আর জংলি পোকার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জাহাজে ফিরে কেবিনের দরজা-জানালা বন্ধ করে বসে থাকার উপায় ছিল না।

মধু সংগ্রহে বনে যাত্রার আগের দিন মৌয়ালরা প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করেন বুড়িগোয়ালিনী বাজারে। পয়লা এপ্রিল যাত্রা শুরুর আগে মৌয়ালদের বনের রাজস্ব প্রদানসহ কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে নিতে হয়। যাত্রার আগে সবাই পরিবার-পরিজন থেকে বিদায় নেন। কারো কোনো ঋণ থাকলে সেটা পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেন। এ যাত্রায় সবার মধ্যেই না ফেরার একটা শঙ্কা কাজ করলেও পেশার তাগিদে সবাই-ই ছোটেন বনের উদ্দেশে। যাত্রা শুরুর আগে একটি প্রার্থনা সভার মাধ্যমে মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ শেষে নিরাপদে ফিরে আসার আকুতি জানান প্রভুর কাছে। মুসলিমরা করেন মিলাদ, হিন্দুরা বন বিবির পূজা। প্রার্থনা শেষে প্রত্যেক মৌয়ালের হাতে বেঁধে দেওয়া হয় লাল কাপড়। তাদের বিশ্বাস এ কাপড় বিপদ-আপদ বিশেষ করে বনের রাজার হাত থেকে রক্ষা করবে তাদের। সবশেষে বন কর্মকর্তা আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়লে মৌয়ালরা তাদের নৌকা নিয়ে ছোটেন বনের উদ্দেশে।

১ এপ্রিল খুব সকালেই ঘুম থেকে উঠলাম। নীলডুমুরের ঘাটসংলগ্ন নদীতে মানুষের ব্যস্ততা বাড়ছে। মৌয়ালরা প্রস্তুতি নিচ্ছে নৌকা নিয়ে। ঢালী চাচা জনা আষ্টেক মৌয়ালের দল নিয়ে তার নৌকা বেঁধে দিলেন আমাদের জাহাজের সঙ্গে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের জাহাজ ছুটে চলল কলাগাছির পথে। নাশতা পর্ব শেষ করেই সবাই মধু সংগ্রহ অভিযানে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত হলাম। আয়োজকদের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা বিশেষ ধরনের মাস্ক, জুতা, গ্লাভস পরে নিজেদের নিরাপত্তা ঠিকঠাক করে নিলাম।

সকাল ৯টায় ঢালী চাচার তত্ত্বাবধানে আমরা বনের মধ্যে ঢুকলাম। কলাগাছিয়ার গরান বন এটি। খুবই ঘন। বনের মধ্যে কোথাও কোথাও সূর্যের আলো ঠিকমতো ঢুকতে পারে না। সুন্দরবনের বুড়িগোয়ালিনীর এ এলাকা বাঘের জন্য বিখ্যাত। মৌয়ালদের একজন কিছুক্ষণ পর পর পটকা ফোটাচ্ছেন। এতে হয়তো বাঘমামা আমাদের খানিক সাইড দেবেন। বনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া মৌয়ালরা বিভিন্নরকম আওয়াজের মাধ্যমে সবার সাথে যোগাযোগ রাখছে। হঠাৎ ‘আল্লা আল্লা বলোরে’ চিৎকার শুনলাম। এর অর্থ মৌচাক পাওয়া গেছে। আমি এমন ঘন বনের মধ্যেও মোটামুটি ছুটতে পারি, সবার আগেই আমি মৌচাকটির কাছে পৌঁছে গেলাম। চুপচাপ বসে ছবি তুললাম। কয়েক মিনিট পরে অন্যরা এলো। মৌয়ালরা তখন হেতাল আর টাইগার ফার্নের কাঁচাপাতা দিয়ে ‘কারু’ তৈরিতে ব্যস্ত। এ কারুর ধোঁয়াই মৌমাছিদের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় অস্ত্র। চাক ভাঙার সিদ্ধান্তটি নেন দলনেতা ঢালী চাচা, মৌয়ালরা যাকে বলেন বহরদার। বহরদার আগে পরখ করে নেন চাকটি আগে কাটা কিনা। কারণ একবার কাটা চাক দ্বিতীয়বার কাটা হয় না, সে চাকের মৌমাছিরা খুব বেশি হিং¯্র হয়। একজন মৌয়ালের হাতে দা, আরেকজনের হাতে ধামা, কেউ-কেউ কারুতে আগুন দিয়ে ধোঁয়া তৈরি করে চাকটি কাটলেন। প্রথম চাকটি মাত্র চার ফুট উপরে থেকে প্রায় মাটি পর্যন্ত ছিল। অভিজ্ঞ মৌয়ালরা কখনো পুরো চাকটি কাটেন না। শুধু মধুর অংশটি কাটেন। আমরা মৌচাক কাটার দৃশ্যগুলো ক্যামেরায় ধারণ করলাম। এরপর দ্বিতীয় চাকটিও নিরাপদেই কাটা হলো একই পদ্ধতিতে। দ্বিতীয় চাকটি অপেক্ষাকৃত ছোট ছিল।

কিছুক্ষণ পর তৃতীয় আরেকটি চাকের সন্ধান পাওয়া গেল। ছবি শিকারিরা আগের দুটিতে কোনোরকম সমস্যায় না পড়াতে মনে হয় একটু সাহসী হয়ে উঠেছিল। আর নিরাপত্তার জন্য চুপচাপ থাকার পরামর্শগুলো ভুলে গিয়েছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে চাকটিও মনে হচ্ছে কদিন আগে একবার কাটা হয়েছিল। তৃতীয় চাকটির ছবি তুলতে গিয়ে ক্ষিপ্ত মৌমাছির আক্রমণের শিকার হয় টিমের সবাই।

আমাদের টিমের শামীম প্রথম আক্রমণের শিকার হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেন। আমি পেছনে দাঁড়িয়ে দেখলাম তার দুই হাত মৌমাছি ঘিরে ধরেছে। এরপর আদনান, মামুন ভাই থেকে শুরু করে সবাই। আমার হাতের ওপর অনেক মৌমাছি হুল ফোটানোর চেষ্টা করছে, তার মধ্যে একটা কামড়ে ধরেছে। প্রচণ্ড ব্যথায় বুঝলাম আমার ঘাড়েও একটা মৌমাছি কামড়াচ্ছে। ব্যথা হজমের চেষ্টা করছিলাম নীরবে, কারণ চেঁচামেচি করলে ওরা পেয়ে বসবে।

Sunderban3

ইতোমধ্যে মৌয়ালরা কারু ধরিয়ে ফেলেছে। আমি হাত দুটো কারুর ধোঁয়ার মধ্যে ঢুকিয়ে দিলাম। সবাই দ্রুত নৌকায় ফিরতে বনের মধ্য দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চলতে লাগলাম। মৌমাছিও আমাদের পিছু নিয়েছে। নৌকায় এসেও কামড়াতে লাগল। এখানে এসে দেখলাম একজন বনরক্ষীকে আচ্ছামতো কামড়াচ্ছে। বেচারার এক হাতে কারু অন্যহাতে রাইফেল। কিন্তু মৌমাছি তাকে ছাড়ছে না। নৌকা সরাসরি জাহাজে না গিয়ে খানিক পথ ঘুরে জাহাজে ভিড়ল। কারণ মৌমাছিদের থেকে খানিক দূরে যাওয়ার চেষ্টা। পরিবেশ খানিক শান্ত হলে আমরা মৌচাক কেটে-কেটে সরাসরি মধু চুষে খেতে লাগলাম। চুইংগামের মতো মোমসহ মধু খাওয়া- এমন অনুভূতি এবারই প্রথম।

জাহাজে উঠে কে কতটুকু কামড় খেয়েছে বোঝার চেষ্টা করলাম। আমাদের সঙ্গে থাকা চিত্রাভিনেতা ও মডেল আদনান, ফটোগ্রাফার শামীম ভাই কম করে হলেও শ’খানেক কামড় খেয়েছে। বিদেশি পর্যটক ডেনমার্কের বেচারাও একই রকম। মামুন ভাইয়ের দুই হাত ফুলে গেছে। আমি মাত্র দুটা কামড় খেয়ে রক্ষা পেয়েছি। লাঞ্চের পর বিকালে আবারো বনে ঢুকলাম মৌচাক কাটার জন্য। আবারো মৌমাছির আক্রমণের শিকার হলাম। তবে সকালের তুলনায় কম কামড়াতে পেরেছে মৌমাছি। আগে থেকেই কারু জ্বালিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম।

বিকালে আমাদের জাহাজ দোবেকী বন অফিসের কাছে নোঙর করল। রাতে এখানেই থাকা হবে।

২ এপ্রিল খুব ভোরে উঠলাম। আমাদের সফরের টিমপ্রধান রিয়াজ ভাই জানিয়েছেন এখানকার তালবেড়ী খালে বোটট্রিপ হবে। বনের মাঝে নৌকা নিয়ে ঘণ্টাখানেক ঘুরে জাহাজে ফিরে এলাম। এরপর জাহাজ নিয়ে আমরা এলাম ভোমরাখালী বনে। বনের মধ্যে জোয়ারের পানি থই-থই করছে। আমাদের আগেই মৌয়ালরা নৌকা নিয়ে বনের মধ্যে ঢুকল। সিদ্ধান্ত হলো মৌচাক পেলে আমাদের জানালে সবাই যাব। প্রায় আধাঘণ্টা পর মৌয়ালরা আওয়াজ দিলে আমরা বনের কাছে গেলাম। আমাদের বোট তুলনামূলক বড় হওয়ায় এটা নিয়ে বনে ঢোকা যাবে না। সিদ্ধান্ত হলো মৌয়ালদের নৌকা করে ভেতরে ঢুকব। জলমগ্ন বনের ভেতর দিয়ে ধীরে ধীরে চলছে আমাদের নৌকা। এক জায়গায় হাঁটুসমান পানির মধ্যেই সবাইকে নামতে হলো। মৌয়ালরা তখন কারু তৈরি করছে। খুবই সন্তর্পণে পানি আর বন মাড়িয়ে ভেতরে ঢুকলাম। অবশেষে মৌচাকের কাছে গিয়ে চাকটি খুব নিরাপদেই কাটা হলো। দুপুরের পর আমাদের জাহাজ নোঙর করল বন বিভাগের কলাগাছিয়া টহল ফাঁড়ি ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের কাছে। এটা নতুন পর্যটন কেন্দ্র। বন অফিস ছাড়াও বনের ভেতর দিয়ে কাঠের ট্রেইল ধরে চলাচলের সুন্দর পথ তৈরি করা হয়েছে এখানে। বনের বানর, শূকর, সাপ, পাখি দেখার চমৎকার আয়োজন এটি।

বিকেলে প্রস্থানের পথ ধরল আমাদের জাহাজ। মালঞ্চ নদী দিয়ে আবার কলাগাছিয়া হয়ে নীলডুমুরের পাড়ে জাহাজ সন্ধ্যায় পৌঁছল। এখানকার বাজারে আবার খানিক সময় কাটালাম। রাতেই ঢালী চাচা তার দলবল নিয়ে ফিরে গেলেন। আমাদের জাহাজ ছুটে চলল রূপসার পথে। সূত্র : দেশের খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *