দাসত্বের ইতিহাস সংরক্ষণ করে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের লুসিয়ানায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি জাদুঘর। হু্ইটনি প্লান্টেশন নামের এই জাদুঘরটি যেখানে গড়ে তোলা হয়েছে, সেই জায়গাটি একসময় ব্যবহৃত হতো কৃষি খামার হিসেবে। সেখানে কাজ করত হাজারো দাস। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্ধকার সেই অধ্যায় সম্বন্ধে জানতে নিয়মিত দর্শনার্থীরা ছুটে যান জাদুঘরটিতে।
বিশাল এই খামারটিতে একসময় কাজ করত এক লাখেরও বেশি দাস। এর প্রতি ইঞ্চি জমিতে লেখা রয়েছে সেই সব কালো দাসদের দুঃখ-দুর্দশার ইতিহাস।
সেই ইতিহাস জাগ্রত রাখতেই গড়ে তোলা হয়েছে এই জাদুঘর। উনিশশো নব্বই সালে একটি কেমিক্যাল কোম্পানির কাছ থেকে খামারটি কিনে নেন জন কামিংস নামের এক আইনজীবী। এরপর, নিজের খরচে তিনি গড়ে তোলেন এই জাদুঘর।
জন কামিংস বলেন, “আমরা চেয়েছি এখানে মানবিকতার স্পন্দন জাগ্রত হোক। যদিও এখানে কারো ব্যক্তিগত অপরাধবোধ নেই, কিন্তু আমাদের সবারই দুঃখবোধ থাকার কারণ রয়েছে। এখানে যা ঘটেছিল তা ছিল ভয়াবহ”।
এখানে আসা দর্শনার্থীদের ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য রয়েছে জাদুঘরের নিজস্ব গাইড। ঐতিহাসিক বিভিন্ন নিদর্শন দেখানোর পাশাপাশি তারা বর্ণনা করেন তার ইতিহাসও।
এমন না যে এটা খুবই আবেগপূর্ণভাবে বলা হয়। এর পেছনে কোন আবহ সঙ্গীতও বাজানো হয় না। বরং নির্মোহভাবে বর্ণনা করা হয় সেই ইতিহাস।
প্রায় দেড়শো বছর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে উঠে গেছে দাসত্ব প্রথা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে সাদা-কালো বিভেদ এখনও পুরোপুরি ঘোচেনি। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ নিহতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে আবারও উঠে এসেছে বর্ণবাদের বিষয়টি। সমাজ থেকে বর্ণবাদী মনোভাব দূর করতে এই জাদুঘর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। সৌজন্যে : ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি