মিথি হক
শুনলে মনে হবে যেন কোনো সিনেমার গল্প। কিন্তু জাপানের প্রত্যন্ত এক উপত্যকার মাঝের নাগোরো গ্রামে রয়েছে গল্পের চেয়েও অদ্ভুত কিছু। বছরের পর বছর ধরে সেখানকার মৃত আর হারানো মানুষের স্মরণে বা
নানো হচ্ছে বড় বড় সব পুতুল। সেই পুতুলগুলো সংখ্যায় অনেক আগেই ছাড়িয়ে গেছে গ্রামের জীবিত মানুষদের। এখন একজন জীবিত মানুষের তুলনায় সেখানে রয়েছে ১০টি পুতুল!
ঘটনার শুরু হয় তখন, যখন নাগোরো গ্রামের বাসিন্দা আয়ানো সুকিমি ১০ বছর পর গ্রামে ফিরে এসে দেখেন, তাঁর বেশির ভাগ আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব আর প্রতিবেশী হয় মারা গেছেন, নয়তো গ্রাম ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গেছেন। গ্রামের জনসংখ্যা কোনোমতে ডজনখানেকের মতো। রীতিমতো খাঁ খাঁ করতে থাকা গ্রামটি দেখে কেমন যেন ভীতিকর বলেই মনে হতো।
আয়ানো নানা ধরনের জিনিস বানানোয় পটু একজন শিল্পী। একদিন নিজের বাগানের জন্য এক কাকতাড়ুয়া বানানোর সময় সেটিকে নিজের বাবার আদলে বানানোর চিন্তা মাথায় আসে তাঁর। পরের ১০ বছর আয়ানো বানিয়েছেন ৩৫০টিরও বেশি পুতুল। মানুষের আদলে বানানো পুতুলগুলো আবার এমনভাবে রাখা, দেখলে মনে হবে যেন রোজকার কাজে বের হয়েছে তারা। কেউ বা বাগানে কাজ করছে, আবার কেউ হয়তো বড়শি দিয়ে মাছ ধরছে। বসে আছে, বই পড়ছে কিংবা রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছে-এমন পুতুলও চোখে পড়বে। এমনকি একটা খালি পড়ে থাকা স্কুলও সাজানো হয়েছে পুতুল শিক্ষার্থী আর শিক্ষকদের দিয়ে। দেখলে মনে হবে, যেন ভারি মনোযোগ দিয়ে সব ছাত্রছাত্রী বসে ক্লাস করছে।
আয়ানোর বানানো মানুষরূপী এসব পুতুলের জন্য জাপানের ছোট্ট গ্রাম নাগোরো হয়ে উঠেছে বিখ্যাত। ‘ভ্যালি অব দ্য ডলস’ নামে এখন সবাই চেনে এ গ্রাম। আর গ্রামের এসব পুতুল আর তাদের নিত্যদিনকার ছবি নিয়ে বানানো হয়েছে তথ্যচিত্রও। সূত্র : কালের কণ্ঠ