Skip to content

যে জায়গাগুলো অবশ্যই দেখা চাই…

জীবন নশ্বর। তাই মৃত্যুর আগেই দু’চোখ ভরে দেখে নিতে হবে সুন্দর এ পৃথিবীকে, যতটা সম্ভব। বিশ্বের যে কয়েকটি জায়গা পর্যটকদের সবচেয়ে হাতছানি দিয়ে ডাকে, সম্প্রতি তারই একটি তালিকা তৈরি করেছে ‘লোনলি প্ল্যানেট’।

Lonely-Planet

আংকোর ভাট, কম্বোডিয়া
বিশ্বের অন্যতম ভ্রমণ-পত্রিকা ‘লোনলি প্ল্যানেট’ তালিকার প্রথম স্থানে রেখেছে কাম্বোডিয়ার উত্তরে সিয়েম রিপ শহরের আংকোর ভাটকে। দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত এই মন্দির বা মন্দিরগুচ্ছটি আজ একটি ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ বা বিশ্ব ঐতিহ্য। আদতে বিষ্ণু মন্দির হলেও, হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছে এখানে। চারিদিকে পরিখা বিশিষ্ট বিশাল এই স্থাপনার অসাধারণ ভাস্কর্য তাই আজও আপনাকে চমকে দেবে, জাগাবে শিহরন।

Lonely-Planet2

গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ, অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল বরাবর প্রায় ১,৮৬০ মাইল জুড়ে বিস্তৃত এই গ্রেট বেরিয়ার রিফ। এটি একাধারে একটি ন্যাশনাল পার্ক এবং হেরিটেজ সাইট। এখানে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রবাল প্রাচীর, হাজারো রকমের বাহারি মাছ আর সাদা তিমিসহ অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী।

Lonely-Planet3

মাচু পিচু, পেরু
পেরুর ভুবন বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মাচু পিচু পঞ্চদশ শতাব্দীর ইনকা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ধ্বংসাবশেষ। দক্ষিণ অ্যামেরিকার আদিবাসী মানুষদের ভাষা কেচুয়ায় মাচু পিচুর অর্থ হলো প্রাচীন পর্বতচূড়া। ইনকা রাজা ইউপানকি ২৩৬০ মিটার উচ্চতায় মাচু পিচুর ওপর তৈরি করান এক পূর্ণাঙ্গ শহর। আর তারই ধ্বংসাবশেষ দেখতে এখনও সেখানে ছুটে যান দূর দূরান্তের মানুষ। প্রায় তিন হাজার সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠেন তাঁরা।

Lonely-Planet4

গ্রেট ওয়াল অফ চায়না, চীন
কথায় আছে, মহাশূন্য থেকেও দেখা যায় চীনের প্রাচীর বা গ্রেট ওয়াল অফ চায়না। তবে পৃথিবীর এই দীর্ঘতম প্রাচীর দেখে অবাক হননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বোধহয় কঠিন। ইঁট আর পাথর দিয়ে তৈরি এই প্রাচীর দৈর্ঘ্যে ২,৬৯৫ কিলোমিটার, উচ্চতায় ৪.৫৭ থেকে ৯.২ মিটার এবং প্রস্থে ৯.৭৫ মিটার। শোনা যায়, মাঞ্চুরিয়া আর মঙ্গোলিয়ার যাযাবর দস্যুদের হাত থেকে চীনকে রক্ষা করতেই তৈরি হয়েছিল এই গ্রেট ওয়াল অফ চায়না।

Lonely-Planet5

তাজমহল, ভারত
সাদা ধবধবে মার্বেল, আর তার ওপর রুবি, ফিরোজা, কোরাল, ক্যাটস আই, ব্লাড স্টোন দিয়ে অনন্যসুন্দর কারুকার্য। আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত এই স্মৃতিসৌধের মতো রাজকীয় সমাধি, স্থাপত্যে রোম্যান্টিকতার এমন নিপুণ মুন্সিয়ানা আর বোধ হয় কোথাও নেই। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই সৌধটি নির্মাণ করেন। ১৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয়ে ১৬৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চলে তাজমহল তৈরির কাজ।

Lonely-Planet6

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত একটি গিরিখাত। এর বেশিরভাগ অংশই গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্ক-এর ভেতরে পরেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম একটি জাতীয় উদ্যান। গিরিখাতটির মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে কলোরাডো নদী। ৪৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১,৮০০ মিটার গভীরতা বিশিষ্ট গ্র্যান্ড ক্যানিয়নকে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছে তার অসামান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

Lonely-Planet7

কলোসিয়াম, রোম
বিশ্বের সপ্তমাশ্চর্যের একটি হলো ইটালির রোম শহরে অবস্থিত কলোসিয়াম। এটা মূলত ছাদবিহীন একটি মঞ্চ, যেখানে কমপক্ষে ৫০ হাজার দর্শক বসে গ্ল্যাডিয়েটরদের প্রতিযোগিতা, মানুষ ও প্রাণীদের নানা খেলা, প্রদর্শনী ইত্যাদি উপভোগ করতেন। এই কলোসিয়ামের কারণে রোম নগরীকে রক্ত আর হত্যার শহর বলেও ডাকা হতো এক সময়।

Lonely-Planet8

ইগুয়াসু জলপ্রপাত, আর্জেন্টিনা/ব্রাজিল
কোনোদিন যদি আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সীমান্তে বরাবর এগিয়ে যান, তখন দেখতে পাবেন এই জলপ্রপাত। ইগুয়াসু নদী যেখানে পারানা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে, তার ২৪ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এটি। পারানা মালভূমির ঢাল বেয়ে পাহাড়ি ঝর্ণাধারা নেমে এসে প্রায় ৭৩ মিটার নীচে পতিত হয়ে সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার এই প্রাকৃতিক বিস্ময়। আকারে ইগুয়াসু কিন্তু নায়াগ্রা জলপ্রপাতের চাইতে বড়।

Lonely-Planet9

আলহামব্রা, স্পেন
‘একগুচ্ছ পান্নার মাঝে যেন একটি মুক্তো’ – মুরিশ কবিরা এভাবেই বর্ণনা করেছেন গ্রানাডা শহরের শীর্ষ আকর্ষণ আলহামব্রার সৌন্দর্যকে! নবম শতকে দক্ষিণ স্পেনে নির্মিত একটি দুর্গের ভিত্তির ওপর এই দুর্গ-প্রাসাদের পত্তন ঘটান স্পেনের শেষ মুসলিম শাসকগোষ্ঠী, একাদশ শতাব্দীতে। বাইজেন্টাইন ও মুসলিম স্থাপত্যের পরম্পরায় তৈরি এ দুর্গ-প্রাসাদে স্থানীয় লাল মাটিতে ব্যবহার করা হয়। সে জন্যই এর নাম ‘আলহামব্রা’ বা ‘দ্য রেড’।

Lonely-Planet10

আয়া সোফিয়া, তুরস্ক
ইস্তানবুলে অবস্থিত আয়া সোফিয়াকে তুর্কিরা বলেন হাজিয়া সোফিয়া বা সেন্ট সোফিয়া। ৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দে নব্য-খ্রিষ্টান জাস্টিন এটি প্রতিষ্ঠিত করেন। পরে, ১৯৩৪ সালে, আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্ক একে জাদুঘরে পরিবর্তিত করেন। সুলতান আহমেদ এলাকার মূল আকর্ষণই হচ্ছে আয়া সোফিয়া, যার জন্য প্রতিদিন হাজারো মানুষ জড়ো হন। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনার তালিকায় স্থান পায় আয়া সোফিয়া। সূত্র : ডয়চে ভেলে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *