Skip to content

রমজানের পর শাওয়ালের ছয় রোজা

Ramadan

মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ
এক মাস রোজা রেখেই যেন বান্দা রোজাকে ভুলে না যায়, সে জন্য প্রতি চান্দ্রমাসের ১৩-১৫ তারিখের রোজা, আশুরার রোজা, ৯ জিলহজ আরাফার দিনের রোজাসহ অন্যান্য নফল রোজার বিধান রেখেছে ইসলাম। ফরজ নামাজের কমতিগুলো পোষাতে যেমন নফল নামাজ রয়েছে, তেমনি ফরজ রোজার পরও শাওয়ালের সুন্নত রোজা রয়েছে। এই নফলগুলো ফরজের ত্রুটিগুলোর ক্ষতি পূরণের জন্য। রোজাদার যদি অনর্থক বাক্যালাপ, কুদৃষ্টি প্রভৃতি কাজ থেকে সম্পূর্ণ বাঁচতে না পারে, তাহলে তার রোজার পুণ্য কমে যায়। আর কমতি পুণ্যকে পূর্ণ করতেই শাওয়ালের ছয়টি রোজা।

শাওয়ালের ছয়টি রোজার মাধ্যমে রমজানের রোজা আদায়ের তাওফিকের শুকরিয়াও আদায় করা হয়। যখন কোনো বান্দার আমল আল্লাহ তাআলা কবুল করেন, তখন তাকে অন্য একটি নেক আমলের তাওফিক দেন। সুতরাং এ রোজাগুলো রাখতে পারা রমজানের রোজা কবুল হওয়ারও লক্ষণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে এ রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন। হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।’ (মুসলিম ২/৮২২)

রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। আর প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে কোরআনুল কারিমে। তাহলে ৩৬টি রোজার ১০ গুণ হলে ৩৬০টি রোজার সমান (এটি পুরস্কারের দিক থেকে)। অর্থাত্ সারা বছর রোজার সমান সওয়াব হবে। হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা।’ (নাসায়ি : ২/১৬২)

সুরা আনআমের ১৬০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি একটি সত্ কাজ করল, সে ১০ গুণ সওয়াব পাবে। এ হিসাবে যে ব্যক্তি রমজানের এক মাস রোজা রাখল, সে ১০ মাস রোজা রাখার সওয়াব পাবে। আর ছয়টি রোজার ১০ গুণ ৬০ দিন। অর্থাত্ দুই মাস। আর এ দুই মাস মিলে ১২ মাস রোজার সওয়াব। হজরত উবাইদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?’ তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে। কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজান-পরবর্তী শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখো, তাতেই সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি : ১/১৫৭)

শাওয়ালের ছয়টি রোজার ব্যাপারে কিছু ভুল ধারণা সমাজে প্রচলিত। অনেকের ধারণা, এ রোজা শুধু মহিলারা রাখবে। না, তা নয়; এ রোজা পুরুষ-মহিলা সবার জন্যই সুন্নাত। মাসের শুরু-শেষ কিংবা মাঝামাঝি সব সময়ই রাখা যায় এ রোজাগুলো। একনাগাড়ে অথবা মাঝে ফাঁক রেখে পৃথকভাবেও রাখা যায়। শাওয়াল মাসে শুরু করে শাওয়াল মাসে শেষ করলেই হলো। তবে ঈদুল ফিতরের পর শাওয়ালের প্রথম দিকে একসঙ্গে ছয়টি রোজা রাখাই উত্তম। সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *