প্রতিবন্ধীদের জন্য চাকরি খুঁজে বের করা সবসময়ই কঠিন। আর উপযুক্ত কাজ না পেয়ে বেশীরভাগ প্রতিবন্ধীকেই পরনির্ভরশীল হয়ে জীবন কাটাতে হয়। এই সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করে অভিনব উদ্যেগ নিয়েছে চীনের একটি রেস্টুরেন্ট। শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের কাজের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে রেস্টুরেন্টের মালিক, যিনি নিজেও একজন প্রতিবন্ধী।
অনেক সময় ব্যস্ত খাবার হোটেলে হাজার ডেকেও ওয়েটারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায় না। কিন্তু চীনের এই রেস্টুরেন্টের সব ওয়েটার বধির হলেও এমন ঘটনা ঘটে না। শ্রবণ প্রতিবন্ধী ওয়েটারদের সেবা নিয়ে অভিযোগ নেই এখানে খেতে আশা কোনো অতিথির।
এখানে খাবার অর্ডার দেয়ার প্রক্রিয়াটাও একটু ভিন্ন। কাস্টমাররা একটি বোতাম চাপ দিলে, বিশেষভাবে প্রস্তুত হাত ঘড়ির মাধ্যমে সেই সংকেত পায় ওয়েটার। আর কাস্টমারের নির্দেশনা বুঝতে অসুবিধা হলে, রেস্টুরেন্টের কোন কর্মকর্তা ওয়েটারকে প্রতীকি ভাষায় তা বুঝিয়ে দেন।
রেস্টুরেন্টটির ব্যবস্থাপক ঝাও ইং বলেন, “কাস্টমাররা খুবই ধৈর্য্যশীল। সামান্য অসুবিধা হলেও, তারা কখনো দুর্ব্যবহার বা অভিযোগ করে না। তারা সহানুভূতিশীল না হলে এই রেস্টুরেন্ট চালানো সম্ভব হত না।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পৃথিবীর ৩৬ কোটি মানুষ বধির। চীনের মোট জনগোষ্ঠির প্রায় ৫ শতাংশ শ্রবণ প্রতিবন্ধী। বিপুল সংখ্যক প্রতিবন্ধীদের উপযুক্ত কাজের সুযোগ দেয়া যে কোন দেশের সরকারের পক্ষে বিশাল চ্যালেঞ্জ। তাই এই রেস্টুরেন্টের মত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যেগ প্রতিবন্ধীদের স্বাবলম্বী হিসাবে গড়ে তোলার জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
ঝাও ইং আরোও বলেন , “এই রেস্টুরেন্টের মালিক কয়েক বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় হাত হারায়। এই দুর্ঘটনা ভীষণভাবে দাগ কাটে তার মনে, প্রতিবন্ধীদের সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে উঠেন তিনি। নিজের রেস্টুরেন্টেই শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের কাজ করার সুযোগ দেন তিনি।”
প্রতিদিন কাজ শেষে একত্রে মিলিত হয়ে প্রতীকি ভাষায় গান গায় রেস্টুরেন্টের সব কর্মকর্তারা। এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে একদিকে যেমন সংহতি বৃদ্ধি পায় তেমনি তারা অনুপ্রেরণা পায় পরের দিনে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করবার জন্য।