Skip to content

সন্দ্বীপের পর্যটন: অনেক সম্ভাবনা, অনেক স্বপ্ন

:: জাহিদ হাসান শাকিল ::
সমুদ্রের নোনা জলের ঝাপটায় অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে জেগে আছে সমুদ্র সৈকত সন্দ্বীপ। বিকাশের ধারায় হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছে এই পর্যটন দ্বীপ। অনেক সম্ভাবনা, অনেক স্বপ্ন।

সাগর পাড়ে প্রকৃতির শান্ত স্নিগ্ধরূপ, সবুজ ঘাসের গালিচায় ভেড়ার পালের ছুটে চলা, নারিকেল গাছের চিরল পাতার ফাঁকে ফাঁকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখার জন্য সন্দ্বীপে আছে বৃত্তাকারের প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত।

সৈকতের একাংশে আছে উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ বন। আরো আছে উপকূলে জেগে ওঠা নতুন দ্বীপের হাতছানি। প্রকৃতির এমন অপরূপ সৃষ্টির সন্মিলন সন্দ্বীপ। চট্টগ্রামের জেলার অমূল্য সম্পদ এই দ্বীপ উপজেলাটি দেশ-বিদেশের ভ্রমণ পিপাসু কৌতুহলী পর্যটকদের কাছে হতে পারতো এক আকর্ষণীয় স্থান। কিন্তু সন্দ্বীপের পর্যটন সম্ভানার বিকাশে কার্যকর কোন সরকারি উদ্যোগের দেখা মেলেনি আজও, উৎসাহিত করা হয়নি বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও।

স্বাধীনতার এত বছরপরও এখানে দ্বীপের উন্নয়নে বিশেষত পর্যটন সহায়ক অবকাঠামো উন্নতিতে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। থাকা খাওয়ার নেই কোনো সুযোগ-সুবিধা। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগও নাজুক ও ব্যয়বহুল। শুধু দ্বীপের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিই নয় এখানে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াও অতোটা সুখকর নয়। নানান ঝক্কি ঝামেলাই শুধু নয়, ন্যুনতম তথ্য প্রাপ্তিও অনিশ্চিত। তবুও প্রতিটি নতুন ভোরে নতুন আশাবাদ।

এতোসবের মধ্যেও শীত মওসুম শুরু হওয়ায় পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই শান্ত দ্বীপ পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হবে এই আশা করছেন স্থানীয়রা।

দ্বীপের সবুজ আচ্ছাদনে অতিথি পাখির আগমণ যোগ করেছে নতুন মাত্রা। শীতের সময় লাখ লাখ অতিথি পাখি এসে এ দ্বীপে আশ্রয় নেয়।পুরো দ্বীপে ঘন সবুজের বন, মাঝে মধ্যে খাল, বিল আর খালের উপর গাছের সাঁকো আর বনের মাঝখানে সবুজ সমতলভূমি। এসব মিলিয়েই স্বর্ণদ্বীপ সদ্বীপ।

পড়ন্ত বেলায় পশ্চিম আকাশে তেজ কমে যাওয়া সূর্যটা সৈকতের প্রান্ত জুড়ে ছড়িয়ে দেয় রক্তবর্ণ আভা। ভেজা কাদাতে পর্যটকদের পায়ের ছাপ আর ছড়িয়ে থাকা শামুক যেন এক ভিন্নমাত্রা যোগ করে। জীবিকার প্রয়োজনে সমুদ্রগামী জেলেরা তখন হয়তো ঘরে ফেরে; কিন্তু গোধূলির আবছা আলো পর্যটকদের তখন নিয়ে যায় ভিন্ন আবেশে।

উষালগ্নে সৈকতে আরেক হই-হুল্লোড় ছড়িয়ে পড়ে। ভোরে সমুদ্র অনেকের কাছে যেন পূণ্যতা লাভের সামিল। সমুদ্রের পানিতে সব ধুয়ে মুছে মানুষগুলো ফিরে যায় আপন ঠিকানায়। এতটা উৎসবমূখর পরিবেশের মাঝেও শুধুমাত্র অব্যবস্থাপনার কারণে পর্যটকদের চাহিদা পুরোপুরি মেটাতে পারছে না, দ্বীপবাসী ও দ্বীপের সমুদ্র সৈকত।

পর্যটন উদ্যোক্তা অপু নজরুল ও ইকোট্যুরিজম ন্যাচার স্টাডি ক্লাবের পর্যটক মাহমুদুল হক রিয়াদ জানান, আবাসন ব্যবস্থা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। সরকারের পক্ষ থেকে চোখে পড়ার মত কোন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হয়নি। যেগাযোগ ব্যবস্থা ভাল নয়। তবে তারা দ্বীপবাসীর সহযোগিতা ও আন্তরিক আতিথেয়তার প্রশংসা করেন। এবং আশা প্রকাশ করেন যে দ্বীপবাসী সবসময় পর্যটক মেহমানদের সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখবেন। সৌজন্যে: চ্যানেল আই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *