আনিকা জীনাত
লস অ্যাঞ্জেলেসের শহরতলিতে আছে বাংকার হিল নামের এক জায়গা। এলাকাটি সবাই মোটামুটি এক নামে চেনে। কারণ এখানেই রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট রেলওয়েটি। এক বগির ট্রেনে চেপে শুধু পাহাড়ে ওঠা-নামা করা যায়।
১৯০১ সালে অ্যাঞ্জেলস ফ্লাইট নামের এই রেলওয়ে তৈরি করা হয়েছিল দ্রুত সময়ে পাহাড়ে ওঠার জন্য। মূলত ওলিভ স্ট্রিট থেকে হিল স্ট্রিটে যাওয়ার জন্যই রেলগাড়ি দুটি ব্যবহার করা হতো। একটির নাম সিনাই আর অপরটির ওলিভেট। ট্রেনের ভেতরটাও বেশ সাদামাটা। চেয়ারগুলো কাঠের তৈরি। প্রতি সারিতে একটি করে বসার চেয়ার।
ট্রেনের পাহাড়তলি ওলিভ স্ট্রিট থেকে ৩১৫ ফুট ওপরে উঠতে সময় লাগত মাত্র এক মিনিট। প্রথম ৫০ বছর অ্যাঞ্জেলস ফ্লাইট ছিল দারুণ জনপ্রিয়। ধারণা করা যায়, এ সময় ১০ কোটির বেশি যাত্রী পরিবহন করে রেলওয়েটি। বিশেষ করে পাহাড় বেয়ে ওঠা-নামার জন্য শ্রমিকদের প্রথম পছন্দ ছিল এটি।
কিন্তু একসময় বাংকার হিল এলাকায় নগরায়ণ জোরেশোরে শুরু হয়। পুরনো বাড়িঘর ভেঙে একের পর এক বহুতল বাণিজ্যিক ভবন উঠতে থাকে। অ্যাঞ্জেলস ফ্লাইটও আগের মতো আর যাত্রী পায় না। তাই ১৯৬৯ সালে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল।
অনেক চেষ্টার পর আবার চালু করা সম্ভব হয় এই রেলপথ, সেটি ১৯৯৬ সালে। তবে পুরনো স্থান থেকে কিছুটা দূরে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে অ্যাঞ্জেলস ফ্লাইট।
কিন্তু কর্তৃপক্ষের অবহেলার শিকার হয়ে ২০০১ সালে আবারও বন্ধ হয়ে যায়।
একটি দুর্ঘটনায় এক যাত্রী নিহত হলে অ্যাঞ্জেলস ফ্লাইটের নকশায় ত্রুটি ধরা পড়ে। রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলার কারণে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। অনেক চড়াই-উতরাই পার করে ২০১০ সালে বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে দর্শনার্থীদের জন্য আবার খুলে দেওয়া হয় রেলপথটি।
কিন্তু ২০১৩ সালে আরেকটি দুর্ঘটনার পর আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কবে আবার পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট রেলপথে রেলগাড়ি চলবে নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন না কেউই। সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ