Skip to content

সমুদ্রপথে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড

দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরাসরি সমুদ্র যোগাযোগ গড়ে তুলতে চায় বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড। সমুদ্রপথে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে আসিয়ানভুক্ত দেশ থাইল্যান্ড তার রানং বন্দরের সংযোগ করতে চায়।

এ দু’টি বন্দরের মধ্যে সরাসরি উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাই ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করতে ঢাকায় এসেছে থাইল্যান্ডের একটি প্রতিনিধি দল।

আজ সোমবার (০৮/০২/১৬) দুপুরে ১২ সদস্যের থাই প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় পৌঁছে।

তিনদিনের এই সফরে প্রতিনিধি দলটি চট্টগ্রাম ও রানং বন্দরের মধ্যে সরাসরি উপকূলীয় জাহাজ চলাচল বিষয়ে প্রস্তাবিত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নিয়ে আলোচনা করবে।

Bangladesh-Thailand

মঙ্গলবার নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের কথা রয়েছে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিমসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, প্রাইভেট সেক্টরসহ শিপিং ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সম্পৃক্ত সদস্যরা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

থাইল্যান্ডের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন- দেশটির পোর্ট অথরিটির দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা লে. জেনারেল প্রজাকশ্রিওথানান্দ, দক্ষিণ পশ্চিম থাইল্যান্ডের রানোং প্রদেশের গভর্নর সুরিয়া কানজানাসিলপ, রানোং প্রদেশের চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান সুদাপরন ইয়োদপিনিজ, রানোং ফেডারেশন অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মিথুস রাংসিয়ানান এবং থাইল্যান্ড-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মিংপান্ট চায়াভিচিটস্লিপ।

কোনো আসিয়ান দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি জাহাজ চলাচলের বিষয়ে এটাই প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক। গত বছর থাই পররাষ্ট্র সচিব নোরাচিত সিনহাসেনির বাংলাদেশ সফরে বাংলাদেশের পক্ষে এ প্রস্তাব করেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বুধবার থাই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা চট্টগ্রাম সফর করবেন। সেখানে তারা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা এবং চট্টগ্রামের রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। সরাসরি উপকূলীয় জাহাজ চলাচলে ব্যবসা এবং বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা বুঝতে থাইল্যান্ডের বন্দর কর্তৃপক্ষের এই প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।

দুই দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হলে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে উৎসাহিত হবেন। একই সঙ্গে এ ধরনের যোগাযোগ সম্পর্ক দুই জাতির মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থার সম্পর্কও গড়ে তুলবে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে সরাসরি উপকূলীয় জাহাজ চলাচল দুই দেশের মধ্যে পণ্য ও সেবা লেনদেন খরচ কমাবে, শিপিং কার্গো জাহাজের সময় বাঁচাবে এবং বাণিজ্য ও পরিবহনে থাইল্যান্ডের সঙ্গে নতুন একটি সংযোগ তৈরি করবে। যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

আগামী বৃহস্পতিবার প্রতিনিধি দলটির ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ডের মধ্যে মেরিটাইম সহায়তা চুক্তি সম্পন্ন হলেও বর্তমানে তা অকার্যকর হয়ে গেছে। মূলতঃ থাইল্যান্ডের চুক্তি স্বাক্ষরকারী যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। নাম পরিবর্তন করে ওই মন্ত্রণালয়ের বর্তমান নাম রাখা হয়েছে পরিবহন মন্ত্রণালয়। এ কারণে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উপকূলীয় জাহাজ চলাচল এবং দ্বিপক্ষীয় সমুদ্র যোগাযোগ সম্পর্কিত একটি নতুন সমঝোতা (এমওইউ) চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করে।

এর আগে গত বছরের জুনে ঢাকা সফররত থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র সচিব নোরাচিত সিনহাসেনি বলেছিলেন, সমুদ্রপথে ও উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের মাধ্যমে বাংলাদেশের মংলা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে থাইল্যান্ডের কয়েকটি বন্দরের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। এ সংযোগ কার্যকর করতে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে চুক্তি স্বাক্ষর করার কথাও বলেন তিনি।

তিনি সমুদ্র যোগাযোগের পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেছিলেন, বিসিআইএম (বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মায়ানমার) করিডোরের সঙ্গে সড়কপথে থাইল্যান্ডও যুক্ত হবে। থাইল্যান্ডের পূর্ব-পশ্চিম করিডোর এবং উত্তর-দক্ষিণ করিডোরের সঙ্গে বিসিআইএম করিডোর যুক্ত হবে। এতে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। আবার এ মাধ্যম ব্যবহার করে বাংলাদেশ সরাসরি মালয়েশিয়া, লাওস ও ভিয়েতনামেও যেতে পারবে।

এ সংযোগ স্থাপিত হলে দুই দেশেরই বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। সূত্র : বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *