Skip to content

সাইকেলে কক্সবাজার টু টেকনাফ

:: গাজী মুনছুর আজিজ ::
পিচঢালা পথের একপাশে সমুদ্র অন্যপাশে পাহাড়। এ পথের পোশাকি নাম মেরিন ড্রাইভ রোড। কক্সবাজারের এ মেরিন ড্রাইভ রোড ধরেই সাইকেল যাত্রা শুরু। উদ্দেশ্য সাইকেল চালানোর জন্য এ রোডটিকে দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে পরিচিত করে তোলা। একই সঙ্গে বিদেশি পর্যটককে কক্সবাজারের প্রতি আকর্ষণ করাও অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য। আর পর্যটন বর্ষ উপলক্ষে এ অভিযানের আয়োজন করে ট্যুরিজম অপারেটর সংস্থা পথিক লিমিটেড। ‘দেখুন বাংলাদেশ, জানুন বাংলাদেশ’ স্লোগান নিয়ে কক্সবাজার শহর থেকে যাত্রা শুরু করি। তারপর লাবণী বিচ পয়েন্ট, সুগন্ধা বিচ পয়েন্ট ও কলাতলী বিচ পয়েন্টের মোড় হয়ে সোজা মেরিন ড্রাইভ রোড।

এ যাত্রায় দলের নেতৃত্বে ছিলেন মুহাম্মদ আবুল হোসেন। আমি এবং দলের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মুহাম্মদ রুবেল হোসেন। পৃথিবীর দীর্ঘতম সৈকত আর পাহাড়ের মাঝ দিয়ে চলছিলো আমাদের ছোটো দল। একপাশে সমুদ্রের নীল পানির গর্জন, অন্যপাশে সবুজ পাহাড়ের হাতছানি। সব মিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য। দরিয়ানগর এসে আমাদের ছোটো দলটি যাত্রায় একটু বিরতি নেয়। সবাই ডাব খাই।কক্সবাজারের ডাবের স্বাদ সত্যিই অতুলনীয়।তারপর আবার ছুট।

বেশ কিছুক্ষণ চালিয়ে বিরতি দিই হিমছড়ি বিচে। এবার খাই তরমুজ। সমুদ্রের পাড়েই হয়েছে এ তরমুজের চাষ। ছোট ছোট তরমুজ। কিন্তু দামটা একটু বেশি। তবে স্বাদের। তরমুজ পর চা শেষ করি।

প্যাঁচার দ্বীপে গিয়ে যাত্রা বিরতি। দিই পানি খাওয়ার জন্য। রেজুখালসহ দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে আমরা যখন ইনানী পৌঁছি তখন বিকেল। সাইকেল রেখে দুপুরের খাবার খাই সেখানকার একটি হোটেলেই। খাবার শেষ করে দেখতে যাই বিস্ময়কর সেই বিচ। কিছুক্ষণ ঘুরে ঠিক সন্ধ্যায় রওনা হই কক্সবাজারের উদ্দেশ। আটটার দিকে পৌঁছে যাই সেখানে। হিসেব অনুযায়ী যাওয়া-আসায় সাইকেল চালাই প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার।

দ্বিতীয় দিন চালিয়ে খুব দূরে যাইনি। হিমছড়ির কাছাকাছি গিয়ে আবার ফিরি। তৃতীয় দিন অটোরিকশায় সাইকেল নিয়ে আসি ইনানী। তারপর রওনা হই টেকনাফের উদ্দেশে। যেতে যেতে দলনেতা আবুল হোসেন জানালেন, মেরিন ড্রাইভ রোডটি সাইকেল চালানোর জন্য বেশ উপযোগী। সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে এ রোডে আন্তর্জাতিক মানের সাইকেল চালানোর প্রতিযোগিতাও করা সম্ভব। আর এ সাইকেল চালানোর রোডটিকে পরিচিত করে তুলতে পারলে অনেক বিদেশি পর্যটকও আসবেন।

এরপর আমরা আবার বিরতি নেই শাপলাপুর গিয়ে। সেখানে চা-পানি পান শেষে আবার যাত্রা শুরু করি। তারপর দীর্ঘ পথে কয়েকবার বিরতি দিয়ে টেকনাফের জিরো পয়েন্টে যখন পৌঁছি তখন শেষ বিকেল। সব মিলিয়ে কক্সবাজার থেকে ইনানী, আর ইনানী থেকে টেকনাফ প্রায় ৮৭ কিলোমিটার সাইকেল চালাই আমরা।

টেকনাফ শহরের এক হোটেলে দুপুরের খাবার। তারপর স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করি অভিযান বিষয়ে। সন্ধ্যায় দলনেতা অভিযান শেষের ঘোষণা করেন।

মেরিন ড্রাইভ রোডে এর আগেও একাধিক বার সাইকেল চালিয়েছি। প্রতিবারই একা ছিলাম। তবে এবারই দল বেঁধে। দলনেতা আবুল হোসেনের দেশে-বিদেশে সাইকেল চালানোর অভিজ্ঞতা আছে। অবশ্য আমি নিয়মিত সাইকেলিস্ট নই। তবে ছোটবেলা থেকেই সাইকেল চালিয়ে আসছি। সাইকেল ভ্রমণে বেরিয়েছি অসংখ্য বার। খুলনা থেকে চাঁদপুর সাইকেল চালিয়ে আসা-যাওয়া করেছি।

খুলনা থেকে আশপাশের জেলায়ও সাইকেল চালিয়ে আসা-যাওয়া করেছি একাধিক বার। চাঁদপুরেও সাইকেলে চেপে কম ঘুরিনি। এছাড়া মাঝেমধ্যেই সাইকেল ভ্রমণে বেরিয়েছি। তাই সাইকেল চালানোর ভালো লাগাটা ছোটবেলা থেকেই। এবং সুযোগ পেলেই সাইকেলে চেপে বসি। আমাদের ছোটো দলটিতে সাইকেলিস্ট ছাড়াও আরো ছিলেন আলোকচিত্রী অভীক সারওয়ার, গালিব হাসান ও মইন উদ্দিন। তারা অটোরিকশায় চেপে আমাদের আগে আগে চলেন এবং অভিযানের আলোকচিত্র ও ভিডিও সংগ্রহের কাজ করেন। সৌজন্যে: আরটিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *