সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
টলটলে নীলচে লবণাক্ত পানি। তাতে খানিক পর পরই বড় বড় ঢেউয়ের আভাস। পাশে চমত্কার সৈকত। স্বাভাবিকভাবেই সাগরের কথা মনে পড়ার কথা। কিন্তু স্পেনের প্লাইয়া দে গোলপিজুরির ব্যাপারটা একটু আলাদা। চারপাশের পাথুরে তৃণভূমির ভেতরে আটকে থাকা এই জলাধারে নীলচে পানি দেখতে পাবেন আপনি, লবণাক্ত সেই পানিতে খেলা করতে দেখবেন সাগরের ঢেউয়ের মতো ঢেউও। আর পাবেন বালুর সৈকত। কিন্তু সমুদ্রটি খুঁজে পাবেন না চারপাশে আতিপাতি করেও। কিন্তু সাগর ছাড়া একেবারে আটকানো এক জায়গার ভেতর এমনটা কী করে সম্ভব? না অলৌকিক কিছু নয়। মানুষের কোনো হাতও নেই এতে। বরং নিজের মতো করে মানুষকে চমকে দিতে এভাবেই ছোট্ট এক লেক আর বিচ তৈরি করে নিয়েছে প্রকৃতি স্পেনের উত্তর-মধ্য উপকূলে অবস্থিত ছোট্ট শহর জিয়ানেসে।
সাগরকে ধারে-কাছে না দেখতে পেলেও সমুদ্রের সঙ্গে ঠিকই যোগ রয়েছে এই গোলপিজুরির। আর এই যোগ স্থাপিত হয়েছে সবার চোখের আড়ালে, মাটির নিচ দিয়ে। সাগর থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে অবস্থিত গোলপিজুরির নিচেই রয়েছে এর পানি সরবরাহকারী লুকোনো গুহা। এই গুহা পথেই ক্যান্টাব্রিয়ান সাগরের বিচকে উপসাগর থেকে অবিরত জল পেয়ে আসছে গোলপিজুরি সেই জন্মলগ্ন থেকে। ভালো করে খেয়াল করলেই এর পানিতে খানিক পর পর ঢেউয়ের আভাসও পাবেন। কখনো কখনো তো সেটি অনেকটা বড়সড় আকারও পায়। আছড়ে পড়ে ফেনিল পানি মাটির ওপর।
অশান্ত ঢেউ আর টলটলে নীলচে পানি—এমন জায়গা কার না পছন্দ! পর্যটকদের কাছে এখন তাই সাগর থেকে বেশ দূরে অবস্থিত এই সমুদ্রহীন বিচের আকর্ষণ দিন দিন বাড়ছে। তবে এখানকার পানি সরাসরি সাগর থেকে এলেও উষ্ণ নয়, খানিকটা শীতল। ধারণা করা হয়, সমুদ্র থেকে আসার সময়টুকু মাটির নিচে কাটানোর কারণেই উষ্ণতা হারায় পানি।
বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে প্রচণ্ড ভিড় করে সবাই প্লাইয়া দে গোলপিজুরি বিচ ঘিরে। যদিও তৃণভূমির ভেতরে মাত্র ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই বিচ খুঁজে পাওয়াই মুশকিল হয় অনেক সময়। তবে নির্জনতার সঙ্গে সাগরের ঢেউ আর সবুজ নিশ্চিন্ত মনে উপভোগ করতে চাইলে সাগরহীন এই বিচের কোনো জবাব নেই। সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ