Skip to content

সান অ্যান্ড সার্ফ

ফুয়ের্তেভেন্তুরা কথাটির অর্থ হলো জোরালো বাতাস, অথবা ফরাসি ভাষায় গ্রেট অ্যাডভেঞ্চার। আসলে এটি একটি দ্বীপ, ছুটি কাটানোর দ্বীপ।

ফুয়ের্তেভেন্তুরা হলো অতলান্তিক মহাসাগরে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ। এখানকার সমুদ্রসৈকতে সারাক্ষণ উত্তর থেকে জোরালো বাতাস বয়, পরিভাষায় যার নাম ‘ট্রেড উইন্ডস’। কাজেই এটা উইন্ডসার্ফার আর কাইটসার্ফারদের স্বর্গ। দ্বীপের উত্তরে পাথুরে সৈকতগুলোতে কিন্তু সার্ফারদের রাজত্ব, কেননা এখানে ঢেউগুলো পাথরে আঘাত খেয়ে সমানভাবে ভাঙে।

Sun

যার ঢেউয়ের ওপর সার্ফিং জানা নেই, তার জন্য ফুয়ের্তেভেন্তুরায় অসংখ্য সার্ফিং স্কুল রয়েছে – যেমন এল কতিয়োর ‘ফ্রেশসার্ফ’। সার্ফিং প্রশিক্ষক অ্যান্ডি কুলেপিস প্রথমে বোঝান, ঢেউ ছোট-বড় হয় কেন ও কীভাবে: ‘‘ফুয়ের্তেভেন্তুরায় দিনে চারবার জোয়ার আসে, ঢেউয়ের উচ্চতা প্রতিবারেই প্রায় একরকম হয়।”

এল কতিয়োর কাছেই সৈকত। প্রথমে শুকনো মাটিতে – থুড়ি, বালুতে – একটু প্র্যাকটিস করে নেওয়া দরকার। তারপর কম পানিতে সার্ফিং – সার্ফিং রংরুটদের জন্য ঢেউগুলো বেশ শান্তশিষ্ট।

‘‘সারা বছর ধরে ঢেউগুলো প্রায় একই রকম থাকে, কাজেই অপ্রত্যাশিত বলে কিছু নেই। বিভিন্ন মরশুমে বিভিন্ন ধরনের ঢেউ: উঁচু ঢেউ, নীচু ঢেউ, অতিকায় ঢেউ! সাধে কি আর ফুয়ের্তেভেন্তুরাকে ইউরোপের হাওয়াই দ্বীপ বলে।”

huawei

গ্রামের আমেজ
দ্বীপের অভ্যন্তরে যে সব ন্যাড়া পাহাড় আছে, সেগুলো নিভে যাওয়া আগ্নেয়গিরি, লক্ষ লক্ষ বছরের পুরনো। পাহাড়গুলোর মাঝখানে দ্বীপের রাজধানী বেতানকুরিয়া। পঞ্চদশ শতকের গোড়ায় নর্মান রাজা জঁ দ্য বেতঁকুয়র এই দ্বীপে পদার্পণ করেন – তারই নামে রাজধানী।

বেতানকুরিয়া আজ দ্বীপের রাজধানী – অপরূপ শহর। রেস্টুরেন্ট মালিক রিকার্দো সিলভেরা মেখিয়াস বলেন:
‘‘বেতানকুরিয়ায় ফুয়ের্তেভেন্তুরার গ্রামীণ ও প্রাকৃতিক দিকটি দেখতে পাওয়া যায়। এখানে সব কিছু টুরিস্টদের জন্য নয়, সব কিছু শুধু সৈকত আর সূর্যস্নান নয়। বেতানকুরিয়া আজও একটি গ্রামের মতো ছোট ও সুন্দর – এখানে দ্বীপের নানা প্রথাগত খাদ্য ও পানীয়ের আস্বাদ নেওয়া যায়।”

‘কাসা সান্তা মারিয়া’ রেস্তোরাঁটি দুশ’ বছরের বেশি পুরনো একটি খামারবাড়িতে। স্বভাবতই ‘টাপাস’ গোত্রীয় স্পেনীয় ফিঙ্গার ফুড’-ও এখানে পাওয়া যায়। ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের একটি স্পেশ্যালিটি হলো ‘পাপাস আরুগাদাস’: সৈন্ধব লবণ আর লাল-সবুজ চাটনি দেওয়া আলুভাজা। দ্বীপের মানুষ আবার ছাগলজাত সব কিছু ভালোবাসেন, দুধ থেকে চিজ থেকে মাংস। বেতানকুরিয়ায় ছাগল পোষা হয়। ছাগলের দুধ থেকে তৈরি চিজ খাওয়া হয় তেলে জারানো অলিভ আর প্রতিবেশী দ্বীপ লান্সেরতের ওয়াইনের সঙ্গে।

huawei2

পৃথিবী এখানেই শেষ
দ্বীপের দক্ষিণে ওয়েসিস পার্কের বট্যানিক্যাল গার্ডেন : এখানে আছে আট হাজার নানা ধরনের পাম গাছ আর প্রায় ৩০ হাজার ক্যাকটাস। পার্কের একটা লক্ষ্য হলো, দ্বীপের কিছু বিশেষ গাছপালার সংরক্ষণ। ওয়েসিস পার্কের অধ্যক্ষ স্টেফান শলৎস বলেন:
‘‘এমন কিছু গাছপালা আছে, যেগুলো শুধু বিশেষ কোনো পাহাড়, খাড়ি কিংবা পাহাড়ের ঢালে গজায়। আমরা চেষ্টা করি, সেই ধরনের গাছপালা আমাদের পার্কে রাখবার। এভাবে আমরা গাছপালা সংরক্ষণে আমাদের অবদান রাখার চেষ্টা করি, কেননা বাইরের খোলামেলায় ওরা ক্রমেই বিরল হয়ে আসছে।”

শেষমেষ আবার সাগর – তবে দ্বীপের দক্ষিণে লা পারেদ-এর খাড়া উপকূলটি দেখলে মনে হবে, পৃথিবী এখানেই শেষ হতে চলেছে। সেটাই তো ফুয়ের্তেভেন্তুরার মজা। সূত্র : ডয়চে ভেলে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *