Skip to content

সেখানে গড় আয়ু ১০০, আর ৬৫-তে সন্তান!

Hunza4

তারা সময় সময় হাসি-আনন্দে মেতে থাকে। দীর্ঘসময় পরিশ্রম করলেও হাঁপিয়ে ওঠে না তারা। খাওয়া-দাওয়া নিয়ে বাহুল্য নেই অথচ রোগ-জরা তাদের কাবু করতে পারে না। আপাতদৃষ্টিতে তাদের দেখে মনে হয়, তারা যেন এই পৃথিবীর অংশ নয়। মনে হয় তারা অন্য কোনো গ্রহ থেকে এসেছে! কিন্তু আসলে তা নয়। এটি একটুকরো অচেনা পাকিস্তান।

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ে এই মানুষদের বসবাস। হুনজা সম্প্রদায়ের এই মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮৭ হাজার। তবে যে কারণে এরা পৃথিবীর অন্যসব মানুষের চেয়ে আলাদা সেটা হলো গড় আয়ু। এরা প্রায় সবাই গড়ে ১০০ বছর বাঁচে!

Hunza

হুনজা সম্প্রদায়ের মানুষদের অফুরান প্রাণশক্তি আর গড় আয়ু দেখলে রীতিমতো বিস্মিত হতে হয়। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, কোনো রকমের রোগ-ব্যাধি ছাড়াই দীর্ঘদিন বেঁচে থাকেন হুনজা মানুষরা। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ বাঁচেন পুরো ১৬০ বছর পর্যন্ত। কিছু কিছু হুনজা নারী তো ৬৫ বছর বয়সেও গর্ভধারণ করেন।

হুনজা সম্প্রদায়ের মানুষদের দেখলে এটা স্বীকার করতেই হয় যে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা মানুষকে প্রভাবিত করে। যে কোনো ঋতুতেই হুনজারা বরফঠান্ডা পানিতে গোসল করে। সে সময় যদি বাইরে বরফও পড়ে, তবু তারা গরম পানি দিয়ে গোসল করে না। তারা শুধু সেই সব খাবারই খায়, যা তারা উৎপাদন করে। তাদের খাদ্যতালিকায় থাকে প্রচুর পরিমাণে শুকনো অ্যাপ্রিকট, কাঁচা ফল, বাদাম, শিম, ভুট্টা, বার্লি ও বাজরার মতো শস্য। তবে সে তুলনায় পনির, ডিম ও দুধ থাকে কিছুটা কম পরিমাণে। হুনজারা খায় কম কিন্তু হাঁটে বেশি।

হেলদি ফুড টিম ডট কম তাদের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

Hunza2

হুনজা সম্প্রদায়ের মানুষ শুধু সকাল ও দুপুর এই দুই বেলা খাওয়াদাওয়া করে। বিকেলের নাশতা বা রাতের খাবার গ্রহণ করে না তারা। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার কারণে প্রতিদিনই অন্তত ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার হাঁটতে হয় তাদের। মাংস তারা প্রায় খায়ই না। যদিও খায়, তাও হয়তো বছরে দুবার। আর সেটাও গরু বা ছাগলের মাংস নয়। ভেড়া বা মুরগির মাংসই খায় তারা। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে হাসাহাসি করাটাও তাদের প্রতিদিনকার জীবনযাপনের অংশ।

এ ছাড়া বছরের দুই থেকে চার মাস হুনজারা শুধু শুকনো অ্যাপ্রিকট ফলের রস ছাড়া আর কিছুই খায় না। প্রাচীন কাল থেকেই এই প্রথা মেনে আসছে হুনজারা। হুনজাদের একটি পরিবারে বেশি পরিমাণ অ্যাপ্রিকট গাছ থাকাটা সমাজে মর্যাদাপূর্ণ ব্যাপার।

আধুনিক চিকিৎসকরা বলছেন, হুনজাদের খাদ্যাভ্যাস এবং একটা নির্দিষ্ট সময় অনাহারে থাকার এই প্রক্রিয়াই তাদের সুস্বাস্থ্যের অন্যতম কারণ।

Hunza3

টিউমারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রচুর পরিমাণ অ্যাপ্রিকট গ্রহণই হুনজাদের সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, অ্যাপ্রিকটের বিচি থেকে এরা তৈরি করে একধরনের তেল, যাতে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি-১৭। যা ক্যানসারবিরোধী উপাদান হিসেবে পরিচিত। তবে এই তেল খুব অল্প পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। তা না হলে এটি জীবননাশকও হতে পারে।

তবে ইদানীং কিছু বাণিজ্যিক খাবার ঢুকে পড়েছে হুনজা সমাজে। যার কারণে হজমে সমস্যাসহ বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে হুনজা সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে।

এই শক্তিশালী সম্প্রদায়ের মানুষ মনে করে, তারা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বংশধর। ১৯৮৪ সালে হুনজা সম্প্রদায়ের সৈয়দ আবদুল মবুদু নামে এক ব্যক্তিকে নিয়ে একটি গল্প প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, আবদুল মবুদু একটি কাজে লন্ডন গিয়েছিলেন। সে সময় তাঁর পাসপোর্টে জন্ম সাল ১৮৩২ দেখে রীতিমতো বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলেন বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা। সূত্র : এনটিভি

All-Tour-2-(14.09.15)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *