সেন্টমার্টিন ভ্রমণ মাত্র ৩,৯৫০ টাকায়
এই খরচে থাকছে
ঢাকা-টেকনাফ-ঢাকা এসি বাস টিকেট
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন-টেকনাফ জাহাজ ভাড়া
সেন্টমার্টিনে এক রাত হোটেল/রিসোর্টে থাকা
যেকোনো দিন ট্যুর
নূন্যতম ২ জনের গ্রুপ
কর্পোরেট ও কাস্টমাইজ ট্যুরের ব্যবস্থা
শুধু হোটেল ভাড়া কিংবা জাহাজের টিকেট নেয়ার সুযোগ
বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ: ০১৬ ১২ ৩৬০ ৩৪৮

আমাদের সেন্টমার্টিন।
কক্সবাজার জেলা শহর থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে সাগর বক্ষের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিন। দ্বীপটি ৭.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং কিছুটা উত্তর-দক্ষিণ দিকে বিস্তৃত। দ্বীপের আয়তন প্রায় ৮ বর্গ কিলোমিটার। ভৌগলিকভাবে এটি তিন অংশে বিভক্ত। উত্তরাঞ্চলীয় অংশকে বলা হয় নারিকেল জিঞ্জিরা বা উত্তর পাড়া যা ২১৩৪ মিটার দীর্ঘ ও ১৪০২ মিটার প্রশস্ত। দক্ষিণ অংশকে বলে দক্ষিণ পাড়া যা ১৯২৯ মিটার দীর্ঘ। একটি সংকীর্ণ অঞ্চল এই দুই অংশকে যুক্ত করেছে যা মধ্য পাড়া নামে পরিচিত।

টেকনাফের জেটিতে নোঙর করা জাহাজ। এরকম জাহাজে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে যেতে হবে সেন্টমার্টিনে।

টেকনাফ জেটি থেকে সেন্টমার্টিন যেতে সময় লাগতে পারে প্রায় আড়াই ঘণ্টা।
মূল দ্বীপ ছাড়াও কয়েকটি ১০০ থেকে ৫০০ বর্গমিটার আয়তন বিশিষ্ট ক্ষুদ্র দ্বীপ রয়েছে যা ছেড়াদিয়া বা ছেড়া দ্বীপ নামে পরিচিত। জোয়ারের সময় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে এর নাম ছেড়া দ্বীপ। মাছ সংগ্রহস্থল, বাজার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু উত্তর পাড়াতেই সীমাবদ্ধ।
সেন্টমার্টিনের যেদিকে চোখ যায় শুধু নীল আর নীল, আকাশ আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার।

ঢাকা থেকে প্রতিদিন সেন্টমার্টিনে চলাচল করছে এরকম বিলাসবহুল অনেগুলো গাড়ি।

এরকম চিংড়ি মাছও পাওয়া যায় সেন্টমার্টিনে।
অগভীর দীর্ঘ সমুদ্রতট, সামুদ্রিক প্রবাল, সাগরের ঢেউয়ের ছন্দ, প্রচুর দখিনা হাওয়া, নান্দনিক নারিকেল বৃক্ষের সারি, সাগর তীরে বাঁধা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এসবই সেন্টমার্টিন দ্বীপের মহাত্ম যা ছোট্ট এই দ্বীপটিকে করেছে অনন্যসুন্দর। বালি, পাথর, প্রবাল কিংবা নানা জীব বৈচিত্র্যের সমন্বয়ে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ পিপাসু মানুষের জন্য একটি অনুপম অবকাশ কেন্দ্র। এর স্বচ্ছ পানিতে জেলি ফিশ, হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছ, কচ্ছপ, প্রবাল দেখতে পাওয়া যায় যা এই দ্বীপের অন্যতম আকর্ষন।

ছেঁড়া দ্বীপ
এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ যার চারিদিকে শুধুই নীল সমুদ্র। টেকনাফ থেকে ট্রলারে কিংবা জাহাজে যেতে সময় লাগে দুই থেকে সোয়া দুই ঘণ্টা। এর জনসংখ্যা প্রায় আট হাজার। দ্বীপের অধিবাসীদের প্রায় সবারই মূল পেশা মৎস্য শিকার। তবে ইদানীং পর্যটন শিল্পের বিকাশের কারণে অনেকেই রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল কিংবা গ্রোসারি শপের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ নিতান্ত সহজসরল, তাদের উষ্ণ আতিথেয়তা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। এখানে পর্যটকদের জন্য ভালো মানের হোটেলের পাশাপাশি স্বল্প খরচে থাকা-খাওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। এই সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণে রয়েছে ছেড়া দ্বীপ যা বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত দ্বীপ। প্রচুর প্রবাল, পাথর, স্বচ্ছ পানিতে নানান জীব বৈচিত্র দেখতে হলে আপনাকে অবশ্যই ঘুরে আসতে হবে ছেড়া দ্বীপ। সেন্টমার্টিন থেকে ট্রলারে মাত্র ২০ মিনিট লাগবে ছেড়া দ্বীপ পৌঁছতে। ভাটার সময় সেন্ট মার্টিন থেকে হেটেও ছেড়া দ্বীপ যাওয়া যায়।

থাকার ভালো ব্যবস্থা রয়েছে সেন্টমার্টিনে।

সতর্কতার সাথে হাটতে হবে এসব পাথরের উপর দিয়ে।
ঢাকা থেকে সরাসরি টেকনাফের বাসে করে টেকনাফ গিয়ে সেখান থেকে সেন্টমার্টিন যেতে পারেন। যেতে সময় লাগবে প্রায় ১১-১২ ঘন্টা। এছাড়াও ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার যেতে পারেন এবং সেখান থেকে লোকাল বাস বা মাইক্রো/জিপ ভাড়া করে টেকনাফ হয়ে সেন্টমার্টিন আসতে পারেন। প্রতিদিন ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায় দূরপাল্লার নামী-দামী সব ধরনের বাস। উল্লেখযোগ্য হলো গ্রীন লাইন, সোহাগ, টিআর ট্রাভেলস, শ্যামলী, হানিফ, সৌদিয়া, ঈগল, এস আলম, সিল্ক লাইন, সেন্টমার্টিন ইত্যাদি। বাস ভেদে ভাড়া পড়বে ১০০০-২৫০০ টাকা। তাছাড়া ঢাকা থেকে বিমানে করেও সরাসরি কক্সবাজার যাওয়া যায়। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ ডেতে সময় লাগবে এক থেকে সোয়া এক ঘণ্টা। টেকনাফ থেকে ৫ কিলোমিটার আগে জেটি ঘাটে নেমে ট্রলার বা সি-ট্রাকে করে সেন্টমার্টিন যেতে হবে। আপ-ডাউন ভাড়া পড়বে ৫৫০-৮০০ টাকা।
জেটি ঘাট থেকে প্রতিদিন সি-ট্রাক সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় সকাল ৯.০০-৯.৩০ মিনিটে এবং সেন্টমার্টিন থেকে ফেরত আসে বিকাল ৩.০০-৩.৩০ মিনিটে। সুতরাং নির্দিষ্ট সময়ের আগে অবশ্যই জেটি ঘাটে পৌঁছতে হবে নতুবা সি-ট্রাক মিস করবেন। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ট্রলারে করে যেতে হবে যা কিছুটা বিপদজনক। যারা রাতে থাকবেন তারা পরেরদিন একই সি-ট্রাকে করে ফেরত আসবেন।
সেন্টমার্টিনে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি উন্নতমানের হোটেল ও কটেজ রয়েছে। তবে অবশ্যই তা আগে থেকে বুকিং দিয়ে যেতে হবে। নতুবা থাকার জন্য ভাল জায়গা পাওয়া যাবে না। এছাড়াও সেখানে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটকদের খাবারের জন্য রয়েছে এখানে বেশ কিছু হোটেল ও রেস্তোরাঁ।
প্রবালের উপর হাটার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে নতুবা পা কেটে যেতে পারে। ভাটার সময় বিচে না নামাই ভালো। বিচের বালু বা পানিতে কোনো প্রকার ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। এর সৌন্দর্য রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। সি-ট্রাকে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে জেটিতে উপস্থিত হোন। যেহেতু সমুদ্রপথে যেতে হবে তাই যাবার পূর্বে আবহাওয়া সম্পর্কে তথ্য জেনে নিন।