ফাহিম ইবনে সারওয়ার
পোল্যান্ড আক্রমেণের তিন বছর আগে ১৯৩৬ সালে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাডলফ হিটলার বিশ্বের সর্ববৃহৎ ট্যুরিস্ট রিসোর্ট তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। রুগেন দ্বীপের সৈকতের কাছেই গড়ে তোলা হয়েছিল এই রিসোর্ট।
নাৎসিদের কাছে রিসোর্টটি পরিচিত ছিল প্ররা নামে। একসাথে ২০ হাজার মানুষ ধারণক্ষমতার রিসোর্টটি হিটলারের গোপন পুলিশ বাহিনী গেস্টাপোর সদস্যদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
জার্মান ইতিহাসবিদ এবং ট্যুর গাইড রজার মুরহাউজ টেক ইনসাইডারকে জানিয়েছেন, ‘হিটলারের গোপনবাহিনী গেস্টাপোর সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে আশ্রয় নিতেন এই রিসোর্টে। এ ছাড়া নির্মাণকাজের সাথে জড়িত শ্রমিকরা টানা পরিশ্রমের পর প্ররাতেই বিশ্রাম নিতেন। নির্মাণকাজ শুরু হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্ররার কাজ বন্ধ হয়ে যায় এবং পরে তা আর শেষ হয়নি।’
২.৭ মাইল লম্বা দালানটি তৈরিতে কাজ করেছিল ৯ হাজার শ্রমিক। আকারে এটি ছিল অত্যন্ত বিশাল, কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলা এবং এর মাধ্যমে হিটলারের পতনের পর অনেকটাই আড়ালে চলে গিয়েছিল হিটলারের স্বপ্নের এই রিসোর্ট।
রজার মুরহাউজ বলেন, ‘এটা যে কত বড় সেটা শুধু কয়েকটা ফটোগ্রাফ দেখে ধারণা করা সম্ভব নয়।’
প্ররা আবার আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে। যখন জার্মান রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান মেট্রোপল মার্কেটিং প্ররার সংস্কার এবং বাকি নির্মাণকাজ শেষ করার দায়িত্ব নেয়। মেট্রোপলের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিলাসবহুল রিসোর্ট এবং অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স হিসেবে গড়ে তোলা হবে প্ররাকে।
দুই ভাগে আট ব্লকে ভাগ করা হয়েছে প্ররাকে। যার এক ভাগে থাকবে প্ররা সলিটেয়ার হোম এবং প্ররা সলিটেয়ার হোটেল অ্যাপার্টমেন্ট অ্যান্ড স্পা।
২০১৬ সালের মাঝামাঝি প্ররার সংস্কার এবং বাকি নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মেট্রোপল। ইতিমধ্যে এসব অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। এসব অ্যাপার্টমেন্টের দাম ধরা হয়েছে এক লাখ ৩৭ হাজার মার্কিন ডলার থেকে এট লাখ ৭৬ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত। দামের এই পার্থক্য নির্ভর করছে ফ্ল্যাটের আকারের ওপর। যারা বিলাসী জীবন যাপনে অভ্যস্ত তাদের জন্য প্ররাতে থাকছে পেন্টহাউস স্যুইটস।
তবে ছোট-বড় যে অ্যাপার্টমেন্টই হোক প্ররা থেকে বাল্টিক সমুদ্রের অসাধারণ দৃশ্য দেখা যাবে। জার্মানির রাজধানী বার্লিন থেকে প্ররাতে গাড়ি করে পৌঁছুতে সময় লাগবে তিন ঘণ্টার মতো। তাই নির্মাতারা আশা করছেন ট্যুরিস্টদের কাছে আকাঙ্ক্ষিত গন্তব্য হবে প্ররা। সৌজন্যে : এনটিভি