নানা আনুষ্ঠানিকতা আর হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে যাত্রা শুরু করল ১৮ শতকের ফরাসি যুদ্ধ জাহাজ হারমিওন। ১৭৮০ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করতে সৈন্যবাহী যুদ্ধ জাহাজটি পাঠায় ফ্রান্স। দুইশ’ বছরেরও বেশি সময় পর দুই দেশের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে ঐতিহাসিক এই জাহাজের অবিকল অনুকৃতি তৈরি করেছে ফ্রান্স। শনিবার মহাসমারোহে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ছেড়ে যায় জাহাজটি।
হারমিওনের যুক্তরাষ্ট্র যাত্রা উপলক্ষে শনিবার ফ্রান্সের চারান্টা নদীর তীরে জড়ো হয় হাজারো মানুষ। সবার অধীর অপেক্ষা ঐতিহাসিক জাহাজের ঐতিহাসিক যাত্রার সাক্ষী হওয়া।
একজন বলেন, ‘আমার মেয়ে এই জাহাজের স্বেচ্ছাসেবক হয়ে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছে। আমি যদি ওর বয়সী হতাম তবে আমিও ওর সাথে যেতাম। কিন্তু বয়সের কারণে যেতে পারছি না। ওর জন্য এটি একটা দারুণ অভিজ্ঞতা। এ রকম সুযোগ জীবনে একবারই আসে।’
আড়ম্বর এই আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত ছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদও। জাহাজটি ফরাসি ইতিহাসের অন্যতম সাক্ষী বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ বলেন, ‘হামমিওন আমাদের ইতিহাসের একটি উজ্জ্বল অধ্যায়। এটি ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বের প্রতীক, এটি বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতা আর অসম সাহসিকতার প্রতীক।’
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আতশবাজির বর্ণিল আলোকছটায় একসময় যাত্রা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের বন্ধুত্বের প্রতীক হারমিওন। প্রায় দুই মাসের যাত্রা শেষে আগামী ৫ জুন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছার কথা রয়েছে হারমিওনের। এসময়, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম স্মৃতিবিজরিত অ্যানাপোলিস, বোস্টন, ফিলাডেলফিয়া এবং নিউ ইয়র্ক শহর সফর করার কথা রয়েছে ঐতিহাসিক এই জাহাজটির।
গ্রিক পুরাণ মতে, ট্রয় নগরীর রাজা মেনেলস এবং হেলেনের কন্যা ছিলেন হারমিওন। তারই নামানুসারে ১৭৭৯ সালে নির্মিত হয় এই বিশালাকৃতির যুদ্ধজাহাজটি। ১৭৮০ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ উপনিবেশের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করতে সৈন্যবাহী জাহাজটি নিয়ে রওনা হন সে সময়কার ফরাসি জেনারেল লাফায়েট। সে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও ১৭৯৩ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধেই অপর এক যুদ্ধে সমুদ্রে বিধ্বস্ত হয়ে ডুবে যায় হারমিওন।
সৌজন্যে : সময় টিভি