:: মো. সুমন হোসেন ::
‘মৌমাছি মৌমাছি কোথা যাও নাচি নাচি, দাঁড়াও না একবার ভাই/ওই ফুল ফোটে বনে, যাই মধু আহরণে, দাঁড়াবার সময় তো নাই’- নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের কবিতায় উল্লেখিত মৌমাছিরা মধু আহরণের পর যেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের পিপুলিয়া ব্রিজের নিচে অবস্থান নিয়েছে। হরিরামপুরের ব্রিজের নিচে ঝুলন্ত মৌচাকের সারি তারই সাক্ষ্য দেয়। ব্রিজটির নিচে প্রায় ৫০টি মৌচাকে মৌমাছি বাসা বেঁধেছে। একসাথে এত মৌচাক থাকার কারণে প্রায় প্রতিদিনই শত শত মানুষ মৌচাক দেখার জন্য ব্রিজের কাছে ভিড় করছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে ব্রিজটিতে মৌমাছি বাসা বাঁধে। বছরের অন্য সময় ২০-২৫টি মৌচাক থাকলেও শীতকালে মৌমাছির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কারণ শীত মৌসুমে খেতের পর খেতে চাষ হয় সরিষা। ফলে শরিসা মৌসুম আসতেই বাড়তে থাকে মৌমাছির চাক। কিন্তু সেটা যে এত হবে তা বোধকরি অনেকের ধারণাতেই আসেনি। একই জায়গায় প্রায় ৫০টি মৌচাক তাই এলাকাবাসীর মনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। সে খবর যখন এলাকা ছাড়িয়ে বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে তখন ঢল নামে মানুষের। এখন তাই প্রতিদিন মৌচাকগুলো দেখতে লোকসমাগম লেগেই থাকে।
এ বিষয়ে জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামের অজয় সাহা বলেন, ‘হরিরামপুর-বলড়া সড়কের পিপুলিয়ার ৪৫ ফুট ব্রিজের নিচে সারা বছরই মৌমাছির চাক থাকে। এ বছর ৫০টি চাক হয়েছে, যা আগে কখনো দেখা যায়নি।’
স্থানীয় মো. সমের আলী বলেন, ‘মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে চাক ঘিরে ঘুরে বেড়ায়। তখন এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে মৌমাছির উড়ে চলার ভোঁ ভোঁ শব্দ।’
হরিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ব্রিজের চারদিকে বিভিন্ন শস্যের খেত থাকায় সারা বছর মৌমাছিদের খাবারে কোনো সমস্যা হয় না। তাই মৌমাছির পরিমাণও বেশি থাকে। অন্যদিকে জায়গাটি মৌমাছির নিরাপদ আশ্রয়স্থল হওয়ায় সারা বছরই এখানে মৌমাছিরা মৌচাক গড়ে। শীত মৌসুমে চাকের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এবারই প্রথম মৌচাকের পরিমাণ অধিক হয়েছে। স্থানীয়রা মৌমাছিদের ঘাঁটায় না বলে তাদের আক্রমণের শিকারও হয় না কেউ। তাই অনেক মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে মৌমাছির চাক দেখার জন্য আসেন। সৌজন্যে: প্রিয়.কম