দশটি উদ্ভট হোটেল বিভাগঃ বাছাইকৃত, রকমারি July 25, 2015 402 বার দেখা হয়েছে দেখতে হয়ত জেল কিংবা রাস্তায় বসানোর পানির পাইপ অথবা অতিকায় কাঠের পিপের মতো। অথচ এরা সবাই এক-একটি সুপরিচিত হোটেল… হোটেলের প্রত্যেকটি ঘর যেন শিল্পকলা কোনো ঘরে শয্যা বলতে একটি কফিন। কোনো ঘরে আসবাবপত্র ঝুলছে ছাদ থেকে। একটি ঘরের চতুর্দিকে আয়না লাগানো – একেবারে শিশমহল! বার্লিনের এই হোটেলটির নাম ‘প্রপেলার আইল্যান্ড’। এর ডিজাইন করেছেন শিল্পী লার্স স্ট্রশেন। এমনকি তিনি প্রতিটি ঘরের জন্য আলাদা মিউজিক কমপোজ করতেও ভোলেননি…। রেলগাড়ি ঝমাঝম বার্লিন থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে ইয়্যুটারবোগ। সেখানে অতিথিরা ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ের আস্বাদ পেতে পারেন। স্লিপার কোচ হোটেলটিতে ২৫ জন অতিথির থাকার জায়গা আছে। প্রত্যেক কম্পার্টমেন্টে একটি করে ডাবল বেড, সেই সঙ্গে বসার জায়গা ও একটি বাথরুম। বাক্সের মধ্যে ঘুমনো জার্মানির পূর্বাঞ্চলে কেমনিৎস-এর কাছে লুনৎসেনাউ শহরের ‘কফটেল’ বা বাক্সো হোটেলটিকে বিশ্বের খুদেতম হোটেল বললেও সম্ভবত দোষ হবে না। ২০০৪ সালে সৃষ্ট হোটেলটির প্রতিটি ঘর একটি সুটকেসের আকারে। ঘর বলতে দেড় মিটার চওড়া, তিন মিটার লম্বা আর দু’মিটার উঁচু। বিছানা নিজেকেই নিয়ে আসতে হয়। রাত কাটানোর খরচ: ১৫ ইউরো। বছরে শ’পাঁচেক অতিথি এই বাক্সো হোটেলে রাত কাটান। হবিটরা যেখানে থাকে টলকিয়েন-এর ‘লর্ড অফ দ্য রিংস’-এর কল্যাণে হবিটদের আর কে না চেনে? তবে হবিটদের ওয়াইল্ডারল্যান্ড দেখার জন্য নিউজিল্যান্ডের ফিল্মসেটে যেতে হবে না। হবিটরা যেভাবে বাস করত, জার্মানির টুরিঙ্গিয়া প্রদেশের জঙ্গলেও তা করা সম্ভব – এই হোটেলটির কল্যাণে। ‘ড্যান্সেস উইথ উল্ভস’ সন্ধ্যা নামছে, আঁধার ঘনাচ্ছে, কোথাও কোনো মানুষের সাড়া নেই। এই হলো উত্তর জার্মানির ব্রেমেন শহরের কাছে ‘ট্রি ইন’ বা বৃক্ষ হোটেলের পরিবেশ। ড্যোরফার্ডেন-এ বাচ্চা নেকড়েদের রাখার জন্য যে ‘এনক্লোজার’ আছে, তার ঠিক মাঝখানে এই ট্রিহাউস হোটেল। পাঁচ মিটার উঁচুতে কাচে ঘেরা কামরা থেকে পরম আরামে নেকড়ে দেখা যায় – কেননা এখানে মিনি-বার থেকে হুইর্লপুল, কোনো আধুনিক বিলাসিতার অভাব নেই। পানির পাইপে বাস জার্মানির রুর শিল্পাঞ্চলের বট্রপ শহরের পার্ক হোটেলে রাস্তায় বসানোর পানির পাইপগুলোকে কামরায় পরিণত করা হয়েছে। রাত কাটানোর কোনো বাঁধা ভাড়া নেই, যে যা পারেন, তা-ই দেন। পানির পাইপগুলোর ব্যাস প্রায় আড়াই মিটার; এক একটা সেকশনের ওজন সাড়ে ১১ টন। ভিতরে বিছানা আর একটা সাইড টেবল ঠিকই ধরে যায়। লৌহকপাট আগে এখানে জেলের আসামিরা বন্দি থাকতেন। আজ সেখানে ক্রাইম থ্রিলার-এর ফ্যানরা রাত কাটান। জার্মানির কাইজার্সলাউটার্ন শহরের আল্কাত্রাজ হোটেলে মোট ৫৬টি কামরা ও সুইট আছে। আজও এখানে সর্বত্র গারদ ও লোহার শিক – এমনকি হোটেলের পানশালাটিতেও। তবে অতিথিরা মর্জিমতো আসতে-যেতে পারেন। মদের পিপেতে শয্যা এককালে যেখানে ওয়াইন মজুদ রাখা হতো, সেখানে আজ রাত কাটানো যায়। রাইন নদের ধারে রুডেসহাইম শহরের লিন্ডেনভির্ট হোটেলটিতে ছ’টি অতিকায় কাঠের পিপে আছে। পিপেগুলোয় মোট ছ’হাজার লিটার সুরা ধরতো। আজ তার বদলে দু’জন অতিথির শোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বসবার ঘরটা পিপের বাইরে। মধ্যযুগের নাইটদের মতো দক্ষিণ জার্মানির লেক কন্সটান্স-এর কাছে আর্টুস হোটেলে ঢুকলে মনে হবে, যেন মধ্যযুগে প্রবেশ করেছেন। কামরাগুলো যেন মধ্যযুগের কোনো সরাইখানার অনুকরণে সাজানো, খাবারদাবার নাইটদের আমলের ভুরিভোজ…। শীতকাতুরেদের জন্য নয় নাম ইগলু লজ। ইগলু বলতে উত্তরমেরু অঞ্চলের এস্কিমোদের বরফের ঘর। ওবার্স্টডর্ফ-এ নেবেলহর্ন পাহাড়ের উপর এই বরফের হোটেলটি ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস অবধি খোলা থাকে। ৪০ জন অতিথি এখানে দু’জন কিংবা চারজনের ইগলুতে রাত কাটাতে পারেন। সেই সঙ্গে রয়েছে – ভোর হলে – দু’হাজার মিটার উচ্চতা থেকে আল্পস পর্বতমালার অনুপম দৃশ্য। 2015-07-25 Dhaka Tourist Club tweet