লিবিয়ার ভিসার স্বীকৃতি দেবে না বাংলাদেশ বিভাগঃ ডিটিসি ভ্রমণ বার্তা, বাছাইকৃত July 26, 2015 335 বার দেখা হয়েছে ঢাকায় অবস্থিত লিবিয়া দূতাবাস থেকে ইস্যু করা কোনো ভিসার স্বীকৃতি দেবে না বাংলাদেশ। এই ভিসা নিয়ে কোনো বাংলাদেশী বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন অতিক্রম করতে পারবেন না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইমিগ্রেশনকে এ নির্দেশনা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের (সিডিএ) পদ নিয়ে লিবিয়া দূতাবাসের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপ নিয়েছে। লিবিয়া দূতাবাসের লেবার কাউন্সিলার খালেদ মুহাম্মদ আবু সাইদ নিজেকে সিডিএ দাবি করেছেন। তিনি সাবেক সিডিএ মাহমুদ এমএম সালাবির সাথে কোনো যোগাযোগ না রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, লিবিয়ার অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে ঢাকায় অবস্থিত দূতাবাসে। খালেদ মুহাম্মদ আবু সাইদ নিজেকে সিডিএ দাবি করছেন ঠিকই, কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র লিবিয়া সরকারের কাছ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পায়নি। অন্যদিকে সালাবি গাদ্দাফির আমল থেকেই ঢাকা দূতাবাসে সিডিএ হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তখন লিবিয়াতে একটি সরকারই ছিল। তাই সালাবির সাথে কাজ করাকেই যুক্তিযুক্ত মনে করছে বাংলাদেশ সরকার। তারা জানান, লিবিয়ার অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। রাজধানী ত্রিপোলি ও বন্দর নগরী বেনগাজীকে ভিত্তি করে দেশটিতে দুটি সরকার রয়েছে। বাংলাদেশ এই দুই সরকারের মধ্যে কৌশলগতভাবে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। কেননা পরবর্তী সময়ে লিবিয়ায় এককভাবে কে ক্ষমতায় আসবে তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। এ কারণে মেজর জেনারেল শহীদুল হক ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে যোগ দিলেও এখন পর্যন্ত লিবিয়ার কোনো সরকারের কাছেই পরিচয়পত্র পেশ করেননি। অবনতিশীল পরিস্থিতির কারণে ত্রিপলিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পাশ্ববর্তী দেশ তিউনিশিয়া থেকে দূতাবাসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। লিবিয়া ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে বাংলাদেশীদের পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এদিকে সালাবির অভিযোগের ভিত্তিতে লিবিয়া দূতাবাস থেকে ইস্যু করা কোনো ভিসাকে গ্রহণযোগ্যতা দিচ্ছে না বাংলাদেশ। সালাবি অভিযোগ করেছেন, আবু সাইদ দূতাবাস থেকে বেশ কিছু ভিসা স্টিকার কুক্ষিগত করেছেন। এগুলো ব্যবহার করে ব্যক্তিগত লাভের জন্য আবু সাইদ বাংলাদেশীদের ভিসা ইস্যু করতে পারে। গত শনিবার আবু সাইদ প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ব্যক্তিগতভাবে এবং মিশনের কিছু স্থানীয় কর্মকর্তার লাভের জন্য একটি দুষ্ট চক্রের সাথে জড়িয়ে সাবেক সিডিএ মাহমুদ এমএম সালাবি দূতাবাসের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। এজন্য লিবিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২ জুলাই সালাবিকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করেছে। একই দিন লিবিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে (আবু সাইদকে) ঢাকা সিডিএ’র দায়িত্বভার দিয়েছে। এদিকে ৭ জুলাই পরিচয়পত্র পেশ করলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সাড়া পাননি উল্লেখ করে আবু সাইদ বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী সালাবিকে লিবিয়া পাঠিয়ে দেয়া উচিত। একই সাথে দূতাবাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, লিবিয়ায় চাহিদা থাকা সত্বেও সালাবি গত ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশী শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন থেকে লিবিয়া যাওয়ার জন্য কোনো বাংলাদেশী ভিসা চাইলে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সালাবি ঢাকার বাইরে থাকা অবস্থায় আবু সাইদ নিজেকে সিডিএ দাবি করে দূতাবাসে নিয়ন্ত্রণ নেন। তবে গত ১৫ জুলাই রাতে সালাবি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পুলিশের সহায়তায় লিবিয়া দূতাবাসে প্রবেশ করেছেন। দূতাবাসের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রয়োজন পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে আবু সাইদ অভিযোগ করেছেন, গত ১৫ জুলাই রাত সাড়ে নয়টায় সালাবি ৫০ জন ভাড়াটে দুর্বৃত্তকে সাথে নিয়ে দেয়াল টপকে লিবিয়া দূতাবাসে প্রবেশ করেন। এসময় দূতবাসের কয়েকজন কূটনীতিক কর্মকর্তার ওপর আক্রমণ করা হয়। এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড একজন কূটনীতিকের জন্য মর্যাদাহানীকর। সূত্র : নয়া দিগন্ত 2015-07-26 Dhaka Tourist Club tweet