৭০ বছর পর শেকড়ের সন্ধানে বিভাগঃ ফিচার July 31, 2015 370 বার দেখা হয়েছে সাইফুল ইসলাম টাঙ্গাইলের অত্যন্ত সুপরিচিত একটি জায়গার নাম গোপালপুর উপজেলার হেমনগর। এটি বর্তমানে একটি ইউনিয়ন। আর হেমনগর যে জন্য সবচেয়ে সুপরিচিত তা হচ্ছে এখানে আছে তৎকালীন জমিদার হেরম্ব চন্দ্র চৌধুরী ওরফে হেমচন্দ্র চৌধুরীর প্রতিষ্ঠিত জমিদার বাড়ি। এখানে আজ আর জমিদার নেই। জমিদারের হাজার বেহারার পালকিসহ দাপটও নেই। কিন্তু আজও ভেসে আছে জমিদারদের সম্পর্কে কথিত খ্যাত-অখ্যাত নানান কাহিনী। এমনি কাহিনীর জীবন্ত সাক্ষী হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে হেমনগরের জমিদার বাড়ি। বহু কাহিনী বিজড়িত দালানগুলো পুরনো দিনের বিস্মৃত প্রায় ইতিহাসকে নতুন করে মানুষের মাঝে বাঁচিয়ে রেখেছে। হেমনগরের জমিদার বাড়ি তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, হেমনগরের জমিদার হেরেম্ব চন্দ্র ওরফে হেম চন্দ্র চৌধুরির পিতা কালিবাবু চৌধুরি ছিলেন ব্যবসায়ী। তিনি সূর্যাস্ত আইনের আওতায় শিমুলিয়া পরগণার জমিদারি কিনে নেন। কালিবাবু চৌধুরির ছিল চার ছেলে ও চার মেয়ে। কালিবাবুর ছেলে হেরেম্ব চন্দ্র চৌধুরি জমিদারি দেখা-শোনার দায়িত্ব পান। তিনি গোপালপুর উপজেলার সুবর্ণখালী নামক গ্রামে বাড়ি নির্মাণ করে জমিদারী প্রাসাদ বানান। প্রমত্তা নদী যমুনার ভাঙ্গনে সুবর্ণখালি গ্রাম বিলীন হতে থাকলে তিনি শিমলা পাড়া গ্রামে ১৮৮০ সালের দিকে ১০০ কক্ষ বিশিষ্ট রাজপ্রাসাদ তৈরি করেন এবং এলাকার নামকরণ করেন হেমনগর। দেশ বিভাগের আগ মুহূর্তে পাশ্ববর্তী গ্রামের কৃষক নেতা হাতেম আলী খানের নেতৃত্বে বিদ্রোহ শুরু হয়। বারবার আপোষের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ১৯৪৬ সালের দিকে হেমবাবু জমিদারি গুটিয়ে স্থাবর অস্থাবর সম্প্রতি ফেলে কলকাতা চলে যান। জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরি ১৯৫২ সালে ভারতের কাশিতে মৃত্যুবরণ করেন বলে জানা যায়। কিন্তু তাঁর বংশ ধরেরা এখনও কলকাতার যাদব পুরে বসবাস করেন। তাঁর এমনি এক উত্তরসূরী দুই বাংলার প্রখ্যাত সংগিত শিল্পী পৌলমী গাঙ্গুলী। খোনে তাঁর মা এবং এক ভাই আছেন। তিনি ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্র সংগীতের উপর পিইচডি করেছেন। জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরি দেশ ত্যাগের ৭০ বছর পর গত ২৮জুলাই ২০১৫ তারিখে পৌলমী গাঙ্গুলী এসেছিলেন শেকড়ের সন্ধানে হেমনগর জমিদার বাড়িতে। ঘুরে ঘুরে দেখেন জমিদার বাড়ির আনাচে-কানাছে যেখানে হেমনগর ডিগ্রী কলেজ নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে । আরো দেখেন হেমচন্দ্র কর্তৃক তাঁর সৎ মায়ের নামে ১৯০০সালে প্রতিষ্ঠিত শশীমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও তৎসংলগ্ন ৭টি পুকুর। পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফেরার পথে ঐদিন সন্ধ্যায় গোপালপুর প্রেসক্লাবের স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সাথে মত বিনিময় করেন। সূত্র : নয়া দিগন্ত 2015-07-31 Dhaka Tourist Club tweet