ভাস্করদের উৎসব বিভাগঃ কালচারাল ট্যুরিজম October 18, 2015 145 বার দেখা হয়েছে আনিকা জীনাত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে কুরেমবিন সৈকতের চিত্রটাই বদলে যায়। বালু ফুঁড়ে বের হয়ে আসা তিমি, তারের তৈরি সিংহ কিংবা ডালপালা দিয়ে তৈরি ঈগল সৈকতের গতানুগতিক চরিত্রে আনে অন্য মাত্রা। ওসব পাশ কাটিয়ে সামনে এগোলে চোখে পড়বে প্রবাল। সৈকতে থাকা পাথরগুলো এমনভাবে আঁকা হয়েছে যেন পানির নিচের রংবেরঙের প্রবালগুলো উঠে এসেছে সমুদ্রের উপরিতলায়। এ রকম অভিনব ভাস্কর্যের প্রদর্শনী হয়ে থাকে প্রতিবছর অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের কুরেমবিন সৈকতে। ১৩ বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে এভাবেই চলছে ‘সোয়েল’ নামের এই প্রদর্শনীর আয়োজন। প্রত্যেক বছর সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি শুরু হয় এটি। সবার জন্য উন্মুক্ত এই প্রদর্শনীটি চলে টানা ১০ দিন ধরে। খোলা থাকে ২৪ ঘণ্টাই। চাইলে যেকোনো সময়ই ঘুরে দেখতে পারেন দর্শকরা। তবে বিকেলের হালকা আলোতেই এই প্রদর্শনী বেশি জমে ওঠে। এই আয়োজনের অংশ হিসেবে আরো থাকে যোগ ব্যায়াম এবং বাচ্চাদের ছবি আঁকার কর্মশালাও। শুধু তা-ই নয়, রাতের বেলায় এই প্রদর্শনী দেখার সঙ্গে সঙ্গে দর্শনার্থীরা এখানে গান শুনেও সময় কাটাতে পারে। উৎসব চলাকালে বেলায় বেলায় কুরেমবিন সৈকতেরই রূপ পাল্টায় না; সৈকতের ধারে রাখা ভাস্কর্যগুলোও একেক সময় একেক রূপ ধারণ করে। তিমির ভাস্কর্যটির কথাই ধরা যাক না। দিনের আলোতে এই ভাস্কর্যের বিশেষত্ব তেমন বোঝা যাবে না। কিন্তু আলো কমে আসতে শুরু করলেই প্রকাশিত হবে তিমিটির আসল সৌন্দর্য। ভাস্কর্যের ভেতরে এলইডি লাইট ব্যবহার করায় অন্ধকারে তিমিটিকে দেখতে চমৎকার লাগে। চাইলেই এই প্রদর্শনীতে যে কেউ তাঁদের নির্মিত ভাস্কর্যগুলো প্রদর্শন করতে পারেন তা কিন্তু নয়। এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারীদের দারুণ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আসতে হয়। অনলাইনে নিজের বানানো ভাস্কর্যের ছবি জমা দিতে হয় বিচারকদের কাছে। তবে প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে সেরা নির্বাচন করেন দর্শনার্থীরাই। প্রতিযোগিতায় জিতলে বিজয়ীর হাতে তুলে দেওয়া হয় ২৫ হাজার ডলার। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি বিদেশি শিল্পীরাও এতে অংশ নেন। থাকেন যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও নিউজিল্যান্ডের শিল্পীরাও। এখানে ভাস্কররা যেকোনো জিনিস দিয়েই মূর্তি, প্রতিকৃতি বা স্থাপনা তৈরি করতে পারেন। কাগজ থেকে শুরু করে ইস্পাত, তার, বেড়া, ডালপালা, যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন উপাদান দিয়েই এ ভাস্কর্যগুলো তৈরি করা হয়। এই আয়োজন শুধু প্রদর্শনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আগত দর্শনার্থীরা এখানে অনুষ্ঠিত কর্মশালাগুলোতেও অংশ নিতে পারেন। প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ লোক এই প্রদর্শনী দেখতে আসেন। সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ 2015-10-18 Dhaka Tourist Club tweet