এবারের ঈদের ট্যুরে ভ্রমণ তালিকায় বাড়ানো হয়েছে জৈন্তা হিলস এলাকা। ক্রাং সুরি ফলস সেখানকার অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়াও রয়েছে নাশপাতি বাগান, পিলারের উপর দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়, পাহাড়ি নদী, নদীর ওপর রড-সিমেন্ট ছাড়া নির্মিত স্টোন ব্রিজ, হাইওয়ের দুই পাশের মনোরম দৃশ্যসহ আরো অনেক কিছু। বাদ দেয়া হয়নি শ্নোনেংপেডেং। চেরাপুঞ্জি এলাকায়ও স্পট বাড়ানো হয়েছে। নতুন যোগ করা হয়েছে চেরাপুঞ্জির সবচেয়ে প্রশস্ত দেইন তালেং ফলস। শিলং শহরের নীল কাঁচ দিয়ে ঘেরা দৃষ্টিনন্দন মদিনা মসজিদসহ স্পট বাড়ানো হয়েছে প্রায় ১০টি। সব মিলে স্পট সংখ্যা প্রায় ৩০টি। ভ্রমণের সময় বাড়ানো হয়েছে এক দিন।
প্যাকেজ মূল্য: ১৭,৯৫০/= টাকা। এই খরচের মধ্যে রয়েছে ই-টোকেন, ভিসা ফি, ট্রাভেল ট্যাক্স, ঢাকা-তামাবিল-ঢাকা রিজার্ভড বাস, রিজার্ভড গাড়িতে সাইটসিয়িং, শিলংয়ের পুলিশ বাজার অথবা বড় বাজারে তিন রাত হোটেলে অবস্থান। সকালের নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবার। ট্যুরিস্ট প্লেসে এন্ট্রি টিকেট ও ক্যামেরা ভাড়া। গাড়ি পার্কিং। ড্রাইভারের খাবার। গাইড সম্মানী।
কবিগুরু রবীন্দ্র্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু…।’
সিলেট থেকে শিলং, চেরাপুঞ্জি আর জৈন্তা হিলস ঘুরতে যাওয়ার বেলায় সম্ভবত কবিগুরুর এ কথাটি একেবারেই সত্যি। সিলেট থেকে মাত্র তিন ঘণ্টা দূরত্বের পথ শিলং।
ছোটবেলায় জাফলংয়ে যখন ঘুরতে যেতাম তখন দেখতাম দুটি পাহাড়ের মিলন ঘটিয়েছে একটি সুন্দর ব্রিজ। মা-বাবা দেখিয়ে বলতেন সামনেই ভারত। আবার বিছানাকান্দিতে গিয়ে দেখলাম দুরে একটি অসাধারণ ঝরনা কিন্তু কাছে যাওয়ার সুযোগ নেই। খুব খারাপ লেগেছিল। এত সুন্দর দৃশ্য তা কেন ভারতে পড়ল।
তখন মনে মনে ভেবেছিলাম একদিন না একদিন আমি ওই ব্রিজ আর ঝরনায় যাবই।
এবার সেই স্বপ্ন পুরণের পালা। গন্তব্য মেঘের আলয়-মেঘালয়ের রাজধানী শিলং আর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের চেরাপুঞ্জি। বোনাস হিসেবে থাকছে জৈন্তা হিলস এলাকা ভ্রমণ।
শিলং-চেরাপুঞ্জিতে আমাদের কয়েকটি ট্যুরের ছবি

শ্নোনেংপেডেং গ্রামে উমগট নদীতে লায়ন্স ক্লাবকে সাথে নিয়ে ঢাকা ট্যুরিস্টের শিলং-চেরাপুঞ্জি ট্যুর। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান।

ইন্ট্রাকো ডিজাইনের কর্মীদের সাথে নিয়ে ঢাকা ট্যুরিস্টের শিলং-চেরাপুঞ্জি ট্যুর। ছবি: হাসানুজ্জামান।

বুরহিল ঝরনাকে পেছনে রেখে ফারুক হোসাইনের ক্যামরায় তোলা ছবি। সিলেটের বিছানাকান্দি গেলে এই ঝরনাটিকে আমরা পান্থুমাই বলি। আসলে পান্থুমাই নামে কোনো ঝরনা নেই। পান্থুমাই একটি গ্রামের নাম। এখানে নামার পর কারোই মনে হয়নি আমরা ক্ষুধার্ত।

চেরাপুঞ্জির ওয়াকাবা ফলসের সামনে ঢাকা ট্যুরিস্টের ট্রাভেলাররা। যেখানে মেঘ প্রতিনিয়ত আসে খেলা করতে। ছবি: নিলয় মামুন।

মেঘ পাহাড় আর ঝরনাকে সাথে নিয়ে এই ছবিটি তুলেছেন চ্যানেল আই-এর বিজ্ঞাপনী সংস্থা পজেটিভ আই-এর রকিকুল হক রকি।

ঢাকা ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীদের সেলফি। চেরাপুঞ্জির ওয়াকাবা ফলস এলাকা। যেখানে মেঘের নানা ধরনের মুভমেন্ট দেখা যায়।

টিম লিডার মোস্তাফিজুর রহমান। জৈন্তা হিলস এলাকায় ছবিটি তুলেছেন হাসানুজ্জামান। এই ঈদ ট্যুরেও থাকছেন টিম লিডার ও গাইড হিসেবে।
শিলং, চেরাপুঞ্জি সম্পর্কে আরো জানুন নিচের লেখাগুলোয় ক্লিক করে:
চেরাপুঞ্জি, শিলং, মেঘালয় ভ্রমণ
এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম মাওলিনং
বৃষ্টিভেজা চেরাপুঞ্জি
সাত বোনের কমলা দ্বীপ
হাতি ঝরনা মেঘালয়
মেঘের আলয় মেঘালয়
মেঘের ওপাশে ঝরনা
বৃষ্টির ভিতর চেরাপুঞ্জি
ভ্রমণ শুরু: প্রথম গ্রুপ: ২৭ জুন ২০১৭, মঙ্গলবার, রাত ১০টা। দ্বিতীয় গ্রুপ: ২৯ জুন ২০১৭, বৃহস্পতিবার, রাত ১০টা।
ভ্রমণ সমাপ্তি (সম্ভাব্য সময়) : প্রথম গ্রুপ: ০১ জুলাই ২০১৭, শনিবার, রাত ১১টা। দ্বিতীয় গ্রুপ: ০৩ জুলাই ২০১৭, সোমবার, রাত ১১টা।
ভ্রমণ সময়কাল: ৫ রাত ৪ দিন।
ইভেন্ট খরচ জনপ্রতি: ১৭,৯৫০/= (সতের হাজার নয়শত পঞ্চাশ টাকা)
ট্রাভেল রুট: ঢাকা > তামাবিল > ডাউকি > বুরহিল > লিভিং রুট ব্রিজ > মাউলিনং > শিলং > চেরাপুঞ্জি > শিলং > জৈন্তা হিলস > ক্রাং সুরি ফলস > শ্নোনেংপেডেং > ডাউকি > তামাবিল > ঢাকা।
খরচের অন্তর্ভূক্ত: ই-টোকেন, ভিসা ফি, ট্রাভেল ট্যাক্স, ঢাকা-তামাবিল-ঢাকা রিজার্ভড বাস, রিজার্ভড গাড়িতে সাইটসিয়িং, শিলংয়ের পুলিশ বাজার অথবা বড় বাজারে তিন রাত হোটেলে অবস্থান। খাবার: ভারত ভূখণ্ডে মেনু নির্ধারিত খাবার (সকালের নাস্তা ৪টি, দুপুরের খাবার ৪টি, রাতের খাবার ৩টি)। ট্যুরিস্ট প্লেসে এন্ট্রি টিকেট ও ক্যামেরা ভাড়া। গাড়ি পার্কিং। ড্রাইভারের খাবার। গাইড সম্মানী।
খরচের অন্তর্ভূক্ত নয়: বাংলাদেশ ভূখণ্ডের খাবার (একটি সকালের নাস্তা, একটি রাতের খাবার), টিপস, মেডিক্যাল সার্ভিস, ব্যক্তিগত খরচ, নির্ধারিত সময়ের বেশি বা কম দিন থাকা, অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির খরচ, যা অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি এমন খরচ।
বুকিং মানি: ৮,০০০/= টাকা। সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করতে হবে ভিসা কনফর্ম হওয়ার পরে।
ভ্রমণ বাতিল বা ভিসা না হওয়া: ব্যুকিংয়ের পর ভিসা না হলে ভিসা ফি ও সার্ভিস চার্জ বাবদ ১,৫০০/= টাকা বাদ দিয়ে বাকি টাকা ফেরত দেয়া হবে। এম্বাসিতে পাসপোর্ট জমা দেয়ার পর কেউ ভ্রমণ বাতিল/ তারিখ পরিবর্তন করলে ভিসা ফি, বাস ভাড়া কনফর্মেশন, আনুসঙ্গিক খরচ ও সার্ভিস চার্জ বাবদ ৬,৬০০/= টাকা কর্তন করা হবে। ভিসা হওয়ার পর ভ্রমণ বাতিল/তারিখ পরিবর্তন করলে ভিসা ফি, বাস ভাড়া কনফর্মেশন, হোটেল বুকিং, আনুসঙ্গিক খরচ ও সার্ভিস চার্জ বাবদ ৭,৬০০/= টাকা কর্তন করা হবে।
পূর্ব থেকে ভিসা থাকলে: এই রুটে (বাই রোড ডাউকি) পূর্ব থেকে কারো ভিসা থাকলে তিনি মোট মূল্যের ১,০০০/= টাকা ডিসকাউন্ট পাবেন। হরিদাসপুর কিংবা বাই এয়ার কিংবা অন্য রুটে যাদের ভিসা আছে তাঁরাও এই রুটে ট্রাভেল করতে পারবেন। এই রুটের অনুমতিসহ তাঁদের খরচও ১৭,৯৫০/= টাকা।
************************
যারা গ্রুপে যেতে পারবেন না তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা। প্রায় প্রতি মাসে আমাদের গ্রুপ ট্যুর হয়।
কমপক্ষে ৮ জন হলে একই খরচে বিশেষ গ্রুপ। কর্পোরেট ট্যুর ও কাস্টমাইজ ট্যুর আলোচনা সাপেক্ষে।
যোগাযোগের ঠিকানা: ১৮০-১৮১, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণী (অষ্টম তলা), বিজয় নগর, ঢাকা- ১০০০।
মোবাইল: ০১৬১২ ৩৬০৩৪৮ (মোস্তাফিজুর রহমান)
************************
সম্ভাব্য স্পট
Day 01: Dawki River (Jaflong), Burhill Water Falls (Panthumai), Moulinnong (Asia’s cleanest village), Living Root Bridge.
Day 02: Shillong Peak, Elephant Falls, Lady Hydari Park, Catheril Catholic Church, Golf Link, Blue Mosque, Police Bazar.
Day 03: Mawkdok View Point, Wakaba Falls, Dain Thlen Falls, Nohka Li Kai Falls, Mawsmai Cave, Ramkrishno Mission, Eco Park, Nohsngithiang Falls (Seven Sisters Falls).
Day 04: Jowai and Jainta Hills area, Krang Shuri Falls, Shnongpdeng, Umngot (Dowki River).

বুরহিল। আমরা যাকে পান্থুমাই নামে চিনি। বিছানাকান্দি গিয়ে এটি দেখি। প্রথম দিন যাব এখানে। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান।

ডাউকি নদীর উৎসে যাব শেষ দিন, স্থানটির নাম শ্নোনেংপেডেং। ছবি: এনামুল হক ও রকিবুল হক রকি।
ভ্রমণপথ ও নির্দেশিকা
শূন্য দিন: রাত ১০টায় ঢাকার কাকরাইল থেকে সিলেটের তামাবিলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু। সারা রাত গাড়িতে অবস্থান।
প্রথম দিন
সকাল ৭টা: সিলেটে সকালের নাস্তা শেষে তামাবিল ও ডাউকিতে ইমিগ্রেশনের কাজ সম্পন্ন। ইমিগ্রেশনের কাজ প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে করতে হবে। গাড়ি থেকে নেমে প্রথমেই ইমিগ্রেশনের ফরম পূরণ করে নিতে হবে। এরপর এসবি ও পরে কাস্টমস চেক হবে। দুটি স্থানেই স্বাক্ষর দিতে হবে। ট্রাভেল ট্যাক্স দিতে হবে কাস্টমসে। পরে আরো একটি চেকপোস্টে (বিজিবি) পাসপোর্ট দেখাতে হবে। ভারতের অংশে বিএসএফ প্রথমে পাসপোর্ট দেখবে। সেখান থেকে ওকে হওয়ার পর ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। এখানে একটি স্থানে পাসপোর্ট জমা ও একটি স্থানে পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে। ইমিগ্রেশন শেষে নির্ধারিত গাড়িতে উঠতে হবে। কারো ইমিগ্রেশন আগে শেষ হলে তিনি অপেক্ষা করবেন।
ইমিগ্রেশনের পর: ডাউকি নদী যেখানে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে (জাফলং) সেই জায়গাটি দেখব। সেখান থেকে বুরহিল ঝরনার উদ্দেশে রওয়ানা দেব। সিলেটের বিছানাকান্দি ভ্রমণের সময় যে ঝরনাটি আমরা দূর থেকে দেখি এবং পান্থুমাই নামে যেটিকে চিনি ভারতে সেটিই বুরহিল ঝরনা। ব্রিজের উপর ও পাশ থেকে ঝরনাটি দেখা যাবে ও ছবি তোলা যাবে। ঝরনায় নামা যাবে না।
বেলা ১টা: দুপুরের খাবার গ্রহণ।
বেলা ২টা: মাউলিনং ভিলেজ (এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম) ও লিভিং রুট ব্রিজ ভ্রমণ (পাহাড়ি নদীর উপর গাছের শেকড়ের তৈরি সেতু)। লিভিং রুট ব্রিজে পৌঁছাতে প্রায় ১০ মিনিট হেটে নিচে নামতে হবে। উঠতে সময় লাগতে পারে প্রায় ২৫ মিনিট। উঠা-নামার জন্য সিঁড়ির ব্যবস্থা আছে।
বিকেলে শিলংয়ের পুলিশ বাজারে পৌঁছা, হোটেলে রুম বরাদ্দ ও রিফ্রেশমেন্ট। হোটেলে পৌঁছার পর অফিসিয়াল আনুষ্ঠানিকতার কারণে রুম বরাদ্দে কিছুটা সময় লাগতে পারে। এজন্য রিসিপশনে অপেক্ষা করতে হবে। হোটেলে সবাইকে পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
রাত সাড়ে ৯টা: রাতের খাবার গ্রহণ। পরিচিতি অনুষ্ঠান ও টিম লিডারের ব্রিফিং।
রাতে হোটেলে অবস্থান।

পাহাড়ি নদীতে গাছের শেকড়ের তৈরি সেতু, এশিয়ার পরিচ্ছন্ন গ্রাম মাউলিনং যেখানে। দেখব প্রথম দিন। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান, এনামুল হক ও রকিবুল হক রকি।

এশিয়ার পরিচ্ছন্নতম গ্রাম মাউলিনং। প্রথম দিন যাব এখানে। ছবি: এনামুল হক।
দ্বিতীয় দিন
সকাল ৭টা: সকালের নাস্তা গ্রহণ।
সকাল ৭টা ৩০ মিনিট: শিলং সাইটসিয়িং। স্থান: শিলং পিক, এলিফ্যান্ট ফলস, লেডি হায়দারি পার্ক, ক্যাথরিল চার্চ, গালফ লিঙ্ক, পুলিশ বাজার।
শিলং পিক এলাকাটি বিমান বাহিনী নিয়ন্ত্রিত একটি সংরক্ষিত এলাকা। এখানে প্রবেশের পূর্বে সবাইকে গেটে পাসপোর্ট জমা ও স্বাক্ষর দিতে হবে। এজন্য কিছুটা সময় লাইনে দাঁড়াতে হতে পারে। প্রায় পাঁচ হাজার ফুট উচ্চতার শিলং পিক থেকে শিলং শহরের অধিকাংশ স্থান দেখা যায়। এখানে একটি বাইনোকুলার আছে। টিকেট কেটে এটি ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া এখানে নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধপূর্বক খাসিয়াদের ট্রেডিশনাল ড্রেস পরিধান করে ছবি তোলার ব্যবস্থা রয়েছে। এলিফ্যান্ট ফলস-এ নামতে প্রায় ১০ মিনিট ও উঠতে প্রায় ২৫ মিনিট সময় লাগবে। উঠা-নামার জন্য সিঁড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। সিঁড়িগুলো কিছুটা খাড়া। অসাধারণ তিনটি ঝরণার সবগুলো দেখার জন্য সিঁড়ির সর্বনিম্ন ধাপে নামতে হবে। সেখান থেকে সবচেয়ে ভালোভাবে ঝরণাগুলো উপভোগ করা যায়।
বেলা ২টা: দুপুরের খাবার গ্রহণ।
বেলা ৩টা: পুলিশ বাজার ভ্রমণ, ব্যক্তিগত সময়, শপিং।
রাত ৮টা ৩০ মিনিট: রাতের খাবার।
রাতে হোটেলে অবস্থান।

এলিফ্যান্ট ফলস, দ্বিতীয় দিনের ভ্রমণ তালিকায় ঐতিহাসিক এই ঝরনাটি। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান।
তৃতীয় দিন
সকাল ৭টা: সকালের নাস্তা গ্রহণ ও ব্রিফিং।
সকাল ৭টা ৩০ মিনিট: চেরাপুঞ্জি সাইটসিয়িং। স্থান: মাউডুক ভিউ পয়েন্ট, ওয়াকাবা ফলস, দেইন তালেং ফলস, নোহকা লি কাই ফলস, রামকৃষ্ণ মিশন, মাউজমি কেভ, ইকো পার্ক, সেভেন সিস্টার্স ফলস। পথে দুপুরের খাবার গ্রহণ।
বিকেল ৪টা: শিলংয়ের উদ্দেশে চেরাপুঞ্জি ত্যাগ। সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিট নাগাদ হোটেলে পৌঁছানো।
রাত ৮টা ৩০ মিনিট: রাতের খাবার গ্রহণ।
রাতে হোটেলে অবস্থান।

চেরাপুঞ্জির দেইন তালেং ফলস। ভ্রমণ তালিকায় এবারই প্রথম যোগ করা হয়েছে এই ঝরনাটিকে। বর্ষার সময় অনেকে এই ঝরনাটিকে নায়াগ্রার সাথে তুলনা করেন। তৃতীয় দিন বিশাল এই ঝরনাটি দেখব এর উপর থেকে। ছবি: সংগ্রহ।
চতুর্থ দিন
সকাল ৭টা: সকালের নাস্তা গ্রহণ।
সকাল ৭টা ৩০ মিনিট: জৈন্তা হিলস সাইটসিয়িং। স্থান: জৈন্তা হিলস এলাকা, ক্রাং সুরি ফলস, শ্নোনেংপেডেং, উমগট নদী। জৈন্তা হিলস এলাকার প্রাকৃতিক দৃশ্য অত্যন্ত মনোরম। নাশপাতি বাগান, পিলারের উপর দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড় আর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা চলে যাব অসাধারণ ক্রাংসুরি ফলস-এ। এখানে পাশাপাশি দুটি ঝরণা একত্রে মিলিত হয়েছে। প্রথমে ভিউ পয়েন্ট থেকে বড় ঝরণাটি দেখবো। পরে যাব একেবারে ঝরণার নিচে। যেতে যেতে দেখব ঝরণার উপর রড-সিমেন্ট ছাড়া শুধু পাথরের তৈরি ব্রিজ আর ঝরণার উপরে বয়ে যাওয়া পানির দীর্ঘ প্রবাহ। সতর্কতা হচ্ছে এখানের ঝরণায় গোছল করা যাবে না। এর পরে যাব শ্নোনেংপেডেং গ্রামে। ডাউকি নদীর তিনটি উৎস দেখা যাবে এখানে। স্থানীয়ভাবে এই নদীর নাম উম গট। নদীর উপর একটি ঝুলন্ত ব্রিজ রয়েছে। সেটিতে উঠা যাবে। ব্রিজ থেকে নদীর দুটি উৎস দেখা যায়। নদীতে নামা যাবে। এমনকি গোছল করা যাবে, সাঁতারও কাটা যাবে। নদীর মূল উৎসে যেতে হবে নৌকায়। অসাধারণ সেই উৎসে নিজ ব্যবস্থাপনায় কেউ চাইলে যেতে পারবেন। সতর্কতা হচ্ছে নদীর উৎসে পানিতে নামা কিংবা নৌকায় দাঁড়ানো যাবে না।
দাপুর ১২টা ৩০ মিনিট: ডাউকি ও তামাবিল বর্ডারের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা।
ইমিগ্রেশন শেষে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা। পথে সিলেটে দুপুরের খাবার গ্রহণ।
রাতে গাড়ি ঢাকায় পৌঁছার পর ট্যুরের সমাপ্তি।

জৈন্তা হিলস এলাকার ক্রাং সুরি ফলস। ভিউ পয়েন্ট থেকে তোলা ছবিটি গুগল থেকে নেয়া। অসাধারণ এই ঝরনাটি দেখব চতুর্থ দিন।
হোটেল
০১. হোটেল রেইনবো শিলং/ জারা রেসিডেন্সি/ হোটেল মনসুন/ সমমান।
০২. হোটেলের অবস্থান শিলংয়ের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা পুলিশ বাজারে।
০৩. প্রতি দুইজনের রুমে দুইজন, তিনজনের রুমে তিনজন ও চারজনের রুমে চারজন করে থাকবেন। প্রতিটি রুমে এটাচড বাথ ও গরম পানির ব্যস্থা রয়েছে।
০৪. হোটেলে পৌঁছার পর অফিসয়াল আনুষ্ঠানিকতার কারণে রুম বরাদ্দে কিছুটা সময় লাগতে পারে। এজন্য রিসিপশনে অপেক্ষা করতে হবে। হোটেলে সবাইকে পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
০৫. শিলংয়ের আবহাওয়া ঠাণ্ডা থাকায় কোনো রুমে এসির প্রয়োজন নেই।
সাথে যা বহন করতে হবে
০১. শিলং ও চেরাপুঞ্জি ঢাকার চেয়ে ঠাণ্ডা হওয়ায় হালকা ও ভারি শীতের কাপড়।
০২. বৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকতে ছাতা/ রেইনকোট।
০৩. পাহাড়ি পথে হাটার জন্য কেডস।
০৪. রোদ থেকে নিরাপদ থাকতে সানগ্লাস, সানক্যাপ।
০৫. বাইনোকুলার, ক্যামেরা।
০৬. টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, তাওয়েল, স্লিপার।
০৭. জরুরি ওষুধ। ফার্স্ট এইড ব্যান্ডেজ।

দেখলে মনে হবে পিলারের উপর দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়টি। এর রহস্য জানতে সেখানে যাব চতুর্থ দিন। ছবি: হাসানুজ্জামান।
খাবারের মেনু ও নির্দেশিকা
০১. নির্ধারিত খাবার খেতে কারো সমস্যা হলে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা পূর্বে জানাতে হবে।
০২. খাবারের মেনু পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পরিবর্তন করার ক্ষমতা টিম লিডারের থাকবে।
০৩. খাবারের মেনু নির্ধারণ করতে টিম লিডারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
০৪. বাংলাদেশের রান্না ও ভারতের রান্না ভিন্ন হওয়ায় খাবার গ্রহণে সমস্যা হতে পারে।
০৫. খাবারের সমালোচনা না করে পরামর্শ কাম্য।
০৬. বিশেষ কোনো খাবার খেতে ইচ্ছা হলে টিম লিডারকে জানাতে হবে।
০৭. অতিরিক্ত খাবারের প্রয়োজন হলে টিম লিডারকে বলতে হবে। হোটেলবয়কে খাবারের অর্ডার দেয়া যাবে না।
প্রথম দিন
দুপুরের খাবার: সাদা ভাতা, মাছ, সবজি, ডাল (প্যাকেজ খাবার)। স্থান: মাউলিং ভিলেজ। অর্ডার দেয়ার পর খাবার তৈরিতে কিছুটা সময় লাগবে। ভারতের অংশে প্রথম খাবার হওয়ায় স্বাদের ভিন্নতা থাকবে। এজন্য খেতে কিছুটা সমস্যা হতে পারে।
রাতের খাবার: সাদা ভাত/ রুটি, সবজি, মাছ, ডাল। এখানে খাবারের পূর্বে/পরে ট্রাভেলারদের পরিচিতি অনুষ্ঠান ও ট্যুর সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়া হবে।

গ্রুপ ট্যুরে খাবার নিয়ে অভিযোগ থাকে সবচেয়ে বেশি। আমরা চেষ্টা করি মানসম্মত ও হালাল খাবার পরিবেশন করতে। ছবিটি চেরাপুঞ্জির নীলগিরী হোটেল থেকে নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
দ্বিতীয় দিন
সকালের নাস্তা: তেল পুরি (পরাটা), সবজি, ডিম, চা।
দুপুরের খাবার: সাদা ভাত, মুরগির মাংস, সবজি, ডাল।
রাতের খাবার: সাদা ভাত, খাসির মাংস, সবজি, ডাল।
তৃতীয় দিন
সকালের নাস্তা: আলু পরাটা, ডিম মামলেট, সস, আচার, চা।
দুপুরের খাবার: সাদা ভাত, মুরগির মাংস/ মাছ/ ডিম, সবজি, ডাল (প্যাকেজ খাবার)।
রাতের খাবার: ফ্রাইড রাইচ, সবজি, চিকেন ফ্রাই/রোস্ট, মাটন ভুনা, মিষ্টান্ন, ফল, আইসক্রিম।
চতুর্থ দিন
সকালের নাস্তা: ব্রেড, মিষ্টি, ফল।
দুপুরের খাবার: সাদা ভাত, সবজি, ভর্তা, গরুর মাংস/মুরগির মাংস, ডাল।
ভিসার জন্য যেসব ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে
০১. ছয়মাসের মেয়াদসহ পাসপোর্ট। একাধিক/পুরাতন পাসপোর্ট থাকলে সেটিও জমা দিতে হবে।
০২. ভিসাসহ (যদি থাকে) পাসপোর্টের প্রথম দুই পৃষ্ঠার ফটোকপি।
০৩. দুই ইঞ্চি বাই দুই ইঞ্চি সাইজের ল্যাব প্রিন্ট ছবি, ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা।
০৪. তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট। ব্যালান্স কমপক্ষে ২০,০০০/= টাকা। ব্যাংক হিসাব না থাকলে ২০০ ডলার এন্ডোর্সমেন্ট।
০৫. বর্তমান ঠিকানা নিশ্চিতকরণের জন্য ইলেক্ট্রিক বিলের মূল ও ফটোকপি।
০৬. ন্যাশনাল আইডি কার্ড অথবা ১৮ বছরের কম হলে জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি।
০৬. হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি। লিমিটেড কোম্পানি হলে আর্টিকেল অব মেমোরেন্ডামের ফটোকপি। ব্লাঙ্ক বিজনেস প্যাড। (ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে)।
০৭. নো অবজেকশন সার্টিফিকেটের মূল কপি (চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে)।
০৮. ভিজিটিং কার্ড।
০৯. অফিস আইডি কার্ড (চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে)।
১০. স্টুডেন্ট আইডি কার্ড ও সর্বশেষ বেতন পরিশোধের রশিদ (ছাত্রদের ক্ষেত্রে)।

মাউজমি কেভের পাশে ঢাকা ট্যুরিস্টের কয়েকজন ট্রাভেলার। তৃতীয় দিন যাব এখানে। ছবি: ফারুক হোসাইন।

মাউজমি কেভ। ছবি: সোহেল আহমেদ।
নির্দেশিকা
গাড়ি ছাড়ার অন্তত ৩০ মিনিট পূর্বে নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত থাকতে হবে।
ভ্রমণে কষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। এজন্য প্রত্যেককে প্রত্যেকের সহযোগিতা করতে হবে।
অবশ্যই গ্রুপ লিডারের নির্দেশ ও শিডিউল মানতে হবে। কোনোভাবেও গ্রুপ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না।
নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় কিংবা পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কিছু কোনোভাবেই করা যাবে না (এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ)।
অতিরিক্ত দু:সাহসিকতা দেখানো যাবে না।
এটি একটি পারিবারিক ট্যুর। সবাইকে পারিবারিক সম্মান বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে।
শিডিউল রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। কিন্তু গ্রুপ ট্যুরে অধিকাংশ সময় শিডিউল রক্ষা সম্ভব হয় না। এজন্য সবার সহযোগিতা কাম্য।
Responsibility
We will be responsible for operation of the tours and excursions as mentioned in our brochure under the normal situation. So, for personal accident, sickness or loss of baggage during the tour, any political problem resulting in unusual situation to conduct a tour etc. we will not be responsible. However, we will try to extend all possible assistance to overcome such problems. But the guest must pay any extra cost incurred due to such problems.
We reserve the right to withdraw or amend any tour should condition warrant such action. In such a condition, any participant unable to avail the changed schedule is entitled to take his/her money refunded.
During visiting days all members must be maintaining by their leaders. We reserve the rights to accept or refuse any participant as a member of the tour.
যেকোনো সময়ে ট্যুরের যেকোনো বিষয় পরিবর্তন হতে পারে। যেকোনো বিষয়ে টিম লিডারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
আপডেট জানতে ভিজিট করুন: dhakatouristclub.com/2017/04/cherrapunji-eid-2017
নিয়মিত চোখ রাখুন:
ওয়েব সাইট: dhakatourist.com
ফেইসবুক পেজ: facebook.com/dhakatourist
ফেইসবুক গ্রুপ: facebook.com/groups/dhakatouristclub
যোগাযোগের ঠিকানা: ১৮০-১৮১, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণী (অষ্টম তলা), বিজয় নগর, ঢাকা- ১০০০। মোবাইল: ০১৬১২ ৩৬০৩৪৮। ই-মেইল: dhakatouristclub@gmail.com
Pingback: এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম মাওলিনং | Dhaka Tourist Club