Skip to content

মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হাজারী গুড়ের অনেক চাহিদা

Hazarigur

যে গুড় দিয়ে একসময় অফিসের বস, রাজনৈতিক নেতা এবং নিকট আত্মীয়দের খুশি করা হতো সেই ঐতিহ্যবাহী ঝিটকার হাজারী গুড় দীর্ঘ সময়কাল পেরিয়ে আজও তার অবস্থান ধরে রেখেছে। যদিও ভোজন রসিকরা এর মান নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন তবুও স্বাদে-গন্ধে ঝিটকার হাজারী গুড় এখনো সারা বাংলায় তুলনাবিহীন এবং এর চাহিদা অনেক।

প্রায় দেড় শ’ বছর আগের হাজারী গুড়ের সুনাম আজও টিকিয়ে রেখেছে এ দেশের একমাত্র উৎপাদনকারী মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হাজারী পরিবারসহ শতাধিক গাছি পরিবার।

==============================
আমরা অর্ডার দিচ্ছি এই হাজাড়ী গুড়ের। যারা ডিটিসির কমপক্ষে একটি ট্যুরে অংশ নিয়েছেন শুধু তারাই সংগ্রহ করতে পারবেন এই গুড়। ঢাকায় হোম ডেলিভারিসহ খরচ দিতে হবে ১,২৫০/= টাকা। যোগাযোগ ও বিকাশ নম্বর ০১৬১২৩৬০৩৪৮। অর্ডার দিতে হবে ১৬ জানুয়ারি দুপুর ১টার মধ্যে। অর্ডারের সময় সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
==============================

মানিকগঞ্জের দুটি দ্রব্যের সুনাম এক সময় এশিয়া থেকে ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। সে দুটি দ্রব্য হচ্ছে তিল্লির দই ও অপরটি ঝিটকার ঐতিহ্যবাহী হাজারী গুড়। এই গুড়ের সুনাম এক সময় এ দেশ থেকে এশিয়া, ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। এমনকি ইংল্যান্ডের রানীকেও এই গুড় উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছিল।

বৃহত্তর ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে শুধু খেজুরের চাষ হয়ে থাকে। এসব খেজুর গাছের দুই-তৃতীয়াংশই রয়েছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায়। সেখানে প্রতি একরে ১৫ টি খেজুর গাছ দেখা যায়। হরিরামপুরের ঝিটকায় খেজুর গুড় শিল্পের প্রধান কেন্দ্র। গুণে মানে, স্বাদে-গন্ধে এই গুড়ের বিস্তর সুনাম রয়েছে।

মানিকগঞ্জে শীত মৌসুমে খেজুরগাছের অনেকটা গুরুত্ব বেড়ে যায়। খেজুরের রস-গুড় উৎপাদনে পেশাদার গাছি, কুমার, কামার, জ্বালানি ব্যবসায়ী, পরিবহনের জন্য ট্রাকমালিক, চালক, ভ্যানচালক, শ্রমিক আড়তদারসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ সংযুক্ত হয়। এই গুড় প্রথম আবিষ্কার করেন মিনহাজউদ্দিন হাজারী। তাঁর নামেই এই গুড়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘হাজারী গুড়’। এ গুড়ের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, দুই হাতে গুড়ো করে ফুঁ দিলে তা ছাতুর মতো উড়ে যায়।

দাদার আমল থেকে গুড় উৎপাদন করে আসা গাছি আজমত আলী হাজারী (৬৫) জানান, বেশি শীত অর্থাৎ ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই গুড় উৎপাদনের নির্ভরযোগ্য সময়। আগের দিন বিকেলে গাছ কেটে হাঁড়ি বেঁধে দেওয়া হয়। পরের দিন ভোরে (সূর্য উঠার আগে) রস সংগ্রহ করে পরিষ্কার করে ছেঁকে মাটির তৈরি (জালা) পাত্রে চুলায় (বাইনে) জ্বালিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় হাজারী গুড়। এই পদ্ধতি এখন আর হাজারী পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। অনেক গাছির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এই গুড় দেখতে যেমনি সুন্দর খেতেও তেমনি সুস্বাদু। মিষ্টি ও টল টলে রস ছাড়া হাজারী গুড় হয় না। প্রতিকেজি গুড় ৮০০ টাকা থেকে হাজার টাকা পর্যন্তও বিক্রি হয় বলে তিনি জানান।

তিনি আরো জানান, বাজারে এক ধরনের হাজারী সদৃশ্য গুড় পাওয়া গেলেও মৌলিকভাবে তার ব্যবধান রয়েছে। এক শ্রেণীর অসাধু গুড় তৈরিকারক সাদা রঙের গুড়ের উপর নাম খোদাই করে বাজারজাত করে সাধারণ ক্রেতাদের ধোঁকা দিয়ে থাকে। হাজারী পরিবার এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নকল গুড় প্রস্তুতকারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ট্রেড মার্ক ভঙ্গকারীদের আইনের আওতায় নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

মানিকগঞ্জের স্বনামধন্য ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস-গুড় প্রায় বিলীন হতে চলেছে। প্রতিবছর হাজার হাজার গাছ কেটে ইটভাটায় লাকড়ি হিসেবে পুড়িয়ে এই গুড় শিল্পকে ধ্বংস করা হচ্ছে। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়ে এই শিল্পকে রক্ষা করা দরকার। সূত্র: কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *