মোস্তাফিজুর রহমান ও রাফায়েল পালমা
পঁচাত্তর বছর পার করল গণমাধ্যম ইতিহাসের অংশীদার ‘সাপ্তাহিক প্রতিবেশী’। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসংখ্য মানুষ প্রথম পত্রিকার স্বাদ পেয়েছেন পত্রিকাটি পড়ে। কালের সাক্ষী সাপ্তাহিক প্রতিবেশী পঁচাত্তর বছরের জুবিলী উদযাপন করেছে যাকজমকপূর্ণভাবে।
‘রাণীখং মিশন চিঠি’ নামে ১৯৪১ সালের নভেম্বরে যাত্রা শুরু করে পত্রিকাটি। সম্পাদক ছিলেন ফাদার রিচার্ড ডুয়েন প্যাট্রিক, সিএসসি। পত্রিকাটি তৎকালিন ময়মনসিংহ বর্তমান নেত্রকোনা জেলার ঐতিহাসিক সুসং দুর্গাপুরে গারো পাহাড়ের কোল ঘেঁষে প্রবাহিত সোমেশ্বরী নদী তীরে পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত রাণীখং সাধু যোসেফ ধর্মপল্লী’র গির্জা থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়।
মূলত এটি একটি ‘প্যারিশ বুলেটিন’ রূপে প্রকাশিত হয়। পত্রিকার কলেবর ছিল লম্বায় নয় ইঞ্চি ও প্রস্থে সাত ইঞ্চি। প্রথম পৃষ্ঠায় পত্রিকার কোনো লোগো বা মনোগ্রাম ব্যবহৃত হয়নি। ছয় পৃষ্ঠার পত্রিকা। কোনো রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ছিল না। পেছনের শেষ কভারে নিচের অংশে ইংরেজিতে লেখা ছিল Published by Rev. Patrick csc cum Permissu Superioris and Printed by Dhirendra Chandra De at the Udayan Press, Mymensingh.

উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
একটি ক্যাথোলিক মিশন পত্রিকা
‘রাণীখং মিশন চিঠি’র প্রথম সংখ্যাটি ময়মনসিংহ এলাকার বাইরেও ব্যাপক সমাদৃত হয়। তখন ভাবনায় আসে গোটা কমিউনিটির কথা। ১৯৪১ সালের ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয় সংখ্যা থেকেই নামকরণ হয় ‘ক্যাথোলিক মিশন পত্রিকা’। এ সময় পত্রিকার সম্পাদনা দপ্তর ময়মনসিংহ শহরের কাথলিক মিশনে স্থানান্তর করা হয়। পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশনার দায়িত্ব দেয়া হয় ময়মনসিংহ ক্যাথলিক মিশনের উপর।
নবম সংখ্যা পর্যন্ত এখান থেকে প্রকাশিত হয়। জুন সংখ্যায় দেখা যায় পত্রিকাটির মূল্য দুই পয়সা, বার্ষিক মূল্য আট আনা ডাকমাশুলসহ ধার্য করা হয়েছে। জুলাই মাসে পত্রিকার রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেয়া হয় ২৮৪৬।
১৯৪২-এর আগস্ট হতে পত্রিকার দশম সংখ্যাটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘কাথলিক মিশন পত্রিকা’। ১৯৪৪-এর জানুয়ারিতে এর সম্পাদনা দফতর ঢাকায় আনা হয়। প্রকাশিত হতে থাকে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের হলিক্রস গির্জা, ৮২ মিউনিসিপ্যাল অফিস স্ট্রিট, ঢাকা-১ থেকে।
‘কাথলিক মিশন পত্রিকা’র মূল নীতি ছিল প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা, কথোপকথন এবং সংবাদের মাধ্যমে কাথলিক জনগণকে ধর্মীয় ও নৈতিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে রাখা।

বৈশাখী টিভির সিইও মনজুরুল আহসান বুলবুলের হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন সাপ্তাহিক প্রতিবেশীর সম্পাদক ফাদার জয়ন্ত এস গমেজ।
নাম পরিবর্তন করে ‘প্রতিবেশী’
১৯৪৭ সালের মে মাসে ‘কাথলিক মিশন পত্রিকা’ পরিবর্তন করে নাম রাখা হয় ‘প্রতিবেশী’। প্রণীত হয় নতুন নীতিমালা। ১৯৪৭-এর ফেব্রুয়ারিতে কাথলিক মিশন পত্রিকার সম্পাদক হন ক্ষিতিশ চন্দ্র সত্যব্রত। তিনি ১৯৪৯-এর নভেম্বর পর্যন্ত সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে অবস্থানরত যাজকদের তত্ত্বাবধানে তিনি পত্রিকাটি সম্পাদনা করতেন।
১৯৪৯-এর ডিসেম্বরে ফাদার উইলিয়াম মনাহান, সিএসসি নতুন সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৫৯-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত এই পদে বহাল ছিলেন তিনি। ১৯৫৩-এর অক্টোবর থেকে প্রতিবেশী ‘ট্যাবলয়েড’ সাইজে প্রকাশ শুরু হয়।
‘প্রতিবেশী’ থেকে ‘সাপ্তাহিক প্রতিবেশী’
তৎকালিন ঢাকার আর্চবিশপ লরেন্স গ্রেণার, সিএসসির নির্দেশে ‘প্রতিবেশী’কে ১৯৬০ সালের জানুয়ারিতে ‘সাপ্তাহিক প্রতিবেশী’ হিসেবে নিয়মিত প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হয়। ফাদার মাইকেল রোজারিওর (প্রয়াত আর্চবিশপ) সম্পাদনায় নতুন সাপ্তাহিকটি প্রকাশিত হতে থাকে। এ সময়ই এর কার্যালয় লক্ষ্মীবাজারের পবিত্র ক্রুশ গির্জা থেকে বর্তমান ভবনে অর্থাৎ ৬১/১ সুভাষ বোস এভিনিউতে স্থানান্তরিত হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৬১-এর ডিসেম্বরে প্রথমবারের মত প্রতিবেশীর চার কালারের বিশেষ বড়দিন সংখ্যা প্রকাশিত হয়। এই ঐতিহ্য আজ পর্যন্ত বজায় রয়েছে।
১৯৯৩-এর আন্তর্জাতিক যোগাযোগ দিবস থেকে প্রতিবেশী ম্যাগাজিন আকারে প্রকাশিত হচ্ছে।
খ্রীষ্টান কমিউনিটির মুখপত্র ‘সাপ্তাহিক প্রতিবেশী’
সাপ্তাহিক প্রতিবেশী একটি ধর্মপল্লীর মুখপত্র থেকে ক্রমান্বয়ে ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের মুখপত্রে পরিণত হয়। অবশেষে ১৯৭৪ সালে আর্চবিশপ থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলী, সিএসসির সময়ে জাতীয় কাথলিক পত্রিকায় রূপান্তরিত হয়।
কালের পরিক্রমায় কাথলিক খ্রীষ্টান কমিউনিটির মুখপত্র হয়ে উঠে ‘সাপ্তাহিক প্রতিবেশী’। সমাজে মূল্যবোধ, নৈতিক ও খ্রীষ্টান ধর্মীয় শিক্ষা বিকাশে পত্রিকাটি যেমন ভূমিকা রাখছে, ঠিক তেমনি জাতীয় ঘটনাবলী, কমিউনিটির সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে চলেছে।
লেখক-কবি-সাংবাদিক তৈরির জন্য ‘ছোটদের আসর’
শিশু কিশোরদের জন্য ‘কিশোরদের আসর’ নামে বিভাগটি শুরু হয় ১৯৫১-এর জানুয়ারিতে। এই নামে চলে ১৯৫২-এর আগস্ট সংখ্যা পর্যন্ত। ১৯৫৩-এর সেপ্টেম্বর হতে ‘কিশোরদের আসর’ নাম পরিবর্তন করে ‘ছোটদের আসর’ রাখা হয়, যা আজ পর্যন্ত বহাল রয়েছে। এ বিভাগটিই সৃজনশীল লেখক তৈরির সূতিকাগার। অনেকেরই প্রথম লেখা ‘ছোটদের আসর’-এ প্রথম ছাপা হয়েছে। যারা পরবর্তীতে লেখক-কবি-সাংবাদিক হিসেবে দেশ বিদেশে সুখ্যাতি অর্জন করেছেন।
ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে ‘সাপ্তাহিক প্রতিবেশী’
মহান ভাষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে পত্রিকাটির ছিলো সুস্পষ্ট অবস্থান। এক সময় তৎকালিন পাকিস্তান সরকার প্রতিবেশীর ওপর কড়া নজরদারিও শুরু করেছিল।
কমিউনিটি সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ
বাংলাদেশের কমিউনিটি সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ ‘সাপ্তাহিক প্রতিবেশী’। একটি কমিউনিটির ৭৫ বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনার সংবাদ ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়েছে। যা এক সময় ঐতিহাসিক মূল্য পাবে নিঃসন্দেহে। যতই দিন যাবে প্রতিবেশী হবে ইতিহাস রচনার তথ্যসূত্রের অনবদ্য আকর, হবে ভাবী প্রজন্মের লেখক গবেষকদের অমূল্য তথ্যভাণ্ডার। তাই পুরনো পত্রিকাগুলোকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার
সাপ্তাহিক প্রতিবেশীর গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার। বাংলাদেশসহ ৩২টি দেশে মুদ্রিত কপি যায়। সরকারি ডাক বিভাগের মাধ্যমে ‘প্রতিবেশী’ প্রতি সপ্তাহে গ্রাহকের হাতে পৌঁছায়। শিগগিরই সাপ্তাহিক প্রতিবেশী’র অনলাইন সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে পত্রিকাটি বিশ্ব জুড়ে আরো বিপুল সংখ্যক পাঠকের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
প্লাটিনাম জুবিলীর বর্ণাঢ্য সমাপনী
১৯৪১ সালে শুরু হওয়া কাথলিক চার্চের প্রকাশনা সাপ্তাহিক প্রতিবেশীর ৭৫ বছরের প্লাটিনাম জুবিলী উপলক্ষে গত ১ এপ্রিল বটমলী হোম গার্লস স্কুল প্রাঙ্গনে প্রতিবেশীর জুবিলী’র বর্ণাঢ্য সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকার আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি’রোজারিও সিএসসি। বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। সাথে ছিলেন প্রতিবেশীর বর্তমান সম্পাদক ফাদার জয়ন্ত এস গমেজ।

উৎসবের এক ফাঁকে বাংলাদেশে নিযুক্ত পোপের প্রতিনিধি জর্জ কোচেরির (মাঝে) সাথে ঢাকা ট্যুরিস্ট ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মোস্তাফিজুর রহমান (ডানে)।
অনুষ্ঠানস্থলে ছিলেন বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মপ্রদেশের বিশপগণসহ আরো অনেকে।
প্রায় দুই হাজার খ্রিষ্টভক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী বেবী রোজারিওর পরিচালনায় চিত্তাকর্ষক উদ্বোধনী নৃত্যের মাধ্যমে বৈকালিক অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একটি পত্রিকা ৭৫ বছর চলছে, বিষয়টি আমাদের অবাক করে। এই পত্রিকা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও পরে স্বাধীনতা যুদ্ধে জাগরণ সৃষ্টিতে অসামান্য অবদান রেখেছে। প্রতিবেশী আরো এগিয়ে চলুক এটাই আমরা চাই।’ তিনি প্রতিবেশীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বলেন, প্রতিবেশী তার স্বকীয়তা ধরে রেখেছে।
আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি’রোজারিও বলেন, ‘প্রতিবেশী এ পর্যন্ত যা যা করেছে, তা নিয়ে গবেষণা করা যায়।’ প্রথম নাম ‘রানীখং চিঠি’ থেকে পরবর্তী নাম হয় ‘প্রতিবেশী’। ‘প্রতিবেশী’ নামের সাথে এর বাস্তবতার সম্পর্ক অনেক গভীর। তিনি প্রতিবেশীকে ভালোবাসতে বলেন। একমাত্র ভালবাসতে পারলেই এর গভীরে প্রবেশ করা যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘সাপ্তাহিক প্রতিবেশীর ৭৫ বছর পূর্তি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। যতটুকু জানলাম, এই পত্রিকা অগণিত লেখক তৈরি করেছে।’
লেখার উদ্দেশ্য সম্বন্ধে তিনি বলেন, লেখার তিনটি উদ্দেশ্য- মানুষকে তথ্য প্রদান করা, শিক্ষা প্রদান করা ও আনন্দ দেওয়া।
তিনি বলেন, সাপ্তাহিক প্রতিবেশী এসবই করেছে এবং করে চলেছে। গণমাধ্যম নিয়ে যারা কাজ করেন তারা প্রতিবেশীর সহযোগিতা নিতে পারেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় খ্রিষ্টান সমাজের অবদানকে স্মরণ করেন।
জুবিলী অনুষ্ঠানে প্রতিবেশী পত্রিকায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়। প্রধান ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ তাদের মধ্যে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন।
বক্তব্য পর্বের পর এক জমকালো সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী কমল রড্রিক্স, অনিমা মুক্তি গমেজ ও বাণীদীপ্তিসহ খ্রিষ্টান সমাজের বিভিন্ন শিল্পী নাচ, গান, অভিনয় ও কৌতুকসহ নানা সমাহারে সাজিয়েছিলেন এ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের পর লটারির মাধ্যমে জুবিলীর অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
একই দিন সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত পোপের প্রতিনিধি জর্জ কোচেরি, বাংলাদেশের সব ধর্মপ্রদেশের বিশপ ও অন্যান্য ফাদার মিলে তেজগাঁও হলি রোজারী চার্চে এক মহাখ্রিষ্টযাগের আয়োজন করেন। এরপর গির্জার বাইরে এসে বেলুন, শান্তির প্রতীক কবুতর ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে জুবিলী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন।
পরে গির্জার ভিতরে গিয়ে স্মৃতিচারণ করেন আর্চবিশপ জর্জ কোচেরি, বিশপ পল পনেন কুবি সিএসসি, বিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ, ফাদার এ জ্যোতি গমেজ, ফাদার কমল কোড়াইয়া, ফাদার সুব্রত বনিফাস টলেন্টুনু সিএসসি, ফাদার ডানিয়েল রোজারিও, ফাদার ড. তপন ডি’রোজারিও ও রবি খ্রীষ্টফার ডি’কস্তা।
গির্জার ভিতরে গিয়ে পোপের প্রতিনিধি জর্জ কোচেরি, ঢাকার আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, বিশপ জের্ভাস রোজারিও, প্রতিবেশীর সম্পাদক ফাদার জয়ন্ত এস গমেজ ও স্মরণিকার সম্পাদক ফাদার তপন ডি’রোজারিও জুবিলী উৎসব উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকা, প্রতিবেশীর থিম সংয়ের সিডি (লিটন অধিকারী রিন্টুর কথা ও সুর দেয়া) ও পুরোনো দিনের (প্রতিবেশীতে প্রকাশিত) কবিতার সঙ্কলন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। পরে কাথলিক সম্প্রদায়ের সুনামধন্য নৃত্যশিল্পী শিপ্রা প্যারিসের পরিচালনায় উদ্বোধনী নৃত্যের আয়োজন করা হয়। তেজগাঁও গির্জার ভিতরে প্রায় এক হাজার দর্শক-শ্রোতা ও পত্রিকার পাঠক-লেখক-শুভানুধ্যায়ী এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
সাপ্তাহিক প্রতিবেশীর প্লাটিনাম জুবিলী উপলক্ষে আগের দিন (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রতিবেশীর সম্পাদক, পৃষ্ঠপোষক, লেখক, কবি, প্রবন্ধকার ও শুভানধ্যায়ীরা মিলিত হয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কাথলিক বিশপ সম্মিলনীর সামাজিক যোগাযোগ কমিশনের সভাপতি বিশপ জের্ভাস রোজারিও ডিডি, পত্রিকার বর্তমান সম্পাদক ফাদার জয়ন্ত এস গমেজ, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল নির্মল রোজারিও, দ্য খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ ও সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়াসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় একশ’ জন লেখক, পাঠক, শুভানুধ্যায়ী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মঞ্চের বক্তারা প্রতিবেশীর প্রকাশের তাৎপর্য তুলে ধরেন।
তারা বলেন, মানুষের মধ্যে আধ্যাত্মিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়। তারা এও জানান, বাংলাদেশে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই কমবেশি এর পাঠক। পৃথিবীর ৩২টি দেশে প্রতি সপ্তাহে ৮ হাজারেরও পত্রিকা বিতরণ করা হয়।

জাতীয় পতাকা ও বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন।

সকালে উৎসবে উপস্থিতির একাংশ

উৎসবে বাংলাদেশে নিযুক্ত পোপের প্রতিনিধি জর্জ কোচেরি থিম সংয়ের সিডি ও স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করেন।

উৎসবে বাংলাদেশে নিযুক্ত পোপের প্রতিনিধি জর্জ কোচেরি থিম সংয়ের সিডি ও স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করেন। পাশে ঢাকার আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি’রোজারিও।