মেঘের চাদরে মোড়ানো পাহাড়। সবুজ বৃক্ষরাজি ঢেকে আছে ধবধবে সাদা কুয়াশায়। বিশাল বিশাল গাছপালা। অজগর সাপের মতো আঁকাবাঁকা আর উঁচু-নিচু রাস্তা। সুউচ্চ পর্বত। ভোরসকালে সূর্যোদয়ের দৃশ্য কোনটা নেই সাজেকে?
খাগড়াছড়ি শহর থেকে দীঘিনালা, তারপর বাঘাইহাট হয়ে সাজেক। পুরো রাস্তাটাই অপূর্ব। আশপাশের দৃশ্য বড় মনোরম। বেশির ভাগ সময় রাস্তাটাকে রোলার কোস্টারই মনে হয়।
সবুজে মোড়ানো প্রকৃতির মাঝে আঁকাবাঁকা সর্পিল পথ বেয়ে দুঃসাহসিক এই ভ্রমণ যেখানে ফুরাবে, সেটাই সাজেকের মূল কেন্দ্র। নাম রুইলুইপাড়া। ছবির মতো পথঘাঁট। পথের দুপাশে লাল-সবুজ রঙের বাড়ি। কাছে-দূরের সব পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে মেঘ জমে আছে।
সেখান থেকে আরেকটু দূরে কংলাকপাড়া। টেনেটুনে ২০টি ঘর। হেঁটে যেতে আধঘণ্টা। সেখানে থেকে সাজেক ভ্যালির বড় অংশটা দেখা যায়।
সাজেকের আনন্দ বারান্দা বা খোলা জায়গায় বসে বা শুয়ে মেঘের আনাগোনা দেখা। হঠাৎ হঠাৎ এক টুকরো মেঘ অথবা বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে যায়। বদলে যায় দৃশ্যপট। মাঝে মাঝে সব এমনই ফকফকা যে সীমান্তের ওপারে পাহাড়ের ঘরবাড়ি, ঝরনা, মন্দির পর্যন্ত দেখা যায়। কিছুক্ষণ বাদেই হয়তো মেঘ এসে ঢেকে দেয় চারদিক।
এই সাজেকে যাচ্ছি আমরা ১৯ এপ্রিল ২০১৮ তারিখ রাত ১০টায়।

যোগাযোগ ও টিম লিডার : মোস্তাফিজুর রহমান ০১৬১২ ৩৬০৩৪৮
ভ্রমণ পরিকল্পনা
ভ্রমণকাল : ২ দিন ৩ রাত।
ভ্রমণ শুরু : ১৯ এপ্রিল ২০১৮, রাত ১০.০০ মিনিট, স্থান- ফকিরাপুল।
ভ্রমণ সমাপ্তি : ২২ এপ্রিল ভোর ৫টা, স্থান- ফকিরাপুল।
ব্যুকিংয়ের শেষ তারিখ : ১১ এপ্রিল ২০১৮।
ভ্রমণ খরচ : জনপ্রতি ৭,০০০/= টাকা, ৩ বছরের নিচে ফ্রি।বুকিংয়ের সময় সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
এই খরচে থাকছে
এসি বাসে খাগড়াছড়ি যাওয়া-আসার টিকেট (আগে বুকিং সামনে সিট ভিত্তিতে)।
একটি বার-বি-কিউ ডিনারসহ সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার। সকাল ও বিকেলে হালকা নাস্তা।
সাজেকে এক রাত হোটেলে টুইন শেয়ারিং রুমে অবস্থান।
খাগড়াছড়ি শহরে হোটেলে একটি সকাল ও একটি সন্ধ্যা গ্রুপ শেয়ারিং রুমে রিফ্রেশিং (প্রতি রুমে ৬ জন)।
দুই দিন রিজার্ভড চান্দের গাড়ি।
ট্যুরিস্ট প্লেসের এন্ট্রি টিকেট (প্রায় সবগুলো ট্যুরিস্ট প্লেসে ঢোকার টিকেট লাগবে)। আলুটিলা গুহায় প্রবেশের মশাল।
ড্রাইভার ও হেলপারের থাকা খাওয়ার খরচ। গাইড খরচ। গাড়ি পার্কিং। জনপ্রতি চার লিটার করে মিনারেল ওয়াটার।
খরচে যা থাকছে না
চিকিৎসা ও ব্যক্তিগত খরচ।
মেনুর বাইরে অতিরিক্ত কোনো খাবার। কোমল পানীয়।
হোটেল বা রিসোর্টে অতিরিক্ত কোনো রুম নিলে তার ভাড়া।
অনাকাঙ্খিত কোনো খরচ।
যা উল্লেখ নাই এমন সব খরচ।

মেঘের এরকম আনাগোনার কারণেই সাজেককে বলে মেঘ-পাহাড়ের সাজেক। তুলনা করা হয় দার্জিলিংয়ের সাথে।
ভ্রমণসূচি
০ দিন : বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৮
রাত ১০.০০ মিনিটে ঢাকার ফকিরাপুল থেকে এসি বাসে খাগড়াছড়ি রওয়ানা।
প্রথম দিন : শুক্রবার, ২০ এপ্রিল ২০১৮
০৬:০০ খুব সেকালে খাগড়াছড়ি পৌঁছা।
০৭:০০ খাগড়াছড়ি শহরে গ্রুপ রুমে ফ্রেস হওয়া ও সকালের নাস্তা। (মেনু: পরাটা, ভাজি, ডিম।)
০৮:০০ কংলাক ঝরনা ভ্রমণ।
১০:০০ রিজার্ভড চান্দের গাড়িতে সাজেকের উদ্দেশে রওয়ানা।
১২:৩০ সাজেকে রিসোর্টে রুম বরাদ্দ, রিফ্রেশ।
০১:৩০ দুপুরের খাবার গ্রহণ। (মেনু: সাদা ভাত, সবজি/বেগুন ভাজি, রুই মাছ, পাতলা ডাল।)
০৩:০০ সাজেক, রুইলুই পাড়া, হেলিপ্যাড, সাজেক রিসোর্ট ও তার আশপাশ বেড়ানো।
০৭:৩০ বার-বি-কিউ ডিনার। স্থান: সাজেক ভ্যালি।
সাজেকে রাত যাপন।

মেঘের চাদরে ঢাকা সাজেক।
দ্বিতীয় দিন : শনিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৮
০৬:৩০ হোটেল থেকে ফ্রেস/গোসল শেষ করে কংলাক পাড়ায় বেড়ানো।
০৮:৩০ সকালের নাস্তা। (মেনু: ডিম খিচুরি, চা। স্থান: সাজেক ভ্যালি)
০৯:৩০ খাগড়াছড়ির উদ্দেশে যাত্রা। পথে আলুটিলা গুহা, রিছাং ঝরনা ভ্রমণ।
০২:০০ দুপুরের খাবার। (সাদা ভাত, সবজি/ভর্তা, গরু/মুরগি, ডাল। স্থান: খাগড়াছড়ি শহর)
০৩:৩০ হার্টিকালচার পার্ক/ ঝুলন্ত ব্রিজ ভ্রমণ।
০৭:০০ হোটেলে গ্রুপভিত্তিক রুমে ফ্রেস হওয়া।
০৮:০০ রাতের খাবার। (সাদা ভাত, সবজি, মাছ, ডাল। স্থান: খাগড়াছড়ি শহর)
০৯:০০ এসি বাসে বাসে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা।
০ দিন : রবিবার, ২২ এপ্রিল ২০১৮
খুব ভোরে ঢাকার ফকিরাপুল পৌঁছা ও ট্যুরের সমাপ্তি।
সাথে যা যা নিতে পারেন
মোবাইলের চার্জার ও পাওয়ার ব্যংক।
রবি ও টেলিটক সিম (অন্য অপারেটরের নেটওয়ার্ক নাই)।
নিজের ব্যবহার্য প্রয়োজনীয় জিনিস।
হেডলাইট অথবা টর্চলাইট।
রোদ প্রোটেকশনের জন্য ছাতা, সানক্যাপ, সানগ্লাস, সানস্ক্রিন।
প্রয়োজনীয় ওষুধ। ফার্স্ট এইড ব্যান্ডেজ।

সাজেকের রুইলুই পাড়ার সকাল
ভ্রমণকে উপভোগ করুন, অবশ্যই মনে রাখবেন
ভ্রমণে কষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। এজন্য সহনশীল ও সহযোগিতার মানসিকতা থাকতে হবে।
অবশ্যই গ্রুপ লিডারের নির্দেশ ও শিডিউল মানতে হবে। কোনোভাবেও গ্রুপ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না।
নিরাপত্তা বিঘিœত হয় কিংবা পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কিছু কোনোভাবেই করা যাবে না (এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ)।
অতিরিক্ত দু:সাহসিকতা দেখানো যাবে না।
এটি একটি পারিবারিক ট্যুর। পরুষ-মহিলা/ছেলে-মেয়ে যে কেউ এই ট্যুরে যেতে পারবে।
সাজেকে পানি স্বল্পতা রয়েছে। হোটেল-রিসোর্টগুলো টিনশেড ও বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি।
ব্যক্তিগত জিনিস বহনের জন্য কোনোভাবেও ট্রলি নেয়া যাবে না।
যেকোনো সময়ে ট্যুরের যেকোনো বিষয় পরিবর্তন হতে পারে।

সাজেক ভ্রমণের রেগুলার প্যাকেজ: জনপ্রতি ৪,৯৫০/= টাকা। যেকোনো দিন ভ্রমণ।