মেঘের চাদরে মোড়ানো পাহাড়। সবুজ বৃক্ষরাজি ঢেকে আছে ধবধবে সাদা কুয়াশায়। বিশাল বিশাল গাছপালা। অজগর সাপের মতো আঁকাবাঁকা আর উঁচু-নিচু রাস্তা। সুউচ্চ পর্বত। ভোরসকালে সূর্যোদয়ের দৃশ্য কোনটা নেই সাজেকে?
খাগড়াছড়ি শহর থেকে দীঘিনালা, তারপর বাঘাইহাট হয়ে সাজেক। পুরো রাস্তাটাই অপূর্ব। আশপাশের দৃশ্য বড় মনোরম। বেশির ভাগ সময় রাস্তাটাকে রোলার কোস্টারই মনে হয়।
সবুজে মোড়ানো প্রকৃতির মাঝে আঁকাবাঁকা সর্পিল পথ বেয়ে দুঃসাহসিক এই ভ্রমণ যেখানে ফুরাবে, সেটাই সাজেকের মূল কেন্দ্র। নাম রুইলুইপাড়া। ছবির মতো পথঘাঁট। পথের দুপাশে লাল-সবুজ রঙের বাড়ি। কাছে-দূরের সব পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে মেঘ জমে আছে।
https://www.youtube.com/watch?v=bCD6pTvcYrE
সেখান থেকে আরেকটু দূরে কংলাকপাড়া। টেনেটুনে ২০টি ঘর। হেঁটে যেতে আধঘণ্টা। সেখানে থেকে সাজেক ভ্যালির বড় অংশটা দেখা যায়।
সাজেকের আনন্দ বারান্দা বা খোলা জায়গায় বসে বা শুয়ে মেঘের আনাগোনা দেখা। হঠাৎ হঠাৎ এক টুকরো মেঘ অথবা বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে যায়। বদলে যায় দৃশ্যপট। মাঝে মাঝে সব এমনই ফকফকা যে সীমান্তের ওপারে পাহাড়ের ঘরবাড়ি, ঝরনা, মন্দির পর্যন্ত দেখা যায়। কিছুক্ষণ বাদেই হয়তো মেঘ এসে ঢেকে দেয় চারদিক।
এই সাজেকে যাচ্ছি আমরা নভেম্বরের ১৭ তারিখ রাত সাড়ে ১০টায়।
যোগাযোগ : মোস্তাফিজুর রহমান ০১৬১২ ৩৬০৩৪৮, মাহফুজুর রহমান ০১৯১৭ ৭৪৭৩৮৩।
ভ্রমণ পরিকল্পনা
ভ্রমণকাল : ২ দিন ৩ রাত।
ভ্রমণ শুরু : ১৭ নভেম্বর ২০১৬, রাত ১০.৩০ মিনিট, স্থান- ফকিরাপুল।
ভ্রমণ সমাপ্তি : ২০ নভেম্বর ভোর ৫টা, স্থান- ফকিরাপুল।
ব্যুকিংয়ের শেষ তারিখ : ১০ নভেম্বর ২০১৬ (আসন খালি থাকা সাপেক্ষে)।
ভ্রমণ খরচ : জনপ্রতি ৪,৮৫০/= টাকা (নন এসি বাস), ৩ বছরের নিচে ফ্রি। ফেমিলি রুমের জন্য অতিরিক্ত ১,০০০/= টাকা (দুইজন)।
এই খরচে থাকছে
নন এসি বাসে খাগড়াছড়ি যাওয়া-আসার টিকেট (আগে বুকিং সামনে সিট ভিত্তিতে)।
সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার। সকাল ও বিকেলে হালকা নাস্তা। বার-বি-কিউ উৎসব।
সাজেকে এক রাত হোটেলে শেয়ারিং রুমে অবস্থান।
খাগড়াছড়ি শহরে হোটেলে একটি সকাল ও একটি সন্ধ্যা গ্রুপ শেয়ারিং রুমে রিফ্রেশিং।
দুই দিন রিজার্ভড চান্দের গাড়ি।
ট্যুরিস্ট প্লেসের এন্ট্রি টিকেট।
ড্রাইভার ও হেলপারের থাকা খাওয়ার খরচ। গাইড খরচ। গাড়ি পার্কিং। জনপ্রতি চার লিটার করে মিনারেল ওয়াটার।
খরচে যা থাকছে না
চিকিৎসা ও ব্যক্তিগত খরচ।
মেনুর বাইরে অতিরিক্ত কোনো খাবার। কোমল পানীয়।
হোটেল বা রিসোর্টে অতিরিক্ত কোনো রুম নিলে তার ভাড়া।
অনাকাঙ্খিত কোনো খরচ।
যা উল্লেখ নাই এমন সব খরচ।
ভ্রমণ পরিকল্পনা
প্রথম দিন
খুব সকালে খাগড়াছড়ি পৌঁছা। খাগড়াছড়ি শহরে গ্রুপ রুমে ফ্রেস হওয়া।
০৮:০০ সকালের নাস্তা।
০৯:০০ রিজার্ভড চান্দের গাড়িতে সাজেকের উদ্দেশে রওয়ানা।
০১:০০ রিসোর্টে রুম বণ্টন।
০১:৩০ দুপুরের খাবার গ্রহণ।
০২:৩০ দুপুরের খাবারের পর সাজেক, রুইলুই পাড়া, হেলিপ্যাড, সাজেক রিসোর্ট ও তার আশপাশ বেড়ানো।
০৮:০০ বার-বি-কিউ। স্থান: সাজেক ভ্যালি। সাজেকে রাত যাপন।
দ্বিতীয় দিন
০৫:০০ কংলাক পাড়ায় সূর্যোদয় উপভোগ ও পাড়া ঘুরে বেড়ানো। এখান থেকে সাজেকের অধিকাংশ পাহাড় দেখা যায়। মেঘ থাকলে এটিই হবে ট্যুরের সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা।
০৮:৩০ সকালের নাস্তা।
০৯:৩০ চান্দের গাড়িতে লাগেজ রেখে সাজেক রিসোর্ট ও তার আশপাশ বেড়ানো।
১১:০০ দেবতার পুকুর ভ্রমণ।
০২:৩০ দুপুরের খাবার গ্রহণ।
০৩:৩০ হার্টিকালচার পার্ক ও ঝুলন্ত ব্রিজ ভ্রমণ।
০৭:০০ হোটেলে গ্রুপভিত্তিক রুমে ফ্রেস হওয়া।
০৮:০০ রাতের খাবার।
০৯:০০ খাগড়াছড়ি থেকে নির্ধারিত বাসে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা।
তৃতীয় দিন : খুব ভোরে ঢাকার ফকিরাপুল পৌঁছা ও ট্যুরের সমাপ্তি।
সাথে যা যা নিতে পারেন
ক্যামেরা, মোবাইলের চার্জার ও পাওয়ার ব্যাংক। রবি ও টেলিটক সিম (অন্য অপারেটরের নেটওয়ার্ক নাই)। বিছানার চাদরসহ নিজের ব্যবহার্য প্রয়োজনীয় জিনিস। হেডলাইট অথবা টর্চলাইট। রোদ প্রোটেকশনের জন্য ছাতা, সানক্যাপ, সানগ্লাস, সানস্ক্রিন। প্রয়োজনীয় ওষুধ। ফার্স্ট এইড ব্যান্ডেজ। ট্রাভেল ফ্যান।
নেয়া যাবে না: ব্যক্তিগত জিনিস বহনের জন্য কোনোভাবেও ট্রলি নেয়া যাবে না।
হোটেল
সাজেকে আমাদের থাকার ব্যবস্থা টিনের ঘরে।
বাথরুম কমন।
ফেমিলির জন্য ডাবল বেডের রুম।
অন্যদের শেয়ারড রুম।
ভ্রমণকে উপভোগ করুন, অবশ্যই মনে রাখবেন
ভ্রমণে কষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। এজন্য সহনশীল ও সহযোগিতার মানসিকতা থাকতে হবে।
অবশ্যই গ্রুপ লিডারের নির্দেশ ও শিডিউল মানতে হবে। কোনোভাবেও গ্রুপ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না।
নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় কিংবা পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কিছু কোনোভাবেই করা যাবে না (এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ)।
অতিরিক্ত দু:সাহসিকতা দেখানো যাবে না।
এটি একটি পারিবারিক ট্যুর। পরুষ-মহিলা/ছেলে-মেয়ে যে কেউ এই ট্যুরে যেতে পারবে।
সাজেকে পানি স্বল্পতা রয়েছে। হোটেল-রিসোর্টগুলো টিনশেড ও বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি।
ব্যক্তিগত জিনিস বহনের জন্য কোনোভাবেও ট্রলি নেয়া যাবে না।
যেকোনো সময়ে ট্যুরের যেকোনো বিষয় পরিবর্তন হতে পারে। যেকোনো বিষয়ে টিম লিডারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
পরবর্তী আকর্ষণ: ১২ ডিসেম্বর রবিউল আউয়ালের বন্ধে পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়ার মোহনায় নৌ-বিহার, জনপ্রতি খরচ ১,০০০/= টাকা।
২-৪ ডিসেম্বর সুন্দরবন ট্যুর, জনপ্রতি খরচ ১০,৫০০/= টাকা থেকে শুরু।
১৫ ডিসেম্বর শিলং-চেরাপুঞ্জি-গৌহাটি গ্রুপ ট্যুর, জনপ্রতি খরচ ১৭,৫০০/= টাকা।
ডিসেম্বরে থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়া গ্রুপ ট্যুর।
জানুয়ারিতে গ্রুপ ওমরাহ, জনপ্রতি খরচ ১,২৫,০০০/= টাকা।
আপডেট জানতে নিয়মিত চোখ রাখুন:
ওয়েব সাইট: dhakatouristclub.com
ফেইসবুক পেজ: facebook.com/dhakatouristclub
ফেইসবুক গ্রুপ: facebook.com/groups/dhakatouristclub
যোগাযোগের ঠিকানা: ১৮০-১৮১, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণী (অষ্টম তলা), বিজয় নগর, ঢাকা- ১০০০। মোবাইল: ০১৬১২ ৩৬০৩৪৮। ই-মেইল: dhakatouristclub@gmail.com
কভারের ছবি: নাহিদ আনজুমান নয়ন। অন্যান্য ছবি: ইসমাইল মুহাম্মদ নোমান। ঢাকা ট্যুরিস্ট ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় গত ২০ অক্টোবর সাজেক ভ্রমণের সময় তোলা।
Pingback: ঘুরে আসুন রিসাং ঝর্ণা থেকে | Dhaka Tourist Club
Pingback: ১৫ ডিসেম্বর শিলং-চেরাপুঞ্জি-গৌহাটি ট্যুর | Dhaka Tourist Club